শ্রী স্বামীনারায়ণ মন্দির, কলকাতা (দেবনাগরী: श्री स्वामिनारायण मन्दिर) হল গুজরাতের স্বামীনারায়ণ সম্প্রদায়ের স্বামীনারায়ণ সংস্থার একটি হিন্দু মন্দির। শ্রী স্বামীনারায়ণ মন্দির, কলকাতা-র অবস্থান দক্ষিণ কলকাতার শহরতলি আমতলার কাছে বিষ্ণুপুর থানার ভাসার ১৪ নম্বরে (অতীতে এখানে কালীঘাট–ফলতা রেলওয়ের ১৪ নম্বর হল্ট স্টেশন ছিল)। কলকাতা মহানগরের মূল কেন্দ্র হতে জাতীয় সড়ক ১২ (ডায়মন্ড হারবার রোড) বরাবর দূরত্ব ১৯ কিলোমিটার (১২ মাইল)।
২০১৪ খ্রিস্টাব্দে আনুষ্ঠানিক পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। কথিত আছে যে, ভগবান স্বামীনারায়ণ (১৭৮১-১৮৩০) একসময় নীলকান্ত বর্ণি রূপে বঙ্গোপসাগরে সাগর দ্বীপে হিন্দুদের তীর্থভূমি কপিলমুনির আশ্রম দর্শনের জন্য এই স্থান অতিক্রম করে যান। কলকাতা মহানগরের প্রতিষ্ঠিত মন্দিরটি প্রমুখ স্বামী মহারাজ পরিকল্পিত এবং সংস্থা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। এটি বিশ্বের পাঁচ মহাদেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত শিখরবদ্ধ ৪৪ টি মন্দিরের অন্যতম।
প্রায় ২০০ একর জমির উপর তৈরি এই শিখরবদ্ধ মন্দিরের অনেকগুলো অংশ রয়েছে। প্রধানত মার্বেল, রাজস্থানের গোলাপী বেলেপাথর আর লালপাথর ব্যবহার করে হিন্দু সংস্কৃতির ঐতিহ্য মেনে এক অসাধারণ স্থাপত্যকীর্তিতে মন্দিরটি গড়ে তোলা হয়েছে। কারুকার্য করা পাথরের মন্দির, মন্দিরের ভেতরের শান্ত মনোরম পরিবেশ, বাইরের নানান বাহারি গাছপালা আর সন্ধ্যায় আলো আঁধারি পরিবেশ যেমন উপভোগ্য তেমনই পূজা অর্চনায় মন নিমেষে প্রসন্ন হয়। মন্দিরের ভগবান স্বামীনারায়ণ, শ্রী ঘনশ্যাম মহারাজ, শ্রী হরেকৃষ্ণ মহারাজ, রাধা-কৃষ্ণ, সীতা-রাম, হনুমানজী, শিব-পার্বতী এবং গণেশজী পূজিত হন।
মন্দিরে প্রতিদিন পাঁচ বার 'আরতি', সকালের দুই বার আরতির মধ্যবর্তী সময়ে 'মহাপূজা', তিন থেকে পাঁচ বার 'কথা' ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ বিশেষ দিনে অভিষিক্ত মূর্তির 'চন্দন অলঙ্কার', 'রথযাত্রা', 'দীপাবলি' ও 'অন্নকূট' উদযাপিত হয়। সর্বসাধারণের জন্য মন্দির নির্দিষ্ট সময়ে উন্মুক্ত থাকে। সন্ধ্যা 'আরতি'র সময় প্রত্যহ বহু জনসমাগম হয়। সারা বৎসরই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিশেষকরে জানুয়ারি মাসে সর্বভারতীয় গঙ্গাসাগর মেলার সময় প্রচুর তীর্থযাত্রীর সমাগম ঘটে।
BAPS সংস্থাটির ভবানীপুরে আরেকটি পুরানো কেন্দ্র রয়েছে এবং এটি কলকাতা ও ভারতের পূর্বাঞ্চলে সৎসঙ্গ কার্যক্রম পরিচালনা করে।