লিওনেল টেনিসন, তৃতীয় ব্যারন টেনিসন

লিওনেল টেনিসন
আনুমানিক ১৯২২ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে লিওনেল টেনিসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
লিওনেল হালামন টেনিসন
জন্ম(১৮৮৯-১১-০৭)৭ নভেম্বর ১৮৮৯
ওয়েস্টমিনস্টার, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৬ জুন ১৯৫১(1951-06-06) (বয়স ৬১)
বেক্সহিল-অন-সী, সাসেক্স, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাব্যাটসম্যান, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৮০)
১৩ ডিসেম্বর ১৯১৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট১৬ আগস্ট ১৯২১ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯১৩–১৯৩৫হ্যাম্পশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৭৭
রানের সংখ্যা ৩৪৫ ১৬,৮২৮
ব্যাটিং গড় ৩১.৩৬ ২৩.৩৩
১০০/৫০ –/৪ ১৯/৬৬
সর্বোচ্চ রান ৭৪* ২১৭
বল করেছে ৩,৭৫৬
উইকেট ৫৫
বোলিং গড় ৫৪.১০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৫০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৬/– ১৭২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২২ নভেম্বর ২০১৭

লিওনেল হালাম টেনিসন, তৃতীয় ব্যারন টেনিসন (ইংরেজি: Lionel Tennyson; জন্ম: ৭ নভেম্বর, ১৮৮৯ - মৃত্যু: ৬ জুন, ১৯৫১) লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়াও, হ্যাম্পশায়ার ও ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। পাশাপাশি দলে প্রয়োজনে ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন লিওনেল টেনিসন

প্রারম্ভিক জীবন

বিখ্যাত কবি আলফ্রেড লর্ড টেনিসনের নাতি ছিলেন লিওনেল টেনিসন। ১৯২৮ সালে পিতার কাছ থেকে পদবীধারী হন। এরপূর্বে সম্মানীয় লিওনেল টেনিসন নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। তার কাকার নামও তার নামের।[]

এটন কলেজে অধ্যয়নকালীন তিনি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। নিয়মিতভাবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলার জন্য ১৯১৩ সালে হ্যাম্পশায়ার ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। সেখানে তিনি খুব কমই বোলিং করতেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে রাইফেল ব্রিগেডে কাজ করেন ও ফ্রান্সে নিযুক্ত হন। দুইবার তাকে ফেরৎ পাঠানো হয় ও তিনবার আহত হন তিনি।

কাউন্টি ক্রিকেট

১৯১৯ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত হ্যাম্পশায়ার ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন লিওনেল টেনিসন। তন্মধ্যে, ১৯২২ সালে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত স্মরণীয় খেলাটিতেও দলকে পরিচালনা করেছেন। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫ রানে গুটিয়ে যায় হ্যাম্পশায়ার দল। ফলো-অনের কবলে পরে তারা ৫২১ রান তুলে ও শেষ পর্যন্ত ১৫৫ রানে জয় পায় হ্যাম্পশায়ার।[]

ঘরোয়া ক্রিকেটে অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯১৪ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।[]

খেলোয়াড়ী জীবন

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ইংল্যান্ডের পক্ষে নয় টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে তার। তন্মধ্যে, ১৯১৩-১৪ মৌসুমে জনি ডগলাসের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দলের সদস্যরূপে পাঁচটিতে অংশ নেন। ১৩ ডিসেম্বর, ১৯১৩ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় তার।

১৯২১ সালে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের নেতৃত্বাধীন সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে পূর্বেকার ছয় টেস্টে পরাজিত হয় ইংল্যান্ড দল। লর্ডসের দ্বিতীয় টেস্ট খেলার জন্য তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ খেলাটিতে ইংল্যান্ড পরাজিত হলেও জ্যাক গ্রিগরিটেড ম্যাকডোনাল্ডের ন্যায় ক্ষিপ্রগতির বোলারদেরকে মোকাবেলা করে অপরাজিত ৭৪ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন। এ ইনিংসের প্রভাবে সিরিজের বাদ-বাকী খেলাগুলোর জন্য নিয়মিত অধিনায়ক জনি ডগলাসের পরিবর্তে তাকে অধিনায়ক হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়।

পরবর্তী খেলায়ও তারা হেরে যায়। চূড়ান্ত দুই টেস্টও ড্রয়ে পর্যবসিত হয়। অধিনায়ক হিসেবে তিন খেলার প্রথমটি হেডিংলিতে দল পরিচালনা করেন। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস চলাকালে ফিল্ডিং হাত গুটিয়ে রাখেন কিন্তু পরবর্তীতে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ায় ব্যস্ত রাখেন যা উইজডেনের ভাষায় ঝুড়ি রক্ষাকারী। তিনি ৬৩ ও ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন।

বিদেশ গমন

ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে বেশ কয়েকবার টেস্টবিহীন খেলায় অংশগ্রহণের জন্য সফর করেন।

১৯২৭ সালের শুরুতে ইংল্যান্ডের সাবেক টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক হিসেবে তার নেতৃত্বে পার্সি ফেন্ডারআর্নেস্ট টিল্ডসলের ন্যায় টেস্ট ক্রিকেটারসমৃদ্ধ ইংরেজ দলকে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে আসেন।[] দলটি জ্যামাইকা একাদশের বিপক্ষে তিনটি প্রতিনিধিত্বমূলক প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেয়। ১৯২৮ সালের শুরুরদিকে টেনিসনের নেতৃত্বে আরও একটি দল জ্যামাইকায় খেলতে এসেছিল।[] প্রথম দুইটিতে জ্যামাইকা জয়ী হয় ও তৃতীয়টি ড্রয়ে পরিণত হয়।

সামরিক জীবন

১৯৩৩ সালে আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘ফ্রম ভার্স ও ওর্স’ প্রকাশ করেন। যুদ্ধে দ্বিতীয়বারের মতো পশ্চিম রণাঙ্গন থেকে তার ফিরে আসাকে ঘিরে এ গ্রন্থে তুলে ধরেন তিনি।

৯ আগস্ট, ১৯৩১ তারিখে লন্ডনের চেলসীভিত্তিক আঞ্চলিক সেনা ইউনিট রয়্যাল আর্টিলারির ৫১তম হেভি এন্টি-এয়ারক্রাফ্ট রেজিমেন্টের সম্মানীয় কর্নেল হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এ পদে নিযুক্ত ছিলেন লিওনেল টেনিসন।[][]

ব্যক্তিগত জীবন

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ক্লেয়ার টেনান্ট নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির তিন পুত্রসন্তান ছিল। তবে ১৯২৮ সালে তাদের সম্পর্ক বিবাহ-বিচ্ছেদে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৩৪ সালে ক্যারল এণ্টিংকে আবারও বিয়ে করেন। ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত এ বিয়ে টিকে।[]

৬ জুন, ১৯৫১ তারিখে ৬১ বছর বয়সে পূর্ব সাসেক্সের বেক্সহিল-অন-সী এলাকায় লিওনেল টেনিসনের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

  1. "Tennyson, Lionel (TNY873L)"A Cambridge Alumni Databaseকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় 
  2. "Warwickshire v Hampshire 1922"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০১৭ 
  3. "Wisden Cricketers of the Year" (English ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 
  4. Edwards 2001, পৃ. 136।
  5. Edwards 2001, পৃ. 139।
  6. Monthly Army List 1931–39.
  7. Burke's Peerage.
  8. "Major Lionel Hallam Tennyson, 3rd Baron Tennyson"The Peerage। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০১৭ 

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!