রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য বা কুলিক পাখিরালয় বা কুলিক পক্ষীনিবাস (ইংরেজি: Raiganj Wildlife Sanctuary) (উচ্চারণ: Raegônj Bonnoprani Ôbhôearonno) পশ্চিমবঙ্গেরউত্তর দিনাজপুর জেলার সদর শহর রায়গঞ্জের নিকটে অবস্থিত একটি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য। এটি প্রথমে একটি পাখিরালয় রূপে পরিচিত ছিল। এই অঞ্চলটি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষিত হয় ১৯৮৫ সালে।[১]
অবস্থান
এটি জেলা শহর রায়গঞ্জের কেন্দ্র থেকে ৪ কিমি (২.৫ মা) উত্তরে অবস্থিত। এনএইচ ৩৪ এই পাখিরালয়ের পাশ দিয়ে চলেছে।[২][৩] রায়গঞ্জ কলকাতা থেকে ৪২৫ কিমি (২৬৪ মা) এবং শিলিগুড়ি থেকে ১৮১ কিমি (১১২ মা) দূরে অবস্থিত।[৪]
জলবায়ু
তাপমাত্রা (সেলসিয়াসে): গ্রীষ্মে - সর্বোচ্চ ৩৮, সর্বনিম্ন ২১; শীতে - সর্বোচ্চ ২৩ সর্বনিম্ন ৬[৪]
বৃষ্টিপাতঃ ১৫৫০ mm (জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর)।[৪]
ইতিহাস
১৯৭০ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার উন্নতি ঘটা শুরু হয়। প্রকল্পের মাধ্যমে কদম, জারুল, শিশু এবং ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানো হয়। ছানা তোলার সময় এশীয় শামুকখোল এবং অন্যান্য পরিযায়ী পাখির প্রজাতিগুলো কৃত্রিম বাগানে ঘোরাঘুরি করে। ১৯৮৫ সালে অফিসিয়ালি "রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য" হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এটি কুলিক পক্ষী অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত কারণ কুলিক নদী অভয়ারণ্যটির পাশ দিয়ে প্রবাহিত।[২][৩]
প্রাণবৈচিত্র্য
এই পাখিরালয়ে ১৬৪ প্রজাতির পাখির আবাসস্থল রয়েছে।[২][৩] ২০০২ সালে শুমারি অনুসারে, সেবছর ৭৭,০১২টি পাখি অভয়ারণ্যটি পরিভ্রমণ করে।[৫] ২০০৩ সালে, সংখ্যাটি বাড়ে এবং ৮১,৩৮৪টিতে উন্নীত হয়। ২০০৮ সালের শুমারি অনুসারে ৯১,৫৪০টি পাখি অভয়ারণ্যটি পরিভ্রমণ করে।[৬] এবং এই পাখিরালয়ে প্রতিবছর প্রায় ৭০,০০০ থেকে ৮০,০০০ পরিযায়ী পাখি ভ্রমণ করে।[৭]
পর্যটন
এখানে প্রতিবছর পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। নানা প্রজাতির পাখি দেখতে ভারত তথা বিদেশ থেকে পর্যটকেরা আসেন৷ এখানে পর্যটকদের থাকার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন বিভাগের অতিথিশালা রয়েছে৷ এছাড়া রায়গঞ্জ শহরে অনেক হোটেল আছে৷ রায়গঞ্জ কলকাতার সাথে সড়ক ও রেলপথে যুক্ত৷[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়কালে, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বিভিন্ন জেলা থেকে অজস্র দর্শনার্থী অভয়ারণ্যটি ভ্রমণ করে, এবং তাদের অধিকাংশ পিকনিক সংগঠিত করে। তারা শুধু পাখিগুলোকে বিরক্তই করে না, জায়গা নোংরাও করে। রায়গঞ্জ সামাজিক বন বিভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে তারা একটি পিকনিক জায়গা ভাত্তাদিঘির নিকটে তৈরি করে দেবে , সেখানে জল, ছায়া, টয়লেট, ছোট পার্ক এবং হাঁটার রাস্তার সুবিধা থাকবে।[৮]