১৯৬৭ সালের ৩রা এপ্রিল সোভিয়েত ইউনিয়ন মালয়েশিয়ার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। সেই সময়েই একটি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৬৭ সালের নভেম্বর মাসে সোভিয়েত ট্রেড রিপ্রেজেন্টেশান স্থাপিত হয়। ১৯৭০ সালে সোভিয়েত শিক্ষার্থীদের প্রথম দল মালে পড়তে মালায়া বিশ্ববিদ্যালয় আসে। দুই দেশের মধ্যে ১৯৭২ সালের ৪ অক্টোবর, অর্থনীতি এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৮০ এর পুরো দশক জুড়ে আফগানিস্তানে সোভিয়েত যুদ্ধকালীন মালয়েশিয়া আফগানিস্তানের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করলে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক বিঘ্নিত হয়। তবে এই দ্বন্দ্ব শেষে মস্কো এবং কুয়ালালামপুরের মধ্যকার সম্পর্ক পুনরায় স্থাপিত হয়। এরপর থেকেই দুই দেশ ঐতিহাসিক বিবাদ ভুলে গিয়ে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক বন্ধুত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করছে।
মিখাইল গোরবাচেভ ১৯৮৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাশিয়া এবং মালয়েশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে। প্রাক্তন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির বিন মোহাম্মদ গোরবাশেভের সাথে ঘন ঘন সাক্ষাৎ করেন। ২০০২ সাকে নাহাথির মস্কোতে এর প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর সম্পন্ন করেন মালয়েশিয়া জাতিসংঘ এবং ইসরায়েল রাশিয়ার জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠতে পারে। তিনি রাষ্ট্রপতি ভলাদিমির পুতিনের প্রশংসা করেন। সেইসাথে অন্যান্য সার্বভৌম রাষ্ট্রে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের বিপরীতেও স্থান নেন।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক
মালয়েশিয়া ও রাশিয়া - দুই রাষ্ট্রই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সিআইএস অঞ্চলে রাশিয়ার শীর্ষ বাণিজ্যিক সহযোগীতে পরিণত হতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া। ২০০৭ সালে রাশিয়া এবং মালয়েশিয়ার মধ্যকার মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ১,৯০৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল, যেখানে ২০০৬ সালে ছিল ১,১৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। রাশিয়ার রপ্তানিকৃত দ্রব্যসামগ্রীর মধ্যে রাসায়নিক সার এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ, লোহা, ধাতব পদার্থ, পুরানো বিমানের সামগ্রী ইত্যাদি প্রধান। আর রাশিয়ার আমদানি পণ্যের মধ্যে গৃহস্থালী সামগ্রী, পাম তেল এবং পাম তেলজাতীয় দ্রব্য, প্লাস্টিক, কোকোয়া পাউডার, কোকোয়া বাটার প্রধান। ২০০২ সালের জুলাই মাসে স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুযায়ী পাম তেল রাশিয়ায় সরবরাহ করা হয়।[৩]
২০০০ সালে স্বাক্ষরিত অর্থনৈতিক সহযোগীতা চুক্তি ও ১৯৮৭ সালের দ্বৈত রাজস্ব চুক্তির মাধ্যমেই এ দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য সংঘটিত হয়ে থাকে। ২০০৫ সালে দুই দেশের চেম্বার অব কমার্স কর্তৃক স্বাক্ষরিত চুক্তির মাধ্যমেও বাণিজ্য এগিয়ে যাচ্ছে।[৩]