মামলুক সালতানাত ১২০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মধ্য এশিয়ার তুর্কি সেনাপতি কুতুবুদ্দিন আইবেক মামলুকদের উত্তর ভারতে নিয়ে আসেন। দিল্লি সালতানাত শাসনকারী পাঁচটি রাজবংশের মধ্যে মামলুক রাজবংশ প্রথম।[৯][১০][১১] এর শাসনকাল ছিল ১২০৬ থেকে ১২৯০ সাল পর্যন্ত। ঘুরি রাজবংশের প্রতিনিধি শাসক হিসেবে কুতুবুদ্দিন আইবেক ১১৯২ থেকে ১২০৬ সাল পর্যন্ত শাসন করেন। এসময় তিনি গাঙ্গেয় অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করেন এবং নতুন অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।[১২][৮]
মামলুক দ্বারা অধিকৃত বোঝানো হয়। মামলুকরা ছিল ইসলাম গ্রহণকারী দাস বংশোদ্ভূত সৈনিক। ৯ম শতাব্দী থেকে এই ধারা শুরু হয়ে মামলুকরা ধীরে ধীরে শক্তিশালী সামরিক গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। বিশেষত মিশর এবং এর পাশাপাশি লেভান্ট, ইরাক ও ভারতে মামলুকরা রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি ছিল।
১২০৬ খ্রিষ্টাব্দে মুহাম্মদ ঘুরি নিহত হন।[১৩] তার কোনো সন্তান না থাকায় তার সাম্রাজ্য বিভিন্ন সালতানাতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তার প্রাক্তন মামলুক সেনাপতিরা এসব সালতানাতের নেতৃত্ব লাভ করেন। তাজউদ্দিন ইলদিজ, ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি, নাসিরউদ্দিন কাবাচা ও কুতুবউদ্দিন আইবেক যথাক্রমে গজনি, বাংলা, মুলতান ও দিল্লির শাসক হন। এর মাধ্যমে মামলুকদের শাসন শুরু হয়।
তার উচ্চপদস্থ মুইজউদ্দিন মুহাম্মদ নিহত হওয়ার পর আইবেক ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন।[৯] আইবেকের শাসন স্বল্পস্থায়ী ছিল। ১২১০ সালে তিনি মারা যান। তার ছেলে আরাম শাহ ক্ষমতা লাভ করেন। ১২১১ সালে তিনি ইলতুতমিশের হাতে নিহত হন।
ইলতুতমিশ তার সালতানাতের সাথে আব্বাসীয় খিলাফতের ঘনিষ্ঠ কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তিনি চেঙ্গিস খান ও তার বংশধরদের আক্রমণ থেকে ভারতকে রক্ষা করতে সফল হয়েছিলেন।[১০] গিয়াসউদ্দিন বলবন চাগতাই খানাত ও অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহীদের থেকে সালতানাতকে সুরক্ষিত করতে সফল হন।[৯][১০] জালালউদ্দিন ফিরোজ খিলজি কর্তৃক সর্বশেষ মামলুক শাসক ও বলবনের নাতি মুইজউদিন কায়কোবাদ ক্ষমতাচ্যুত হলে খিলজি রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়।[১৪]
রাজবংশের স্থাপত্য উত্তরাধিকারের মধ্যে রয়েছে মেহরাউলির কুতব উদ-দিন আইবাকের কুতুব মিনার, ইলতুমিশ-এর জ্যেষ্ঠ পুত্র প্রিন্স নাসিরু'দ-দিন মাহমুদের সমাধিসৌধ, বসন্ত কুঞ্জের কাছে সুলতান ঘারি নামে পরিচিত, ১২৩১ সালে নির্মিত প্রথম ইসলামিক সমাধিসৌধ (সমাধি) এবং মেহরাউলি প্রত্নতাত্ত্বিক উদ্যানে বলবানের সমাধি।
|s2cid=