মানসিক স্বাস্থ্যবলতে আবেগীয়, মনস্তাত্ত্বিক এবং সামাজিক সুস্থতাকে বোঝায়, যা জ্ঞান, উপলব্ধি এবং আচরণকে প্রভাবিত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর মতে, এটা এমন একটি অবস্থা যেখানে ব্যক্তি তার ক্ষমতা উপলব্ধি করতে পারে, জীবনের স্বাভাবিক চাপের সাথে মোকাবিলা করতে পারে, উৎপাদনশীল এবং ফলপ্রসূভাবে কাজ করতে পারে এবং তার নিজের সমাজে অবদান রাখতে পারে। [১] এটি একইভাবে নির্ধারণ করে যে একজন ব্যক্তি কীভাবে চাপ, আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকে নিয়ন্ত্রণ করে। [২] মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত সুস্থতা, আত্মবিশ্বাস , স্বায়ত্তশাসন, যোগ্যতা, পারস্পরিক নির্ভরতা, এবং অন্যদের মধ্যে একজনের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং আবেগীয় সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা । [৩]
ইতিবাচক মনোবিজ্ঞান বা হোলিজমের দৃষ্টিকোণ থেকে, মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে একজন ব্যক্তির জীবনকে উপভোগ করার ক্ষমতা এবং জৈবনিক কার্যকলাপ এবং মানসিক সক্ষমতা অর্জনের প্রচেষ্টার মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করাও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। সাংস্কৃতিক পার্থক্য, ব্যক্তিগত দর্শন, বিষয়গত মূল্যায়ন, এবং প্রতিযোগিতামূলক পেশাদার তত্ত্বসমূহ কীভাবে একজন "মানসিক স্বাস্থ্য" সংজ্ঞায়িত করে তা প্রভাবিত করে। [৪] মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে সম্পর্কিত কিছু প্রাথমিক লক্ষণ হল ঘুমে সমস্যা, শক্তির অভাব, ক্ষুধামন্দা, নিজের বা অন্যের ক্ষতি করার চিন্তা, আত্মবিচ্ছিন্নতা (যদিও অন্তর্মুখীতা এবং একাকীত্ব সবসময় অস্বাস্থ্যকর নয়), এবং প্রায়ই বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া। [৪]
মানসিক রোগ
পাবলিক হেলথ এজেন্সি অব কানাডা অনুযায়ী, মানসিক স্বাস্থ্য হল একজন ব্যাক্তির ক্ষমতা যা তাকে অনুভব করতে, চিন্তা করতে, এবং এমনভাবে কাজ করতে সক্ষম করে যে তার জীবনের গুণগত মান উন্নত হয় এবং ব্যক্তিগত, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সীমানাগুলি সংরক্ষিত থাকে।[৫] এর যেকোনো প্রতিবন্ধকতা মানসিক রোগ বা মানসিক অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ায়,[৬] যা মানসিক স্বাস্থ্যর একটি উপাদান। ২০১৯ সালে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৯৭০ মিলিয়ন মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়েছিল, যার মধ্যে উদ্বেগ ও হতাশা হল সবচেয়ে সাধারণ রূপ। বছরের পর বছর মানসিক রোগের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।[৭] মানসিক রোগগুলি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অবস্থাসমূহ যা জ্ঞানীয় কার্যক্রম, আবেগিক প্রতিক্রিয়া এবং আচরণকে প্রভাবিত ও পরিবর্তিত করে এবং এর সাথে উদ্বেগ ও/অথবা অক্ষম কাজকর্ম যুক্ত থাকে।
[৮][৯] আইসিডি-১১ হল বৈশ্বিক মানদণ্ড যা বিভিন্ন মানসিক রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা, গবেষণা, এবং রিপোর্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়।[১০][১১] যুক্তরাষ্ট্রে, ডিএসএম-৫ মানসিক রোগের শ্রেণীবিভাগ ব্যবস্থারূপে ব্যবহৃত হয়।[১২]
মানসিক স্বাস্থ্য কিছু জীবনধারা বিষয়ক ফ্যাক্টরের সাথে সম্পর্কিত যেমন খাদ্য, ব্যায়াম, চাপ, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার, সামাজিক সম্পর্ক ও যোগাযোগ।[১২][১৩] মানসিক অসুস্থতা পরিচালনায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী, লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্লিনিক্যাল কাউন্সেলর, সামাজিক কর্মী, নার্স প্র্যাকটিশনার এবং পরিবারের চিকিৎসকরা থেরাপি, কাউন্সেলিং এবং ওষুধের মাধ্যমে সহায়তা করতে পারেন।[১৪]
↑Galderisi S, Heinz A, Kastrup M, Beezhold J, Sartorius N (জুন ২০১৭)। "A proposed new definition of mental health"। Psychiatria Polska (পোলিশ ভাষায়)। 51 (3): 407–411। ডিওআই:10.12740/pp/74145। পিএমআইডি28866712।
↑"GBD Results"। Global Health Data Exchange (GHDx)। Institute of Health Metrics and Evaluation.। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০২২।
↑Evans SC, Roberts MC (২০১৫), "International Classification of Diseases ( <SCP> ICD </SCP> ), Mental and Behavioural Disorders Section", The Encyclopedia of Clinical Psychology (ইংরেজি ভাষায়), John Wiley & Sons, Ltd, পৃষ্ঠা 1–10, আইএসবিএন978-1-118-62539-2, ডিওআই:10.1002/9781118625392.wbecp257উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
↑"ICD-11"। International Classification of Diseases। World Health Organization (WHO)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১৮।