মস্কো ক্যাথেড্রাল মসজিদের মূল অবকাঠামো নির্মিত হয় ১৯০৪ সালে। স্থপতি নিকোলাই জুকভ মসজিদটির নকশা করেন। নির্মাণের পর বেশ কয়েকবার মসজিদটির সংস্কারকাজ করা হয়। নৃতাত্ত্বিকভাবে তাতার জাতির লোকেরা মসজিদে সমবেত হয়ে নামাজ পড়েন বলে একে “তাতার মসজিদ”-ও বলা হত। মস্কো শহরের মাত্র চারটি মসজিদের অন্যতম এই মসজিদকে সামাজিকভাবে রাশিয়ার প্রধানতম মসজিদ হিসেবে গণ্য করা হয়।
২০১১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পুরনো মসজিদটি ভেঙে ফেলা হয়।[১] ২০০৮ সালের জুন মাসে মসজিদটিকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও সেই বছরের শেষ নাগাদ ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যিক অবকাঠামোর তালিকা থেকে মসজিদটির নাম সরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ভাঙার সময় মসজিদটি আইন দ্বারা যথাযথভাবে সুরক্ষিত ছিল না।[২] স্থপতি ইলিয়াস তেজিয়েভের নকশায় মসজিদটির পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। পুরনো মসজিদটির দিক মক্কা থেকে বেশ কয়েক ডিগ্রি বিচ্যুত ছিল, যার কারণে পুনর্নির্মাণ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পুরো মসজিদটি অংশবিশেষে ভেঙে ফেলা হয়, এরপর পুনরায় নকশা করে সঠিকভাবে পুনর্নির্মাণ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০০৯ সালে রুশ মুফতি কাউন্সিল প্রথমে নতুন পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের ঘোষণা দিয়ে এবং পরবর্তীতে পুরনো মসজিদটি ভগ্নপ্রায় বলে সেটি ভেঙে ফেলার কারণে তেজিয়েভকে বরখাস্ত করে।[২] অন্যদিকে তেজিয়েভের দাবি অনুসারে মসজিদ ভেঙে ফেলার পরেও পুনর্নির্মাণ করা সম্ভব ছিল; পাশাপাশি পুরনো মসজিদটিও ভগ্নদশায় ছিল না।[২]
১৯৭৮ সালের পর ক্যাথেড্রাল মসজিদ ভাঙার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো মস্কো শহরের কোনো ধর্মীয় স্থাপনা ভাঙার ঘটনা ঘটে।[২]
নতুন মসজিদ
পরবর্তীতে পুরনো মসজিদের স্থলে একটি নতুন মসজিদ নির্মাণ করা হয়। ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নবনির্মিত মসজিদটি আনুষ্ঠানিকভাব্ব উদ্বোধন করা হয়। নতুন মসজিদটিতে প্রায় দশ হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রেজেপ তাইয়িপ এরদোয়ান, ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রপতি মাহমুদ আব্বাস মসজিদের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।[৩]