ভারতের প্রধান বিচারপতি (IAST: Bhārat Kē Mukhya Nyāyādhīśa) হলো ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও ভারতীয় বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।[৫]ভারতের সংবিধান বিদায়ী প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শ করে, পরবর্তী প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষমতা ভারতের রাষ্ট্রপতিকে দেয়, যিনি পঁয়ষট্টি বছর বয়সে না পৌঁছানো পর্যন্ত বা অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। কনভেনশন অনুসারে, বর্তমান প্রধান বিচারপতির দ্বারা প্রস্তাবিত নামটি প্রায় সবসময়ই সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী জ্যেষ্ঠ বিচারক হয়।
ভারতের সংবিধানের ১৪৫ নং অনুচ্ছেদ এবং ১৯৬৬ সালের সুপ্রিম কোর্ট নীতিমালা অনুসারে, প্রধান বিচারপতি অন্য বিচারপতিদের সাথে সম্মিলিত হয়ে তাদের কার্য সম্পাদন করেন।[৬] ৫১তম এবং বর্তমান প্রধান বিচারপতি হলেন সঞ্জীব খান্না। তিনি ১১ নভেম্বর ২০২৪-এ ভারতের ৫১তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন।[৭]
নিয়োগ
বর্তমান প্রধান বিচারপতি অবসরে যাওয়ার সময় আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় বর্তমান প্রধান বিচারপতির কাছে সুপারিশ চায়। তিনি অন্যান্য বিচারকদের সাথেও আলোচনা হতে পারে। তারপর সুপারিশটি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির কাছে পরামর্শ দেন এবং এরপর রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ করেন।[৮]
অপসারণ
ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৪(৪) সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতিকে অপসারণের পদ্ধতি নির্ধারণ করে যা প্রধান বিচারপতিদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। একবার নিয়োগের পর প্রধান বিচারপতি ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত পদে থাকেন। সংবিধানে এর কোনো নির্দিষ্ট মেয়াদ নেই।
তবে কেবলমাত্র সংসদ দ্বারা অপসারণের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপসারণ করা যেতে পারে :
A Judge of the Supreme Court shall not be removed from his office except by an order of the President passed after an address by each House of Parliament supported by a majority of the total membership of that House and by a majority of not less than two-thirds of the members of that House present and voting has been presented to the President in the same session for such removal on the ground of proved misbehaviour or incapacity.
রাষ্ট্রপতি (কার্যক্রমের ডিসচার্জ) আইন, ১৯৬৯ নির্দিষ্ট করে যে, রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি উভয়ের পদই খালি থাকলে প্রধান বিচারপতি ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন।[১০]
রাষ্ট্রপতি জাকির হুসেন অফিসে আকস্মিক হ্যার্ট অ্যাটাকে মারা গেলে, ভাইস প্রেসিডেন্ট ভি ভি গিরি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। এরপর গিরি ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিলে, প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ হিদায়াতুল্লাহ ভারতের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হন। কনভেনশন অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হন। নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি এক মাস পরে দায়িত্ব গ্রহণ করলে, বিচারপতি হিদায়াতুল্লাহ ভারতের প্রধান বিচারপতি হিসাবে প্রত্যাবর্তন করেন।
ভারতের সংবিধান পারিশ্রমিক নির্ধারণের ক্ষমতা এবং সেইসাথে প্রধান বিচারপতির চাকরির অন্যান্য শর্ত ভারতের সংসদকে দেয়। তদনুসারে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (বেতন ও চাকরির শর্তাবলী) আইন, 1958-এ এই ধরনের বিধান রাখা হয়েছে ।[১২][১৩] ষষ্ঠ কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনের সুপারিশের পর এই পারিশ্রমিক ২০০৬-২০০৮ সালে সংশোধিত হয়েছিল।[১৪] ২০১৬ সালে সপ্তম বেতন কমিশন অনুযায়ী বেতন সংশোধিত হয়।[১৫]