ভরতনাট্যম ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যকলাবিশেষ। দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে এ নৃত্যকলার উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।[১][২][৩][৪][৫] ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের প্রধান চারটি ধারার একটি। বাকি তিনটি হচ্ছে কত্থক, কথাকলি, মণিপুরী। ভরতনাট্যম ভাব, রাগ ও তালের অপূৰ্ব সমন্বয় ঘটিয়েছে। অনেকের মতে এই তিনটা শব্দের প্ৰথম বৰ্ণকে নিয়ে ভরতনাট্যম শব্দের সৃষ্টি হয়েছে। অন্য অনেকে মনে করে যে ভরত মুনি এর প্ৰবৰ্তন করেছিলেন বলে এই নৃত্যকলার নাম ভরতনাট্যম হয়। অন্যান্য ভারতীয় নৃত্যধারার তুলনায় ভরতনাট্যমের ভাবধারা মূলত ধৰ্মভিত্তিক ও দেবতাকেন্দ্ৰিক।ভরত মুনির লেখা নাট্যশাস্ত্র গ্রন্থে ভরতনাট্যম নাচের কিছু কৌশল, মুদ্ৰা ও সংজ্ঞা বর্ণনা রয়েছে। মহাদেব শিবকে এই নৃত্যশৈলীর ভগবান মানা হয়। আজ ভরতনাট্যম বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় নৃত্যশৈলী।
ইতিহাস
প্ৰথম দিকে মন্দিরের দেবদাসীরা এ নৃত্য মন্দিরে পরিবেশন করত। ষষ্ঠদশ শতকে দেবদাসী প্ৰথা লোপ পাওয়ার পর ভরতনাট্যম চৰ্চা কমে যায়। ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়াৰ্ধে চিন্নায়া, পুন্নিয়া, ভাদিভেলু ও শেরনন্দম name চারজন প্ৰতিভাবান নৰ্তক ভাই অনেক অনুসন্ধান করে ‘দাসী আট্টম’ নামেও পরিচিত এই নৃত্যকলাকে উদ্ধার করে। সেগুলো জনপ্ৰিয় হয়ে ভরতনাট্যম নামে প্ৰসিদ্ধ হয়। ভরতনাট্যম সাধারণ নারীরা পরিবেশন করে যদিও পরম্পরাগত ভাবে এই নৃত্যের গুরু পুরুষ হয়। ভরতনাট্যম নৃত্য পূৰ্ণাঙ্গ রুপে পরিবেশন করতে প্ৰায় দুঘণ্টা সময় লাগে।
প্রকার
এই নৃত্যের ছটি ভাগ আছে। সেগুলি হ’ল: আলারিপ্পু, যতিস্বরম, শব্দম, বৰ্ণম, অভিনয়ম ও তিল্লানা। এই নৃত্য আংগিক ও রস বিচারে নারীর কামনা, আনন্দ ও বিচ্ছেদ সংবলিত শৃংগার রসের নাচ। নৃত্যের মূল চরিত্ৰ কৃষ্ণ যদিও বিষ্ণু ও শিব এর উদ্দেশ্যেও নৃত্য আছে। এই নৃত্যের শুরুতে গান গাওয়া হয়। আনুষংগিক বাদ্য হিসাবে থাকে বীণা, মৃদঙ্গ, বাঁশি, বেহালা, মন্দিরা প্রভৃতি। ভরতনাট্যম নৃত্যের বিশিষ্ট পোশাক আছে। শাড়িকে এই নৃত্যে ধুতির মত করে পরা হয়।
↑International Tamil Language Foundation (২০০০)। The Handbook of Tamil Culture and Heritiage। Chicago: International Tamil Language Foundation। পৃষ্ঠা 1201।