বাংলাদেশ শিশুস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (বি.আই.সি.এইচ) বাংলাদেশের একটি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৮৩ সালে ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানা অবস্থিত ঢাকা শিশু হাসপাতালের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি প্রতিষ্ঠানে শিশুস্বাস্থ্যের উপর বিভিন্ন কোর্স ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।[১]
প্রতিষ্ঠানটিতে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বিভিন্ন ডিগ্রি কোর্স চালু আছে। এগুলো হল: দেড় বছর মেয়াদী এফ.সি.পি.এস (ফেলো অব দি কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস), তিন বছর মেয়াদী এম.ডি (ডক্টর অব মেডিসিন), তিন বছর মেয়াদী এম.এস (মাস্টার ইন সার্জারি), ডি.সি.এইচ (ডিপ্লোমা ইন চাইল্ড হেলথ), পেডিয়াট্রিক্সে বিভিন্ন সার্টিফিকেট কোর্স এবং স্বাস্থ্য প্রযুক্তিতে বিএসসি।[১] ইনস্টিটিউটটি বিভিন্ন উপ-বিশেষায়িত কোর্স পরিচালনা করে। এগুলো হল: এফ.সি.পি.এস (নিউওনাটোলজি), এফ.সি.পি.এস (হ্যামেটো-অ্যানকোলজি), এফ.সি.পি.এস (নেফ্রোলজি), এম.ডি (নিউওনাটোলজি), এম.ডি (হেমাটো-অ্যানকোলজি) এবং এম.ডি (নেফ্রোলজি)। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে বেসিক সায়েন্স বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। এই বিভাগ শীঘ্রই ডিপ্লোমা ইন ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি ও ডিপ্লোমা ইন পেডিয়াট্রিক নার্সিং কোর্স দুটি চালু করতে যাচ্ছে।[২]
বিআইসিএইচ একটি গভর্নিং বডির অধীনে পরিচালিত হয়। বর্তমানে এই গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জাতীয় অধ্যাপক শাহলা খাতুন। এছাড়া, বডির অন্যান্য সদস্যরা হল: বারডেমের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুন নাহার, হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, বিএসএমএমইউ-এর চক্ষু বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোঃ শরফুদ্দিন আহমেদ, ডিএসএইচ-এর পেডিয়াট্রিক মেডিসিন অ্যান্ড কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ.আর. খান, ডিএসএইচ-এর পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. বিলকিস বানু, ডিএসএইচ-এর প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ডা. মনজুর হুসেন, বিএসএমএমইউ-এর পেডিয়াট্রিক ও নার্সিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক শাহানা আক্তার রহমান এবং বিএসএমএমইউ-এর শিশুরোগ হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক চৌধুরী ইয়াকুব জামাল। এছাড়াও পদাধিকারবলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ অনুষদের ডিন, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও বাংলাদেশ শিশুস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক এ কমিটির সদস্য।[২]
বাংলাদেশ শিশুস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বিভিন্ন গবেষণামূলক কোর্সও পরিচালনা করে থাকে। ইউসিএল গ্রেট অর্মন্ড স্ট্রিট ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ এবং জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এ প্রতিষ্ঠানের গবেষণা সম্পর্ক রয়েছে।[৩] ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে ১৯৮৪ সাল থেকে বছরে দুবার করে ঢাকা শিশু হাসপাতাল জার্নাল প্রকাশিত হয়ে থাকে।[৪]
প্রতিষ্ঠানটিতে একটি লাইব্রেরিও আছে। এর নাম তোফায়েল আহমেদ মেমোরিয়াল লাইব্রেরি। প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য লাইব্রেরিটি ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে।[৫]
২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারির মন্ত্রীসভার বৈঠকে ‘বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট আইন-২০২০’ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়। আইনটি পাশ হলে ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও বাংলাদেশ শিশুস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট একীভূত হয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট গঠিত হবে। সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ১২ সদস্য বিশিষ্ট একটি বোর্ড প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করবে।[৬][৭]