ফ্রান্সিস ফোর্ড

ফ্রান্সিস ফোর্ড
আনুমানিক ১৮৯৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ফ্রান্সিফ ফোর্ড
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ফ্রান্সিস গিলবার্টসন জাস্টিস ফোর্ড
জন্ম১৪ ডিসেম্বর, ১৮৬৬
প্যাডিংটন, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪০
বারওয়াশ, সাসেক্স, ইংল্যান্ড
ডাকনামস্টর্ক
উচ্চতা৬ ফুট ২.৫ ইঞ্চি (১.৮৯ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনস্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
সম্পর্কডব্লিউএ ফোর্ড (পিতা), জিজে ফোর্ড (কাকা), ডব্লিউজে ফোর্ড (ভ্রাতা), এএফজে ফোর্ড (ভ্রাতা), এনএম ফোর্ড (ভাইপো), জেআরটি বার্কলে (দৌহিত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৯০)
১৪ ডিসেম্বর ১৮৯৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট৬ মার্চ ১৮৯৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৮৬ - ১৮৯৯মিডলসেক্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৬৮
রানের সংখ্যা ১৬৮ ৭,৩৫৯
ব্যাটিং গড় ১৮.৬৬ ২৭.০৫
১০০/৫০ ০/০ ১৪/৩০
সর্বোচ্চ রান ৪৮ ১৯১
বল করেছে ২০৪ ১০,২০৩
উইকেট ২০০
বোলিং গড় ১২৯.০০ ২৩.৭৮
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৪৭ ৭/৬৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/০ ১৩১/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ফ্রান্সিস গিলবার্টসন জাস্টিস ফোর্ড (ইংরেজি: Francis Ford; জন্ম: ১৪ ডিসেম্বর, ১৮৬৬ - মৃত্যু: ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪০) লন্ডনের প্যাডিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ফুটবলার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৯৪ থেকে ১৮৯৫ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্স, কেমব্রিজ ও এমসিসি দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ‘স্টর্ক’ ডাকনামে পরিচিত ফ্রান্সিস ফোর্ড

শৈশবকাল

রেপ্টন স্কুল ও কেমব্রিজের কিংস কলেজে ফ্রান্সিস ফোর্ড অধ্যয়ন করেছিলেন।[] সাত ভাইয়ের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন। তারা প্রত্যেককেই রেপ্টনের সেরা ক্রিকেটার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। চার বছর রেপ্টন একাদশে খেলেন। তন্মধ্যে শেষ দুই মৌসুমে অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। তৃতীয় ভাই হিসেবে কেমব্রিজের পক্ষে খেলেন। ফ্রেশম্যান হিসেবে ব্লুধারী হন। নিজস্ব প্রথম বছরে অক্সফোর্ড জয় পায়। পরের খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়। পরবর্তী দুই খেলায় দারুণ জয়ের সন্ধান পায় তার দল। অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ইনিংস ও ১০৫ রানে জয় করার পর সাত উইকেটে কেমব্রিজ দল বিজয়ী হয়। এরফলে ষষ্ঠবারের মতো ধারাবাহিকভাবে নয় খেলার জয়ে অগ্রসর হয় দলটি।

ছয় ফুট আড়াই ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ফ্রান্সিস ফোর্ড তার উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে বামহাতে দূর্দান্ত স্ট্রোক খেলতেন। দর্শনীয় ভঙ্গীমায় অনেকগুলো সুন্দর নিশানার বলকে হাফ ভলিতে রূপান্তর করেছেন। বোলার শর্ট পিচের বল করলে সেগুলোকে তিনি পিচের উভয় দিকে দূর্দান্ত গতিতে খেলতেন। ১৮৯০ সাল বাদে স্বর্ণালী সময়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হন। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় তিনি সর্বোচ্চ অপরাজিত ৩২ রান খেলে দলকে জয় এনে দেন।

১৮৮৬ থেকে ১৮৯৯ সময়কালে মিডলসেক্স, কেমব্রিজ ও মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। কার্যকরী বামহাতি ব্যাটসম্যান ও ধীরগতিসম্পন্ন বামহাতি অর্থোডক্স বোলার ছিলেন ফ্রান্সিস ফোর্ড।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

১৮৮৬ সাল থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সিস ফোর্ডের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৮৯০ সালে হোভে সাসেক্সের বিপক্ষে দূর্দান্ত ও ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৯১ রান তুলেন। কেমব্রিজের অধিনায়ক গ্রিগর ম্যাকগ্রিগরের ১৩১, সি. পি. ফোলি’র ১১৭ রানের কল্যাণে কেমব্রিজ দল দ্বিতীয় ইনিংসে ৭০৩/৯ তুলে। এ সংগ্রহটি তৎকালীন ইংরেজ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ দলগত রানের রেকর্ড ছিল। তার স্মরণে উইজডেনে উল্লেখ করা হয় যে, তার ড্রাইভগুলো দর্শনীয় ছিল ও বোলারদের মাথার উপর দিয়ে যায়। কাটের মারগুলো সময় উপযোগী ছিল। তার এ ধরনের মারকুটে ঢংয়ের খেলায় বোলারেরা খেঁই হারিয়ে ফেলেন। লর্ডসে ল্যাঙ্কাশায়ারের আর্থার মোল্ড, সারের টম রিচার্ডসনবিল লকউডের ন্যায় সেরা বোলারদেরকে তুনোধুনো করে রান সংগ্রহ করায় দর্শকেরা বেশ আনন্দে মেতে উঠে।[] ১৮৯৩ সালে এ. ই. স্টডার্টের পর মিডলসেক্সের ব্যাটিং গড়ে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করেন।

১৮৯৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ব্যাটিং গড়ে শীর্ষে ছিলেন। ৫৩ গড়ে ৮০৫ রান তুলেন। লর্ডসে জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। উভয় ইনিংসে ৫০ ও ৭৯ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় খেলায়ও ভালো খেলেন। কেবলমাত্র ডব্লিউ. জি. গ্রেসজি. এল. জেসপ তার তুলনায় ভালো খেলা উপহার দিয়েছিলেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত পরিবেশে অনুষ্ঠিত খেলায় ১৮৯৮ সালে হেডিংলিতে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে মিডলসেক্সের জয়ে ভূমিকা রাখেন। জর্জ হার্স্ট, উইলফ্রেড রোডসএফ. এস. জ্যাকসন সমৃদ্ধ দলের বিপক্ষে শেষ ইনিংসে ৬০ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় অগ্রসর হয়ে ২৬ রানের মাথায় চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন। ২৯ রান করে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় আনেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ফ্রান্সিস ফোর্ড। ১৪ ডিসেম্বর, ১৮৯৪ তারিখে সিডনিতে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১ মার্চ, ১৮৯৫ তারিখে মেলবোর্নে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৮৯৪-৯৫ মৌসুমের শীতকালে অ্যান্ড্রু স্টডার্টের অধিনায়কত্বে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। সেখানে তিনি পাঁচটি টেস্টে খেলেছিলেন। গিলবার্ট জেসপ তার সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন যে, ফ্রান্সিস ফোর্ড তার দেখা সেরা বামহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন।[] সিডনি টেস্টে ১০ রানে জয় পায় তার দল। অস্ট্রেলিয়ার ৫৮৬ রানের বিপরীতে ইংল্যান্ড দল ফলো-অনের কবলে পড়ে। আলবার্ট ওয়ার্ডজে. টি. ব্রাউনের দূর্দান্ত ব্যাটিং ও তার ৪৮ রান দলকে ১৭৭ রানে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। এরপর ববি পিলজনি ব্রিগসের বোলিংয়ে অসম্ভব অর্জন করে তার দল।

অবসর

১৮৯৯ সাল শেষে দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে কাউন্টি ক্রিকেট ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৭.২১ গড়ে ৭,২৯৩ রান তুলেন। ভালোমানের ধীরগতিসম্পন্ন বামহাতি বোলার ছিলেন। নিখুঁত নিশানা বরাবর বোলিং করে প্রায়শই সমস্যার সৃষ্টি করতেন। বিশাল উচ্চতা নিয়ে স্পিন করাতেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২২ গড়ে ১৯৮ উইকেট পান।

ফুটবল খেলায় গোলরক্ষক হিসেবে খেলতেন। কেমব্রিজ অ্যাসোসিয়েশন একাদশের অধিনায়কত্ব করে ব্লুধারী হন। কিছুসময় করিন্থিয়ান ক্লাবে খেলেছেন। সর্বদাই ক্রিকেটের সাথে নিবিড় সম্পর্ক বজায় রাখতেন। লম্বাটে গড়নের অধিকারী ছিলেন। ফলশ্রুতিতে স্টর্ক ডাকনামে পরিচিতি পান। ক্রিকেট পরিবারের সন্তান ছিলেন। পিতা ডব্লিউ এ, তিন ভাই - এএফজে, এলজিবিজে ও ডব্লিউ জে, ভাইপো নেভিল ফোর্ড, গ্রেট নেফিউ জন বার্কলে ও কাকা জিজে ফোর্ড - সকলেই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার কাকা হোরেস এ. ফোর্ডকে সর্বকালের সেরা তীরন্দাজের মর্যাদা দেয়া হয়েছে। জর্জ স্যামুয়েল ফোর্ড সম্পর্কে তার দাদা ছিলেন।

৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪০ তারিখে ৭৩ বছর বয়সে সাসেক্সের বারওয়াশ এলাকায় ফ্রান্সিস ফোর্ডের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

  1. "Ford, Francis Gilbertson Justice (FRT886FG)"A Cambridge Alumni Databaseকেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় 
  2. Wisden 1941 Amanack 
  3. Jessop, GL (জুন ১৯২১)। "My Cricketing Reminscences"Cricketer1: 2। ৮ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!