Share to: share facebook share twitter share wa share telegram print page

প্রাচীন বিষ্ণু মন্দির, কাহারোল

প্রাচীন বিষ্ণু মন্দির, কাহারোল
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাদিনাজপুর জেলা
অবস্থান
অবস্থানকাহারোল উপজেলা
দেশবাংলাদেশ

প্রাচীন বিষ্ণু মন্দির বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের অবস্থিত একটি প্রাচীন স্থাপনা। এটি মূলত দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার অন্তর্গত একটি প্রাচীন মন্দির। এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।[]

অবস্থান

মন্দিরের ভিত্তি

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার ডাবর ইউনিয়নের মাধবগাঁওয়ে এটি পাওয়া যায়। দিনাজপুর শহর থেকে বীরগঞ্জ উপজেলায় চৌরাস্তার থেকে যে রাস্তা পশ্চিমে ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় গেছে, তা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে টংকবাবুর হাট থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণে তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে মাধবগাঁও গ্রামে এই মন্দির পাওয়া যায়। এখানে একটি উঁচু ঢিবি ছিল গ্রামের মানুষ এই উঁচু টিবিকে বুরুজ বলত।[]

বিবরণী

মন্দিরটি বহু বছর ধরে মাটিতে ঢাকা ছিল। স্থানীয় গ্রামের মানুষের কাছে মাটিতে ঢেকে থাকা সেই উঁচু টিবিটি বুরুজ বলে পরিচিত ছিল। মন্দিরটি প্রধানত দুটি অংশে বিভক্ত। পশ্চিম দিকে ১৪৪ বর্গমিটার পরিমাপের একটি নিরেট প্ল্যাটফর্মের ওপর ছোট একটি কক্ষ নিয়ে গঠিত।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. স্বাধীন সেন জানান,সেই কক্ষের একটি মন্দিরের গর্ভগ্রহ হিসেবে পরিচিত,যেখানে প্রতিমার উপাসনা হতো। মন্দিরের বহির্গতের অভিক্ষেপের সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে পাঁচটা অভিক্ষেপ থাকলে বলা হয় পঞ্চরথ, সাতটি থাকলে বলা হয় সপ্তরথ। কিন্তু আবিষ্কৃত মন্দিরটির নয়টি রথ থাকায় এটিকে নবরথ মন্দির বলা হয়।

তিনি আরও বলেন,মন্দিরটির প্রধান প্রবেশদ্বার পূর্বে দিকে একটি বর্গাকার নিরেট প্ল্যাটফর্ম দিয়ে এই প্রবেশপথ চিহ্নিত। তিনি জানান,এর আগে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় একটি পঞ্চরথ মন্দিরের সন্ধান পাওয়া গেলেও নবরথ বিশিষ্ট মন্দিরের আবিষ্কার বাংলাদেশে এই প্রথম। অধ্যাপক স্বাধীন সেন জানান উন্মোচিত মন্দিরটির স্থাপনা রীতি ও গঠনশৈলী নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও পূর্ব ভারতীয় স্থাপত্যের বিশেষজ্ঞ দীপক সঞ্জন দাশের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তিনি মন্দিরটির উপরি কাঠামোকে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার বহুলাড়ার সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন,পূর্ব ভারতীয়,বিশেষ করে উড়িষ্যা মন্দির স্থাপত্যশৈলীর অন্তর্ভুক্ত এই মন্দিরটির গর্ভগৃহের ওপরে সুদৃশ্য ও সুউচ্চ রেখা দেউল ধরনের শিখর ছিল।

অধ্যাপক ডঃ স্বাধীন সেন এর মতে ইটের তৈরি বলে সুউচ্চ শিখরযুক্ত এই মন্দিরগুলোর শিখর একসময় ভেঙ্গে পড়ে। অবিভক্ত বাংলা অঞ্চলে টিকে থাকা ইটের তৈরি এমন মন্দিরের সংখ্যা হাতে গোনা। অধ্যাপক সেন আরও জানান, প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা যায় যে,এটি একটি বিষ্ণু মন্দির ছিল। তিনি জানান,খনন কাজে উন্মোচিত অংশ দেখ ধারণা করা যায়,মন্দিরটি পুনরায় ব্যবহৃত হয়েছিল। অন্তত চতুর্দশ থেকে পঞ্চদশ শতক পর্যন্ত।

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের গবেষক সোহাগ আলী জানান,আবিষ্কৃত মন্দিরটি বাংলাদেশের প্রত্ন স্থাপনার তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।

তিনি আরো বলেন,বরেন্দ্র অঞ্চলের এই অংশে মন্দিরগুলো মানব বসতির কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছিল।

স্থানীয় এলাকাবাসী সত্যরাম রায় বয়স প্রায় ১০০ বছরের উপরে,তিনি জানান “আমার দাদু বলেছিল এখানে পুরনো মন্দির ছিল।” []

আর পড়ুন

তথ্যসূত্র

  1. "রংপুর বিভাগের পুরাকীর্তি"বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরhttp://www.archaeology.gov.bd/। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০১৫  |প্রকাশক= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  2. http://www.prothomalo.com/bangladesh/article/888601; জুন ১৫, ২০১৬
  3. সংবাদদাতা, কাহারোল (দিনাজপুর) (১৯ জুন ২০১৬)। "কাহারোলে প্রাচীন বিষ্ণু মন্দিরের খনন কাজ চলছে"দৈনিক ইত্তেফাক। ৭ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৬ 
Prefix: a b c d e f g h i j k l m n o p q r s t u v w x y z 0 1 2 3 4 5 6 7 8 9

Portal di Ensiklopedia Dunia

Kembali kehalaman sebelumnya