পাত্রিস এমরি লুমুম্বা (Patrice Émery Lumumba, ২রা জুলাই, ১৯২৫ – ১৭ই জানুয়ারি, ১৯৬১) কংগোর রাষ্ট্রপ্রধান, বিপ্লবী জাতীয়তাবাদী নেতা ও সাহিত্যিক ছিলেন। তিনি কংগোর মুক্তিযুদ্ধে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ১৯৬০ সালের জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্বাধীন গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের (তৎকালীন কঙ্গো প্রজাতন্ত্র) প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বেলজিয়ামের উপনিবেশ থেকে স্বাধীন প্রজাতন্ত্র হিসেবে কঙ্গোর রূপান্তরে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। মতাদর্শগতভাবে লুমুম্বা ছিলেন একজন আফ্রিকান জাতীয়তাবাদী ও সর্ব-আফ্রিকাবাদী। তিনি ১৯৫৮ সাল থেকে ১৯৬১ সালে পরিকল্পিত হত্যার শিকার হবার আগ পর্যন্ত কঙ্গো জাতীয় আন্দোলন দলের নেতৃত্বে ছিলেন।
১৯৬০ সালে কঙ্গোর স্বাধীনতা অর্জনের কিছু পরে দেশটির সেনাবাহিনীতে একটি বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়, যা কঙ্গো সংকটের সূচনা করে। লুমুম্বা মোয়াজ তশোম্বের নেতৃত্বাধীন ও বেলজিয়ামের মদদপুষ্ঠ কাতাঙ্গান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন করার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের সাহায্য প্রার্থনা করেন। উভয়ই লুমুম্বাকে সাহায্য করতে প্রত্যাখান করে, কেননা পশ্চিমা বিশ্বের অনেকের সন্দেহ ছিল যে লুমুম্বা গোপনে সাম্যবাদের সপক্ষে ছিলেন। যখন লুমুম্বা সাহায্যের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের কাছে আবেদন করেন, তখন এই সন্দেহগুলি আরও জোরদার হয়। মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা এটিকে "ধ্রুপদী সাম্যবাদী ক্ষমতা দখল" হিসেবে বর্ণনা করে। এর ফলে লুমুম্বার সাথে রাষ্ট্রপতি জোসেফ কাসা-ভুবু ও সামরিক বাহিনী প্রধান মোবুতু সেসে সেকো-র দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বেলজিয়ামের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে, যারা স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরোধী ছিল।
মোবুতুর সামরিক অভ্যুত্থানের পরে লুমুম্বা সমর্থকদের সাথে যোগ দেবার জন্য স্তানলেভিলে পালানোর চেষ্টা করেন, যারা সেখানে মোবুতু-বিরোধী একটি নতুন রাষ্ট্র গঠন করেছিল, যার নাম ছিল স্বাধীন কংগো প্রজাতন্ত্র। পথে লুমুম্বাকে গ্রেপ্তার করা হয় ও কারাবন্দী করা হয়। তাকে এরপর কাতাংগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং কাতাঙ্গান ও বেলজীয় কর্মকর্তাদের সম্মুখে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে হত্যা করা হয়। তার মৃতদেহকে অগভীর গর্তে ফেলে দেওয়া হয় ও পরে উঠিয়ে ধ্বংস করে ফেলা হয়।[৫]
হত্যার পরে লুমুম্বা বৃহত্তর সর্ব-আফ্রিকাবাদী আন্দোলনের এক আত্মত্যাগী শহীদ হিসেবে গণ্য হন। পরবর্তী বছরগুলিতে তদন্তে তার মৃত্যুকালীন ঘটনাগুলির উপর, বিশেষ করে তার হত্যাকাণ্ডে বেলজিয়াম ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত বেরিয়ে আসে।[৫] ২০০২ সালে বেলজিয়াম সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে লুমুম্বার হত্যাকাণ্ডে ভূমিকা রাখার জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে।[৬]
প্রারম্ভিক জীবন
পাত্রিস লুমুম্বা বেলজিয়াম অধিকৃত কংগোতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার আসল নাম ছিল এলিয়াস ওকিত আসম্বো। ছাত্র হিসেবে মেধাবী লুমুম্বা ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্ট স্কুলে পড়াশোনা করেন ও বৃত্তি পান। তিনি ফরাসী, লিংগালা, সোয়াহিলি ও সিলুবা ভাষা জানতেন।
জাতীয়তাবাদী সংগঠন
প্রধানমন্ত্রী
পতন
ক্যু -দেতার পরে ৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৬০ প্রেসিডেন্ট কাসাবুভু বেতারে ঘোষণা করেন তিনি লুমুম্বা সরকার কে বরখাস্ত করেছেন। তার সাতগে ছয়জন মন্ত্রীকেও। তাদদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা কংগো ও সোভিয়েত রাষ্ট্রের যোগসাজশ দক্ষিণ কাসাই গনহত্যায় দোষী। এই ঘটনার পরে স্বয়ং লুমুম্বা ইউ এন এর অধীন বেতার কেন্দ্রে যান ও অভিযোগ সম্পূর্ণ রূপে অস্বীকার করে এই বিশ্বাসঘাতী ষড়যন্ত্রের জন্যে কাসা বুভুকেই দায়ী করেন।
মৃত্যু
তার মৃত্যু আনুষ্ঠানিকভাবে, ১৩ ফেব্রুয়ারি কাতাগাঁ রেডিওর মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়; তখন অভিযোগ এসেছিল যে কোলাটে কারাগার খামার থেকে পলায়নের তিন দিনের পর ক্রুদ্ধ গ্রামবাসীদের হাতে তিনি নিহত হন।[৭]
স্মরণ
তথ্যসূত্র
|
---|
সোভিয়েত ইউনিয়নফু | |
---|
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | |
---|
চীন/তাইওয়ান | |
---|
জাপান | |
---|
জার্মানি | |
---|
যুক্তরাজ্য | |
---|
ইতালি | |
---|
ফ্রান্স | |
---|
উত্তর ইউরোপ | |
---|
স্পেন | |
---|
পর্তুগাল | |
---|
পোল্যান্ড | |
---|
কানাডা | |
---|
ফিলিপাইন | |
---|
আফ্রিকা | |
---|
পূর্ব ইউরোপ | |
---|
লাতিন আমেরিকা | |
---|
মধ্যপ্রাচ্য | |
---|
দক্ষিণ এবং পূর্ব-এশিয়া | |
---|
অস্ট্রেলিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল | |
---|
|