তিরুমালা কৃষ্ণ বিগ্রহ হল ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের তিরুমালার বেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের একটি বিগ্রহ। উক্ত মন্দিরটি বিষ্ণুর বেঙ্কটেশ্বর রূপের মন্দির হলেও, এই মন্দিরে বিষ্ণুর দুই অবতার রাম ও কৃষ্ণের বিগ্রহও আছে। এই মন্দিরে কৃষ্ণের পত্নী রুক্মিণীর বিগ্রহও পূজিত হয়।
বিগ্রহ
কৃষ্ণের বিগ্রহটি শিশুর ‘নবনীত নৃত্য’ (দিব্য নৃত্য) ভঙ্গিমায় দেখা যায়। বিগ্রহের বাঁ হাতটি প্রসারিত এবং ডান পাটি বেদীর উপর স্থাপিত। ডান পাটি হাঁটুর উপর স্থাপিত। বিগ্রহের ডান হাতে মাখনের একটি ঢেলা রয়েছে।[১]
রুক্মিনী বিগ্রহ
রুক্মিনীর বিগ্রহের বাঁ হাতে একটি পদ্ম এবং ডান হাতে বর মুদ্রা দেখা যায়। বিগ্রহটি পদ্মের আকৃতিবিশিষ্ট একটি বেদীর উপর স্থাপিত। এই বিগ্রহটি কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা জানা যায় না। কৃষ্ণ বিগ্রহটিও কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই তথ্য অজ্ঞাত।
ইতিহাস
বিগ্রহ প্রতিষ্ঠার তারিখটি সঠিক জানা না গেলেও একটি প্রাচীন নথি থেকে জানা যায়, ১১০০ সালের জন্মাষ্টমী তিথিতে কৃষ্ণ বিগ্রহে নৈবেদ্য উৎসর্গিত হয়েছিল।[১]
সেবা
বেঙ্কটেশ্বর মন্দিরের কৃষ্ণ বিগ্রহটি মন্দিরের দৈনিক পূজায় কেন্দ্রীয় গুরুত্ব পায় না। এমনকি এই বিগ্রহের উদ্দেশ্যে নিবেদিত নৈবেদ্যও আগে প্রধান বিগ্রহের উদ্দেশ্যে উৎসর্গিত হয়। একই প্রথা মন্দিরের রাম বিগ্রহের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়। বাৎসরিক কোইল অলবর তিরুমাঞ্জনম (মন্দির পরিষ্কার করার অনুষ্ঠান) অনুষ্ঠানের সময় বিগ্রহগুলিকে গর্ভগৃহে স্থানান্তরিত করা হয় এবং পরিষ্কারের কাজ শেষ হলে সেগুলিকে আবার যথাস্থানে ফিরিয়ে এনে পবিত্র মশলা দিয়ে স্থাপিত করা হয়।[২] ‘ধনুর্মাসে’র সময় এই বিগ্রহ গুরুত্ব পায়। এই সময় ভোগ শ্রীনিবাসের পরিবর্তে এই বিগ্রহে একান্ত সেবা অনুষ্ঠিত হয়।[৩]
কয়েকটি বিশেষ অনুষ্ঠানে গর্ভগৃহের বাইরে কৃষ্ণ বিগ্রহের উদ্দেশ্যে সরাসরি পূজা নিবেদিত হয়:
- তেপ্পোৎসবম: বাৎসরিক তেপ্পোৎসবমের (নৌকাবিহার উৎসব) দ্বিতীয় দিনটি কৃষ্ণ ও রুক্মিনী বিগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট। এই দিন বিগ্রহদুটিকে মন্দিরের উত্তর দিকের পবিত্র হ্রদ স্বামী পুষ্করিণীতে আনা হয় এবং হ্রদে নৌকায় ভাসিয়ে হ্রদমধ্যস্থ একটি মণ্ডপমে পূজার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।[৪]
- বসন্তোৎসবম: বাৎসরিক বসন্তোৎসবমের তৃতীয় দিনে কৃষ্ণ ও রুক্মিনী বিগ্রহদুটিকে মালায়াপ্পা স্বামী ও তার দুই পত্নী এবং রাম বিগ্রহের সঙ্গে মন্দিরের চারপাশের চারটি রাস্তায় শোভাযাত্রায় বের করা হয় এবং পরে আবার বসন্ত মণ্ডপমে ফিরিয়ে আনা হয়।[৫]
- কৃষ্ণ জয়ন্তী: জন্মাষ্টমী তিথিতে কৃষ্ণ ও রুক্মিনী বিগ্রহকে বিশেষ প্রার্থনার পর মন্দিরের চারপাশে একটি শোভাযাত্রায় বের করা হয়।
তথ্যসূত্র