ঢাকা শহরে প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি

ঢাকা শহরে প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি স্থাপন করা হয় ১৯০১ সালে। এক্ষেত্রে অবদান রাখে ঢাকার নবাব খাজা আহসানুল্লাহ

ইতিহাস

বৈদ্যুতিক বাতি স্থাপনের অনুদান দেন ঢাকার নবাব খাজা আহসানুল্লাহ

উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ঢাকার রাস্তায় কেরোসিন বাতির ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তা খুব একটা সুবিধাজনক ছিল না। তাই এটির বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হচ্ছিল। এর মধ্যে ব্রিটিশ সরকার নবাব আব্দুল গণিকে K.C.S.I. উপাধিতে ভূষিত করেন। এই ঘটনায় আনন্দিত হয়ে তার ছেলে খাজা আহসানুল্লাহ ১৮৮৭ সালে কেরোসিন বাতির পরিবর্তে গ্যাস বাতি লাগানোর অঙ্গিকার করেন। তিনি এটাও বলেন তিনি শুধু গ্যাস বাতি লাগানোর অর্থ যোগাবেন তাই না, তিনি এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও নেবেন। তবে তিনি একটি শর্ত জুড়ে দেন। তার এই অনুদানে ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির যে অর্থ বেঁচে যাবে তা দিয়ে তাদেরকে শহরের দমকল ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে। তবে মিউনিসিপ্যালিটি আসলে বেঁচে যাওয়া অর্থ কোন ক্ষাতে ব্যয় করবে তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দের পড়ে যায়। এর মধ্যে আবার খাজা আহসানুল্লাহ তার মত পালটে ফেলেন। তিনি গ্যাস বাতি লাগানোর পরিবর্তে বৈদ্যুতিক বাতি লাগানোর সুপারিশ করেন এবং তা গৃহিত হয়। ১৯০১ সালে ঢাকার রাস্তায় বসানো হয় প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি। পুরো বাংলায় দার্জিলিং এর পর ঢাকাতেই বৈদ্যুতিক বাতি বসানো হয়। বৈদ্যুতিক বাতি বসানোর কাজটি করে মেসার্স অক্টাভিয়াস স্টিল এ্যন্ড কোম্পানি। বিদ্যুতের পাওয়ার স্টেশনটি বসানো হয়েছিল হাতিরপুলের কাছে। অবশ্য বৈদ্যুতিক বাতি বসানোর ফলে কেরোসিন বাতির বিলুপ্তি ঘটেছিল তা নয়। দুটোরই প্রচলন ছিল ঢাকার রাস্তায়। কারণ পুরো ঢাকাতে বৈদ্যুতিক বাতির প্রচলন করা সম্ভব হয়নি। আর কেরোসিন বাতির দাম ছিল কম। ১৯২০-২১ সালে বৈদ্যুতিক বাতির সংখ্যা দাঁড়ায় ২৬৮ টি।[]

পক্ষপাতিত্ত্ব

বৈত্যুতিক বাতি বসানোর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল রাস্তায় চলাফেরা করা মানুষদের নিরপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু এই বাতি লাগানোর ক্ষেত্রে এবং বন্টনের ক্ষেত্রে কিছুটা পক্ষপাতিত্ব পরিলক্ষিত হয়। শহরের উত্তরাঞ্চলের কার্জন হল, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল, রেসকোর্স ময়দান এসব এলাকায় রাতে আলোর অভাব হতো না, খুবই উজ্জ্বল থাকতো। কিন্তু কোর্ট কাচারি, ভিক্টোরিয়া পার্ক, মিউনিসিপ্যালিটি রোড, রোমান ক্যাথলিক চার্চ, আহসান মঞ্জিল সহ বিভিন্ন জায়গায় বাতি ছিল খুবই কম। আবার পুরানা পল্টন সহ বিভিন্ন জায়গায় ছিল কেরোসিনের বাতি। অথচ এসব জায়গাতে আলো আরও বেশি দরকার ছিল।[]

তথ্যসূত্র

  1. আহমেদ, শরীফ উদ্দিন (২০০১)। ঢাকা ইতিহাস ও নগর জীবন। ধানমন্ডি, ঢাকা: শাহিনা রহমান, একাডেমিক প্রেস এন্ড পাবলিসার্স লাইব্রেরি। পৃষ্ঠা ৩১৫–৩১৭। আইএসবিএন 9843233751 

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!