জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে। এই জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান জাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
২৬ এপ্রিল, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সরকারের এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর আত্মপ্রকাশ করে।[২] প্রতিষ্ঠার বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এটি ঢাকা গণগ্রন্থাগার ভবনে কাজ শুরু করে। ১৯৭০ সালের এপ্রিল মাসে এটিকে ঢাকার চামেলীবাগে স্থানান্তর করা হয় ও পরের বছরের মে মাসে এটিকে ধানমন্ডির ১নং সড়কে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭২ সালে এটিকে জাতীয় জাদুঘরের মর্যাদা প্রদান করা হয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৭৯ সালে এ জাদুঘরকে ধানমন্ডির ৬নং সড়কে নেয়া হয় ও পরের বছর পুনরায় কাকরাইল মসজিদের সামনের একটি স্থানে স্থানান্তর করা হয়। জাদুঘরের একটি নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকার ঢাকার আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগরে ৫ একরের এক খণ্ড জমি বরাদ্দ করে এবং সেখানে ১৯৮৭ সালে এর নিজস্ব ভবনে কার্যক্রম শুরু হয়।
জাদুঘর প্রাঙ্গণ ৪ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন রয়েছে। ভবনের ১ম ও ২য় তলায় প্রদর্শশালা, ৩য় তলায় অফিস এবং ৪র্থ তলায় বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি অবস্থিত। প্রদর্শশালা ছাড়া এখানে একটি গ্রন্থাগার, কর্মশালা ও মিলনায়তন রয়েছে। ভবন প্রাঙ্গণে একটি ডাইনোসরের মূর্তি এবং একটি ছোট যুদ্ধ বিমান রয়েছে।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে ৮টি গ্যালারি রয়েছে। এগুলি হলো:[২]
শনিবার থেকে বুধবার, সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা প্রদর্শশালা পরিদর্শন করা যায়। বিজ্ঞান জাদুঘর প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে।
সর্বশেষ আনুষ্ঠানিক তথ্য মতে, জাদুঘরের প্রশাসনিক ভবনের উত্তর-পূর্ব কোণে স্থাপিত পাঠাগারটিতে ৬ হাজার বই, সাময়িকী ও অন্যান্য প্রকাশনা রয়েছে। রোববার থেকে বৃহস্পতিবার, সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পাঠাগারটি সবার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।[৩]
নিয়মিতভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উপর বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারের জন্য মিউজ়ু বাস[৪], চতুর্মাত্রিক মুভি বাস ও অবজ়ারভেটরি ভ্যান (মানমন্দির ভ্যান)[৫] যুক্ত করা হচ্ছে জাদুঘরের নিয়মিত কার্যক্রমে।
সমন্বয় সাধনের মাধ্যমে বিজ্ঞান আন্দোলনকে জোরদার করা;
১৯৭৮ সাল থেকে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্যাপিত হয়ে আসছে। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহে প্রতিযোগিতা ও বিজ্ঞান মেলা আঞ্চলিক পর্যায় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়।[৬]
যাদুঘরটি ২০২২ সালের ২৬ মে আনুষ্ঠানিক ভাবে আইএসও সনদ অর্জন করে। অফিস ব্যবস্থাপনায় উৎকর্ষ, দর্শক সেবায় সাফল্য, দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিজ্ঞান অনুরাগ সৃষ্টি এবং তরুণদের মধ্যে উদ্ভাবনী চিন্তা সৃষ্টিতে প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য অর্জনের জন্য এই সনদ অর্জন করে বিজ্ঞান জাদুঘর। দেশে কোনও সরকারি দফতর হিসেবে বিজ্ঞান জাদুঘরই প্রথম আইএসও সনদ পেয়েছে।[৭]