জর্জ থম্পসন
আনুমানিক ১৯১০ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জর্জ থম্পসন |
|
পূর্ণ নাম | জর্জ যোসেফ থম্পসন |
---|
জন্ম | (১৮৭৭-১০-২৭)২৭ অক্টোবর ১৮৭৭ কোজেনহো, নর্দাম্পটন, ইংল্যান্ড |
---|
মৃত্যু | ৩ মার্চ ১৯৪৩(1943-03-03) (বয়স ৬৫) ব্রিস্টল, ক্লিফটন, ইংল্যান্ড |
---|
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি |
---|
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম |
---|
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার |
---|
|
জাতীয় দল | |
---|
টেস্ট অভিষেক | ২৭ মে ১৯০৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
---|
শেষ টেস্ট | ১৪ মার্চ ১৯১০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা |
---|
|
---|
|
প্রতিযোগিতা |
টেস্ট |
এফসি |
---|
ম্যাচ সংখ্যা |
৬ |
৩৫২ |
রানের সংখ্যা |
২৭৩ |
১২,০১৮ |
ব্যাটিং গড় |
৩০.৩৩ |
২২.০১ |
১০০/৫০ |
০/২ |
৯/৫৩ |
সর্বোচ্চ রান |
৬৩ |
১৩১* |
বল করেছে |
১,৩৬৭ |
৬৩,৯৮৮ |
উইকেট |
২৩ |
১,৫৯১ |
বোলিং গড় |
২৭.৭৩ |
১৮.৮৯ |
ইনিংসে ৫ উইকেট |
০ |
১৪৭ |
ম্যাচে ১০ উইকেট |
০ |
৪০ |
সেরা বোলিং |
৪/৫০ |
৯/৬৩ |
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং |
৫/০ |
২৫২/০ | |
|
---|
|
জর্জ যোসেফ থম্পসন (ইংরেজি: George Thompson; জন্ম: ২৭ অক্টোবর, ১৮৭৭ - মৃত্যু: ৩ মার্চ, ১৯৪৩) নর্দাম্পটনের কোজেনহো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯০৯ থেকে ১৯১০ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি।[২]
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করার পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিং করতেন জর্জ থম্পসন।
কাউন্টি ক্রিকেট
মাইনর কাউন্টি ও কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শুরুরদিকের বছরগুলোয় দীর্ঘকাল নর্দাম্পটনশায়ারের প্রধান মেরুদণ্ডের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
১৮৯০ থেকে ১৯৯৩ সময়কালে উইলিংবোরা স্কুলে অধ্যয়ন করেছিলেন জর্জ থম্পসন। কিশোর অবস্থাতেই প্রথম-শ্রেণীর মর্যাদাবিহীন নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে প্রথম খেলতে নামেন। দ্রুত তিনি স্বীয় প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটাতে থাকেন।
১৮৯৭ সালের শুরুতে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে মাঝে-মধ্যে খেলতে থাকেন। ১৯০০ সালে শেষ মুহুর্তে প্লেয়ার্সের পক্ষে ১২৫ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলে সমালোচকদের সমুচিত জবাব দেন। তবে, বিস্ময়করভাবে মাইনর কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে পরবর্তী তিন বছরে তেমন সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি।
১৯০৪ সালে ব্যাট হাতে ৩৬ গড়ে রান তুলেন ও বল হাতে ১০-এরও কম গড়ে উইকেট পেয়েছিলেন। এরফলে ঐ পর্যায়ের ক্রিকেটে নিজেকে বেশ মানিয়ে নেন তিনি। ১৯০৫ সালে নর্দাম্পটনশায়ার প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা লাভ করে। মাইনর কাউন্টিজ ক্রিকেটের তুলনায় সতীর্থরা দক্ষতা দেখাতে না পারলেও তিনি দূর্দান্ত খেলেন। গ্রীষ্মের ভেজা আবহাওয়াকে কাজে লাগিয়ে তাকে রুখা ব্যাটসম্যানদের দুঃসাধ্য ছিল। ফলশ্রুতিতে, ১৯০৬ সালের উইজডেন সংস্করণে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদায় ভূষিত হন জর্জ থম্পসন।[৩] অন্যান্য বোলারের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সহায়তা না পেলেও পরবর্তী দুই বছর বেশ ভালো বোলিং করেন।
১৯০৬ সালে ১০০০ রান ও ১০০ উইকেট লাভের ন্যায় ডাবল পান। ১৯০৭ সালে বোলিং অনুপযোগী পিচে ৫০ উইকেট লাভের মাইলফলকে পৌঁছতে পারেননি। ১৯০৮ সালে তার বোলিং বেশ প্রতিকূলে চলে যায়। ১৯০৯ সালে পুনরায় খেলার জগতে নিজেকে মেলে ধরেন। নিজস্ব সেরা মৌসুমে ১৬৩ উইকেট পান। ১৯১০ সালে আবারও ডাবল পেয়েছিলেন। ১৯১১ সালে পাথরের ন্যায় শক্ত উইকেটেও বেশ ভালো করেন। প্রথম-শ্রেণীর বোলিং গড়ে শীর্ষে চলে যান। এছাড়াও, ১৯১২ ও ১৯১৩ সালে অন্যতম শীর্ষ কাউন্টি দল হিসেবে উত্থানে বোলিংয়ের পাশাপাশি স্লিপ অঞ্চলে ক্যাচ তালুবন্দী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
১৯১৪ সালে ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে পরপর তিন বলে ক্যাচ তালুবন্দী করে অসম্ভব দক্ষতা দেখান। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে মার্কাস ট্রেসকোথিক তার এ কৃতিত্ব ভাগীদার হয়েছেন। চারজন উইকেট-রক্ষকও হ্যাট্রিক ক্যাচ গ্লাভস বন্দী করলেও তার পূর্বে এ কৃতিত্ব কেউ দেখাতে পারেননি।
টেস্ট ক্রিকেট
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন জর্জ থম্পসন। ২৭ মে, ১৯০৯ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছিল তার। এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলার সুযোগ লাভ করেন। তবে, জর্জ হার্বার্ট হার্স্ট ও কলিন ব্লাইদের বোলিং তোপের কারণে তাকে আর বল হাতে নিতে হয়নি।
পরবর্তীতে শীতকালে ম্যাটিং উইকেটে সতর্ক দৃষ্টির কারণে দক্ষিণ আফ্রিকান গুগলি বোলারদের বিপক্ষে তার সাথে আর কেবলমাত্র জ্যাক হবসই সফল হয়েছিলেন।
খেলার ধরন
দীর্ঘদেহী জর্জ থম্পসন ছয় ফুটেরও অধিক উচ্চতাসম্পন্ন ছিলেন। এছাড়াও, ১৬ স্টোনেরও অধিক ওজনের অধিকারী ছিলেন। চমৎকার অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন তিনি। বিপুলাকৃতি হওয়া সত্ত্বেও অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ব্যাটিং কর্ম পরিচালন করতেন। ফলশ্রুতিতে, তাকে আউট করা বেশ দুঃসাধ্য হয়ে পড়তো। একসময় বেশ জোড়ালো ব্যাটিং করতেন। তখন তিনি খুব কমই ব্যাট উঁচুতে তুলে ধরতেন। এছাড়াও, সীমিত পর্যায়ে স্ট্রোক মারতেন। ধীরলয়ে পা চালাতেন। তাসত্ত্বেও, নিজের সেরা দিনগুলোয় বৃষ্টিবিঘ্নিত পিচেও অনেক রান তুলেছিলেন জর্জ থম্পসন। বোলার হিসেবে মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে সফলতা পেয়েছেন। বলে স্পিনও করতে পারতেন। দীর্ঘ প্রশস্ত হাতে স্লিপ অঞ্চলে ফিল্ডার হিসেবে দক্ষতা দেখিয়েছেন।
অবসর
১৯১৪ সালে তার বোলিং তেমন ভালো হয়নি। এ সময়ে তিনিও বেশ ভালো ব্যাটিং চালান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯২১ সালে পর্যন্ত আঘাতের কারণে নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলতে পারেননি। এ পর্যায়ে তিনি বল হাতে সফলতা না পেলেও কিছু দর্শনীয় ব্যাটিং উপহার দেন। ১৯২২ সালে কয়েকটি খেলায় অংশগ্রহণের পর খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটান।
৩ মার্চ, ১৯৪৩ তারিখে ৬৬ বছর বয়সে ব্রিস্টলের ক্লিফটনে জর্জ থম্পসনের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ