চট্টগ্রাম মাদ্রাসা |
প্রবাহবৃক্ষ |
- চট্টগ্রাম মাদ্রাসা
- অ্যাংলো পার্শিয়ান বিভাগ
- আরবি বিভাগ
- ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ
- গভ. ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বিলুপ্ত)
|
---|
পরবর্তী |
|
---|
সক্রিয় | ১৮৭৪ (1874)–১৯৭৯ (1979) |
---|
বৃত্তিদান | মহসিন তহবিল |
---|
অবস্থান | , |
---|
চট্টগ্রাম মাদ্রাসা বা চট্টগ্রাম সরকারি মাদ্রাসা বা চট্টগ্রাম মোহসিনীয়া মাদ্রাসা (১৮৭৪ - ১৯২৭) বা চট্টগ্রাম ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (১৯২৭ - ১৯৭৯) এবং সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (অংশবিশেষ; ১৯৬৭ - ১৯৭৯) ছিল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের মুসলিমদের জন্য প্রতিষ্ঠিত সর্বপ্রথম সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।[১][২] ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে মাদ্রাসাটি মহসিন ফান্ডের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠা করে ব্রিটিশ সরকার। প্রতিষ্ঠাকালীন মাদ্রাসাটি কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার অনুকরণে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এটি ব্রিটিশ সরকারের প্রেসিডেন্সি অব কমিশনারস্ দ্বারা পরিচালিত হতো। পরবর্তী সময়ে মাদ্রাসাটি থেকে গভ. মুসলিম হাই স্কুল, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের জন্ম হয়।[৩][৪]
ইতিহাস
প্রাথমিক পর্যায়
মাদ্রাসাটি হাজী মুহাম্মদ মুহসিনের মুহসিন ফান্ডের বরাদ্দকৃত অর্থে নবাব বাহাদুর আব্দুল লতিফের প্রচেষ্টায় তৎকালীন গভর্নমেন্ট অব বেঙ্গল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়। মুহম্মদ মুহসিন ১৮০৬ সালের এক অছিয়তে বিশাল অংকের একটি অর্থ বরাদ্দ করে একটি ট্রাস্ট গঠন করেন এবং এই টাকা ইসলামি শিক্ষা বিস্তারে ব্যয় করার কথা বলেন। নবাব বাহাদুর আব্দুল লতিফের সুপারিশে জর্জ ক্যাম্পবেল সরকার ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে সিদ্ধান্ত নেয় যে, ট্রাস্টের আয়ের অর্থের একটি অংশ ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে মোহসিনিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হবে। এই মাদ্রাসাগুলোর সমস্ত ব্যয়ও একই ট্রাস্ট বহন করতো। ১৮৭৪ সালে চট্টগ্রাম মোহসিনীয়া মাদ্রাসা নামে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পরপরই এ্যাংলো-পারসিয়ান বিভাগ চালু করা হয়।
১৯১৪ সালে মাদ্রাসাটি আবু নসর ওহিদ প্রস্তাবিত নিউ স্কিম মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করে।[৫] নিউ স্কিমে অংশগ্রহণ করা মাদ্রাসাসমূহ দ্রুত জনপ্রিয় হতে থাকে, এবং এসব প্রতিষ্ঠানে সাধারণ শিক্ষা গুরুত্ব পেতে শুরু করে, এসব মাদ্রাসার অভ্যন্তরে সাধারণ স্কুলের মত কার্যক্রম পরিচালনা হওয়া শুরু করেছিলো। এর ফলে ১৯৬০ সালের দিকে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক গঠিত ১৯৫৯ সালের শরীফ জাতীয় শিক্ষা কমিশন এই নিউ স্কিম মাদ্রাসাগুলোকে স্কুলে পরিণত করার পরামর্শ দেন। এর ফলে অন্যান্য বহু মাদ্রাসার সাথে এই মাদ্রাসাটিও স্কুল এবং কলেজে পরিণত হয়।
সর্বশেষ ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম মাদ্রাসার বিলুপ্তি ঘটিয়ে গভ. মহসিন কলেজ হাই স্কুল এবং গভ. মহসিন কলেজ স্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠান দুটি হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ও সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম পরিণত হয়।
মুসলমান ভর্তি প্রথা
চট্টগ্রাম মাদ্রাসা মুসলমান শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিধায় এটি হতে সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহও বহুকাল কেবল মুসলমান শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের সুযোগ দিয়েছে। ১৯৭৩ সালে ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজে এই প্রথা বিলুপ্ত করা হয় এবং সহশিক্ষাও শুরু হয়। ২০০৭ পর্যন্ত মহসিন হাইস্কুলে উক্ত প্রথা চালু ছিল। মুসলিম হাইস্কুলে ২০২৩ সালে এই প্রথা বিলুপ্ত করা হয়।
শিক্ষা ব্যবস্থা
এ্যাংলো-পারসিয়ান বিভাগ
১৮৫৪ সালে কলকাতা মাদ্রাসায় অ্যাংলো-পার্সিয়ান বিভাগ খোলা হলে এই বিভাগটি খুব দ্রুত জনপ্রিয় হতে থাকে। ১৮৭৫ সালে ঢাকা মোহসিনিয়া মাদ্রাসাতেও এই বিভাগ চালু করা হয়। এর আদলে রাজশাহী মাদ্রাসা ও এই মাদ্রাসাতেও চালু করা হয়।[৪] সেই সময় মাদ্রাসার অধ্যক্ষের আন্তরিকতা ও স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্যে এ্যাংলো-পার্সিয়ান বিভাগের যাত্রা শুরু হয়।
পরবর্তীতে এই বিভাগের কার্যক্রম স্বতন্ত্রভাবে চলতেই থাকে, আবার ১৯২৭ সালে "চট্টগ্রাম ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ" নামকরণ করে বিভাগের বিলুপ্তি ঘটানো হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে এই মাদ্রাসা থেকেই সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম উৎপত্তি হয়।
আরবি বিভাগ
১৯০৯ সালে এই বিভাগ থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ স্কুল তৈরি করে অন্যত্র স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই হিসেবে কোতোয়ালী এলাকায় পর্তুগিজদের পরিত্যক্ত দো’তলা ভবনে স্থানান্তরিত হয় এবং ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে স্কুলটি মুসলিম হাই স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ
১৯৬৭ সালে ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজের জায়গায় একটি সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্ত হয়।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থী
উল্লেখযোগ্য শিক্ষক
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র