গভ. মুসলিম হাই স্কুল, চট্টগ্রাম বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালী থানায় অবস্থিত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসিনের অর্থিক অবদানে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম গভর্ণমেন্ট মাদ্রাসার অ্যাংলো-পার্সিয়ান বিভাগ হিসেবে ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
বিংশশতাব্দীর প্রথম দশকে তৎকালীন দানবীর হাজি মুহাম্মাদ মহসীন তার সম্পদ থেকে মহসিন তহবিল গঠন করার উদ্যোগ নেয়। শুরুতে তিনি একটি দাতব্য তহবিল এবং পরবর্তীতে মহসিন তহবিল নামে একটি তহবিল গঠন করেন। এই তহবিলের অর্থ শিশুদের শিক্ষাখাতে ব্যয় করার নির্দেশ দেন তিনি। উপমহাদেশে মুসলিম শিক্ষার প্রসার ঘটায় চট্টগ্রাম মহসীনিয়া মাদ্রাসা নামে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। পরবর্তীতে মহসীনিয়া মাদ্রাসা পরিবর্তিত হয়ে মহসিন উচ্চ বিদ্যালয় এবং গভর্নমেন্ট মহসিন কলেজ নামে দুটি প্রতিষ্ঠানে পরণিত হয়। ইতোমধ্যে মুসলিম ছাত্রদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মুসলিম নেতাদের অধীনে এবং মহসিন মাদ্রাসার প্রধান তত্ত্বাবধানে ইঙ্গ-ফার্সি বিভাগ চালু করা হয়। ১৯০৯ সালে উক্ত মাদ্রাসা বিভাগ হতে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা হয়।[২]
শুরুর দিকে পাঠদান কাজ পরিচালনা করা হতো চট্টগ্রামের তৎকালীন স্থানীয় নিবন্ধন অফিস ভবনে। ১৯১৬ সালে বিদ্যালয়টি বর্তমান স্থানে স্থানান্তর করে গভর্নমেন্ট মুসলিম হাই ইংলিশ স্কুল নামকরণ করা হয়। ১৯৫৯ সালে উর্দুভাষী ছাত্রদের জন্যে উর্দু বিভাগ চালু করা হলেও বর্তমানে এর কার্যক্রম নেই।[২][৩]
মুসলিম হাই স্কুল চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানা এবং লালদিঘির মধ্যবর্তী এলাকায় আব্দুর রহমান সড়কে চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনে রাস্তার পূর্ব পাশে ৩.৭২ একর জমির উপরে অবস্থিত। তিনটি ভবন নিয়ে গঠিত বিদ্যালয়টিত বর্তমানে ভবন সংখ্যা দশ, যার মধ্যে রয়েছে ১টি প্রশাসনিক ভবন, ৩টি একাডেমিক ভবন, ১টি বিজ্ঞান ভবন, ১টি মিলনায়তন, প্রধান শিক্ষকের বাসভবন, ব্যয়ামাগার এবং মসজিদ। বিদ্যালয়ের সামনে একটি মাঠ থাকলেও মূল মাঠ বিদ্যালয় ভবন হতে খানিকটা দূরে যা ঐতিহাসিক লালদিঘির ময়দান হিসেবে পরিচিত।[৩] বিদ্যালয়ের পাঠাগারে ২০০০-এর অধিক বই রয়েছে।
বিদ্যালয়টিতে ৫ম-১০ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রাতঃ শাখা এবং দিবা শাখায় ২৬ জন করে সর্বমোট ৫২ জন শিক্ষক রয়েছে। স্কুলের আনুামনিক ছাত্র সংখ্যা ২৫০০ জন।
এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের সামগ্রিক দিক বিবেচনায় ২০১২ সালে বিদ্যালয়টি চটগ্রামের বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থান অর্জন করে।[৪] এবং ২০১৬ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত প্রতিবার চট্টগ্রাম বোর্ডে ২য় হয়ে আসছে।[৫] বিদ্যালয়টি একাাধিকবার জাতীয় পর্যায়ে হকি ও ফুটবলে বিজয়ী হয়।