ক্রিস্টোফার মিডলটন ওল্ড (ইংরেজি: Christopher Middleton Old; জন্ম: ২২ ডিসেম্বর, ১৯৪৮) ইয়র্কশায়ারের মিডলসবোরা এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ও সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।[১]ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে ১৯৭২ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছিলেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট মিডিয়াম বোলার হিসেবে অংশ নিয়েছেন ‘চিলি’ ডাকনামে পরিচিত ক্রিস ওল্ড। এছাড়াও বামহাতে নিচের সারিতে ব্যাটিংয়ে দক্ষতা দেখিয়েছেন তিনি।
প্রারম্ভিক জীবন
তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন। স্কুল ক্রিকেটে বামহাতি ব্যাটসম্যানরূপে মিডলসবোরা, ডারহাম ও ইংল্যান্ড স্কুলসের পক্ষে খেলেন। ১৯৬২ সালে বড় দুই ভাই - অ্যালান ও ম্যালকমের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ইয়র্কশায়ারে যোগ দেন। আগস্ট, ১৯৬৪ সালে গ্রিমসবিতে লিঙ্কনশায়ারের বিপক্ষে ১৫ বছর বয়সে ইয়র্কশায়ার দ্বিতীয় একাদশের সদস্যরূপে তার অভিষেক ঘটে। প্রথম ইনিংসে ২৬ ও দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৮* রান তোলেন তিনি। কিন্তু আবাসিক কোচ আর্থার মিচেলের অনুপ্রেরণায় নিজের বোলিং উত্তরণ ঘটান তিনি। প্রতিশ্রুতিশীল ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৯৬৬ সালে ১৭ বছর বয়সী ওল্ড হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ইয়র্কশায়ারের প্রথম দলের সদস্যরূপে মাঠে নামেন ও ৩ রান তোলেন এবং ৩ ওভারে ৮ রান দেন।
১৯৬৯ থেকে ১৯৮৩ মেয়াদে ইয়র্কশায়ারের প্রধান খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। তবে খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করেন ওয়ারউইকশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
টেস্টে তিনি ইংল্যান্ডের পক্ষে ১৪৩ উইকেট পেয়েছেন। ডিসেম্বর, ১৯৭২ সালে কলকাতায় স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তার অভিষেক ঘটে। ব্যাটিং প্রতিভা সুনীল গাভাস্কারকেডেরেক আন্ডারউডের কাছে কট দিয়ে তিনি তার প্রথম উইকেট লাভ করেছিলেন। খেলায় তিনি স্মরণীয় অল-রাউন্ড নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন ৩৩ ও অপরাজিত ১৭* এবং ২/৭২ ও ৪/৪৩। তাস্বত্ত্বেও তার দল ভারতের কাছে মাত্র ২৮ রানে পরাজিত হয়েছিল। জুন, ১৯৭৮ সালে এজবাস্টনে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম দিনে পাঁচ বলে ৪ উইকেট পান। তন্মধ্যে, তৃতীয় বলটি নো-বল ঘোষিত হয়। এরফলে ১৯২৯-৩০ মৌসুমে ক্রাইস্টচার্চের ল্যাঙ্কাস্টার পার্কে মরিস অলমের টেস্ট অভিষেকে গড়া রেকর্ডের সমকক্ষ হন। ১৯৭৪ সালে অজিত ওয়াড়েকরের নেতৃত্বে ভারত দল স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে ৩-০ সিরিজে পরাজিত হয়। দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ওল্ড ৫/২১ এবং আর্নল্ড ৪/১৯ নিলে ভারত দল তাদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বনিম্ন ৪২ রানে অল-আউট হয়েছিল।[২]১৯৮১ সালের অ্যাশেজ সিরিজের হেডিংলি টেস্টে প্রয়োজনীয় রান তুলে দলের জয়লাভে প্রভূতঃ সহায়তা করেন।
টনি গ্রেগের আমন্ত্রণে ও ক্যারি প্যাকারের পরিচালনাধীন বিদ্রোহী বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে শুরুতে প্রত্যাখ্যান করলেও পরবর্তীকালে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। এরফলে ১৯৮২ সালে তিন বছরের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাকে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করার ফলে টেস্ট জীবনের সমাপ্তি ঘটে।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর কয়েক বছর পর ২০০২ সালে দ্বিতীয় পত্নী লেতিতিয়াকে নিয়ে ‘ক্লিপার ফিশ রেস্টুরেন্ট’ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১২ সালে গণমাধ্যমে জানা যায়, ২০০৯ সালে গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটে পতিত হবার প্রেক্ষিতে রেস্টুরেন্টটি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিলেন।[৩] ফলমাউথে স্থানীয় ক্রিকেট ক্লাবকে কোচিং করাচ্ছেন তিনি।
তার ভাই অ্যালান ওল্ড ১৯৬৯ সালে একটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে খেলেন ও ইংল্যান্ডের রাগবি ইউনিয়নের পক্ষে আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও, তিনি ১৯৭০-এর দশকে মাইনর কাউন্টিজ ক্রিকেটে ডারহামের পক্ষে খেলেছেন।[১]