কেদার মহাদেব যাদব (মারাঠি: केदार जाधव; জন্ম: ২৬ মার্চ, ১৯৮৫) পুনেতে জন্মগ্রহণকারী ভারতের প্রথিতযশা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে মহারাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করছেন কেদার যাদব। মাঝারীসারির ডানহাতি ব্যাটসম্যান তিনি। এছাড়াও মাঝে-মধ্যে অফ ব্রেক বোলিং করে থাকেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ও কোচি তুস্কার্স কেরালার পক্ষে খেলার পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের পক্ষে খেলছেন। এছাড়াও, ভারত এ এবং পশ্চিম অঞ্চল ক্রিকেট দলের পক্ষে খেলছেন তিনি। সাবেক উইকেট-রক্ষক ও অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি’র পাশাপাশি তাকে সেরা বিকল্প খেলা সমাপণকারীরূপে আখ্যায়িত করা হতো।
প্রারম্ভিক জীবন
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান যাদবের জন্ম পুনেতে। তবে, তার পরিবার সোলাপুর জেলার মধা এলাকার যাদবাদি থেকে এসেছে।[১] চার সন্তানের সর্বকনিষ্ঠ তিনি। বড় তিন বোন যথাক্রমে ইংরেজি সাহিত্যে পিএইচডি, প্রকৌশলী ও ফাইন্যান্সে এমবিএ ডিগ্রিধারী। নবম শ্রেণীতে থাকাবস্থায় তার ক্রিকেটের প্রতি আসক্তি জন্মায়।[১][২] ২০০৩ সালে অবসরগ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত তার বাবা মাধব যাদব মহারাষ্ট্র রাষ্ট্রীয় বিদ্যুতায়ন বোর্ডে কেরাণী হিসেবে কাজ করতেন।[২][৩]
২০১২ সালে প্রথমবারের মতো ত্রি-শতক হাঁকান। রঞ্জী ট্রফি প্রতিযোগিতায় মহারাষ্ট্রের পক্ষে তার এই ৩২৭ রান দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল। পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট সংস্থা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত খেলায় প্রতিপক্ষ ছিল উত্তরপ্রদেশ। ২০১৩-১৪ মৌসুমে রঞ্জী ট্রফিতে ১২২৩ রান তুলে তিনি তার ব্যাটিং সক্ষমতা তুলে ধরেন। ছয়টি সেঞ্চুরি করেন তিনি ও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন এবং প্রতিযোগিতার ইতিহাসে চতুর্থ সেরা রান সংগ্রহকারীর মর্যাদা লাভ করেন। এরফলে, ১৯৯২-৯৩ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো দলকে চূড়ান্ত খেলায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
জুন, ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সফরে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও কোন খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটেনি তার। নভেম্বর, ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কা দল পাঁচ ওডিআইয়ে গড়া সিরিজ খেলার জন্য ভারত সফরে আসে। ১৬ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে সিরিজের ৫ম ওডিআইয়ে শ্রীলঙ্কার নিরোশন ডিকওয়েলা’র সাথে তারও ওডিআই অভিষেক ঘটে। রাঁচিতে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় বিরাট কোহলি’র অনবদ্য অপরাজিত ১৩৯* রানের কল্যাণে তার দল ৩ উইকেটে জয়লাভের পাশাপাশি ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে। তিনি করেছিলেন ২৪ বলে ২০ রান।
এরপর জুলাই, ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে ভারত দলের সদস্য মনোনীত হন ও ৩-ওডিআই নিয়ে গড়া সিরিজের সবগুলো খেলাতেই অংশগ্রহণ করেন। তন্মধ্যে, হারারেতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ওডিআইয়ে ৮৭ বলে অপরাজিত ১০৫ রান তুলে দলকে ৩-০ ব্যবধানে জয়লাভে সহায়তা করেন। এছাড়াও তার এই শতকটি ছিল প্রথম। ১৭ জুলাই, ২০১৫ তারিখে এ সফরেই টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অভিষিক্ত হন তিনি।[৭] জানুয়ারি, ২০১৭ সালে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৬ বলে ১২০ রান করেন। এ সময় তিনি বিরাট কোহলি’র সাথে ২০০ রানের জুটি গড়েন। পুনের এমসিএ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় দলকে জয় পেতে সহায়তা করেন।
৮ মে, ২০১৭ তারিখে বিরাট কোহলিকে অধিনায়কত্ব করে ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিতব্য আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতায় ১৫-সদস্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়। খেলায় তাকেও অন্যতম সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৮] মাঝে-মধ্যে স্পিন বোলিং করার জন্য যুবরাজ সিংকে সহায়তা করার লক্ষ্যেই তার এ অন্তর্ভূক্তি।[৯]