প্রারম্ভিক ইসলামিক দর্শন, বা ক্লাসিক্যাল ইসলামিক দর্শন, দ্বিতীয় শতাব্দী হিজরি (প্রারম্ভিক নবম শতাব্দী খ্রি.) শুরু হয় এবং ষষ্ঠ শতাব্দী হিজরি (দ্বাদশ শতাব্দী খ্রি.) অবধি বিস্তৃত ছিল। এই যুগ ইসলামিক স্বর্ণযুগ নামে পরিচিত। এই সময়ের দার্শনিক অর্জনগুলো আধুনিক দর্শন ও বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছিল। রেনেসাঁ-পরবর্তী ইউরোপের আবিষ্কার ও উন্নয়নে "মুসলিম নৌ, কৃষি, এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, সেইসাথে মুসলিম বিশ্বের মাধ্যমে পাওয়া পূর্ব এশীয় প্রযুক্তি, পশ্চিম ইউরোপে স্থানান্তরিত হয়ে বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এনেছিল।"
আল-কিন্দি এই যুগের সূচনা করেন এবং ১২ শতকের শেষে ইবনে রুশদ বা অ্যাভারোসের মৃত্যুর সাথে এর সমাপ্তি ঘটে। অ্যাভারোসের মৃত্যু পেরিপ্যাটেটিক আরবি দর্শনশাস্ত্রের সমাপ্তি চিহ্নিত করে। এরপর পশ্চিমা ইসলামিক অঞ্চল, বিশেষ করে ইসলামী স্পেন ও উত্তর আফ্রিকায় দার্শনিক কর্মকাণ্ড হ্রাস পায়। কিন্তু, পূর্ব দেশগুলোতে, বিশেষ করে পারস্য এবং ভারতে বিভিন্ন দার্শনিক মতবাদ বিকশিত হয়। যেমনঃ অ্যাভিসেনিজম, ইলুমিনেশনিস্ট দর্শন, রহস্যবাদী দর্শন, এবং ট্রান্সেন্ডেন্ট থিওসোফি।
বুদ্ধিবৃত্তিক উদ্ভাবন ও অর্জনঃ
আইনশাস্ত্রঃ ইজতিহাদের উন্নয়ন - স্বাধীন অনুসন্ধান এবং সাদৃশ্যের ভিত্তিতে যুক্তির মাধ্যমে আইনগত যুক্তি, ব্যাখ্যা এবং তর্কের পদ্ধতি।
বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক দর্শনঃ পরীক্ষণমূলক গবেষণা পদ্ধতির বিকাশ, পর্যবেক্ষণমূলক প্রমাণ এবং পুনরাবৃত্তির উপর জোর দেওয়া। জ্ঞানতত্ত্বে অভিজ্ঞতাবাদের প্রাথমিক রূপ প্রদান।
অ্যারিস্টটলীয় যুক্তিবিদ্যাঃ এরিস্টটলের যুক্তিবিদ্যার উপর ভাষ্য এবং নতুন ধারার অন্তর্ভুক্তি যেমন টেম্পোরাল মোডাল লজিক এবং ইন্ডাকটিভ লজিক।
গবেষণা অনুশীলন ও পদ্ধতিঃ চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রথম নথিভুক্ত পিয়ার রিভিউ প্রক্রিয়া। আইনশাস্ত্র এবং ধর্মতত্ত্বে ইসনাদ বা উৎসের উদ্ধৃতির কঠোর বিজ্ঞান।
মধ্যযুগে ইসলামী রচনাগুলো হিব্রু ও ল্যাটিনে অনূদিত হলে প্রাশ্চাত্য জগতে, বিশেষ করে ইহুদি দর্শন এবং মধ্যযুগের ল্যাটিন ভাষার দার্শনিক শাখায় তা গভীর প্রভাব ফেলে। আল-ফারাবি, অ্যাভিসেনা, এবং অ্যাভারোসের রচনাগুলি প্রাকৃতিক দর্শন, মনোবিজ্ঞান, অধিবিদ্যা, যুক্তিবিদ্যা এবং নীতিশাস্ত্রের মতো ক্ষেত্রগুলিকে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করে, টমাস অ্যাকুইনাস, রজার বেকন, মাইমোনাইডিস, উইলিয়াম অফ অকহ্যাম এবং ডানস স্কোটাসের মতো চিন্তাবিদরা এদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
Glick, Thomas F.; Livesey, Steven John; Wallis, Faith (২০০৫), Medieval Science, Technology, and Medicine: An Encyclopedia, Routledge, আইএসবিএন0-415-96930-1, ওসিএলসি218847614উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Morelon, Régis; Rashed, Roshdi (১৯৯৬)। Ency Hist Arab Science V 3। London: Routledge। আইএসবিএন9780203086537।
Razavi, Mehdi Amin (১৯৯৭), Suhrawardi and the School of Illumination, Routledge, আইএসবিএন0-7007-0412-4উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)