কিয়াস (আরবি: قياس ক়ি~য়াস্) হল ইসলামি আইনশাস্ত্রের চতুর্থ উৎস। কুরআন, সুন্নাহ ও ইজমার সম্বনয়ে এর অবস্থান। সূরা আল-হাক্কাহ এর ১ নাম্বার আয়াত বর্তমানে, ২ এবং ৩ নাম্বার আয়াত এবং সূরা আন-নিসা এর ৫৯ নাম্বার আয়াত কেন্দ্রীক বিবেচনায়,
নির্দিষ্ট বাস্তবতা ভিত্তিক, নির্দিষ্ট ভিন্ন ভিন্ন বিষয়, নির্দিষ্ট বাস্তবতা এর সাথে,
নির্দিষ্ট সামঞ্জস্যতা বিধান করাকে কিয়াস বলে।[১][২]
ইসলামী বিধিবিধান নির্ণয়ের জন্য প্রথমত কুরআন ও সহীহ হাদীসের উপর নির্ভর করা হয়। সহীহ হাদীস হল নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের থেকে বর্ণিত হাদীস। কুরআন, হাদীস, হাদীসের সনদ ও পরিভাষা, তাফসীর, উসুলুল ফিকহ, আরবি ব্যাকরণ ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিরা ইসলামের বিধিবিধান নির্ণয় করেন। কখনও কখনও এমন বিষয়ের বিধান নির্ণয় করার প্রয়োজন হয় যে বিষয়ে কুরআন ও সহীহ হাদীসে সরাসরি কোনো বক্তব্য জানা থাকে না।
কিয়াসের মাধ্যমে নির্ণীত বিধান মানা
ইসলামে সাধারণ মানুষের কিয়াস অপেক্ষা ইসলামের গভীর জ্ঞানের অধিকারী ইমামদের কিয়াসকে প্রাধান্য দেয়া হয়। তবে এমন কোনো ব্যক্তি নেই যার কুরআন ও হাদীসের সবকিছু জানা রয়েছে। তাই যখন কেউ অনুমানের উপর ভিত্তি করে বিধান নির্ণয় করেন তিনি সেটাই অনুসরণ করেন যতক্ষণ না তিনি কুরআন ও সহীহ হাদীসে সরাসরি কোনো বক্তব্য পান। এছাড়া ইজমাকেও কিয়াসের উপর প্রাধান্য দেয়া হয়। ইজমা হল এমন বিধান যে বিধানের ব্যাপারে ইসলামের গভীর জ্ঞানের অধিকারী ইমামরা একমত হয়েছেন। তাছাড়া কুরআন হাদীস থেকে বিধান বের করার দ্বায়িত্ব মুলত মুজতাহিদ আলেমদের অর্থাৎ কুরআন, হাদীস, হাদীসের সনদ ও পরিভাষা, তাফসীর, উসুলুল ফিকহ, আরবি ব্যাকরণ ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞানী ব্যক্তিদের। যেকেউ কুরআন হাদীস থেকে বিধান বের করতে চাইলে এসব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করবে।
ইসলামী বিশ্বাসের ব্যাপারে কিয়াস
কিয়াস শুধু ইসলামী আইন বা বিধানের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য। কিন্তু ইসলামী বিশ্বাস বা আকীদার ক্ষেত্রে কিয়াস গ্রহণযোগ্য নয়।
উল্লেখ্য,ফারায়েজের ক্ষেত্রেও কিয়াসভিত্তিক মাসয়ালা উদ্ভাবন করা গ্রহণযোগ্য না।
ইসলামি আইনের উৎস হিসাবে গ্রহণযোগ্যতা
অধিকাংশ সুন্নি ইসলামি পন্ডিতদের মতে কিয়াস ইসলামি আইনের উৎস হিসাবে গ্রহণযোগ্য।[৩] তবে দাউদ যাহেরিসহ কিছু পন্ডিতের মতে কিয়াস ইসলামি আইনের উৎস হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয়।[৪][৫]