আর্থার উইলিয়াম কার (ইংরেজি: Arthur Carr; জন্ম: ২১ মে, ১৮৯৩ - মৃত্যু: ৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৩) সারের মিকলহম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯২২ থেকে ১৯২৯ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন আর্থার কার। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন তিনি।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ ব্যাটসম্যান হিসেবে আবির্ভাব ঘটে আর্থার কারের। ১৯১০ সালে বিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থাতেই নটিংহ্যামশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম খেলতে নামেন। এরপর থেকে বেশ ভালো খেলতে থাকেন। ফলশ্রুতিতে ১৯১৯ সালে নটিংহ্যামশায়ারের অধিনায়কত্ব লাভ করেন।
১৯৩৪ সালে নটিংহ্যামশায়ারের অধিনায়কত্ব করা থেকে তাকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়। এরপর আর কোন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতে আর্থার কারকে দেখা যায়নি।
আর্থার কার তার সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১১ টেস্টে অংশ নিয়ে ১৯.৭৫ গড়ে ২৩৭ রান তুলেছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৪৬৮ খেলায় ৩১.৫৬ গড়ে ২১০৫১ রান তুলেন। তন্মধ্যে ৪৫টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। এছাড়াও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মাঝে-মধ্যে মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন। ৩৭.০৯ গড়ে ৩১ উইকেট পেয়েছেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
১৯২২-২৩ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য আর্থার কারকে ইংল্যান্ড দলের সদস্য মনোনীত করা হয়। এ সফরেই ২৩ ডিসেম্বর, ১৯২২ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে।
১৯২৬ সালে অ্যাশেজ সিরিজ খেলার জন্য ইংল্যান্ডে আসে অস্ট্রেলিয়া দল। এ সিরিজে আর্থার কারকে ইংল্যান্ডের দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। লিডসে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে জর্জ ম্যাকাউলিকে মনোনীত করা হয়। ইংরেজ অধিনায়ক আর্থার কার বোধহয় ধারণা করেছিলেন যে, পিচ হয়তোবা স্পিনারদের সহায়তা করবে। অস্ট্রেলীয়রা জর্জ ম্যাকাউলি সম্পর্কে সচেতন ছিল ও তাদের ব্যাটিংয়ে প্রভাব বিস্তার করার কথা ভাবে। টসে জয়লাভের পরও অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিং করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এরপর খেলার প্রথম ওভারেই চার্লি ম্যাককার্টনির ক্যাচ স্লিপে ফেলে দেন। ম্যাককার্টনি মধ্যাহ্নভোজনের পূর্বেই সেঞ্চুরি করেন। অস্ট্রেলিয়া দল ৪৯৪ রানে ইনিংস শেষ করে।[১][২][৩] দশ নম্বরে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন জর্জ ম্যাকাউলি। ইংল্যান্ডের সংগ্রহ তখন ১৮২/৮ ও পরাজয়ের সমূহ আশঙ্কায় ধুকছিল। আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেন ও দশটি চারের মারে ৭৬ রান তুলেন। এ পর্যায়ে জর্জ গিয়ারির সাথে ১০৮ রান তুলে ড্র করান।[১][৪]
সিরিজের চতুর্থ টেস্টে টনসিলে আক্রান্ত হন। পঞ্চম টেস্টে আরোগ্য লাভ করলেও পার্সি চ্যাপম্যানকে অধিনায়ক হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। তিনি এ সিদ্ধান্তে বেশ মনঃক্ষুণ্ণ হন। তবে, ১৯২৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আরও দুই টেস্টে দলকে শেষবারের মতো নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই নটিংহ্যামশায়ারের অধিনায়কত্ব করে অধিকাংশ সময় ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় প্রভাববিস্তারকারী দলে পরিণত করতে সচেষ্ট ছিলেন।
মূল্যায়ন
১৯৩০ ও পরবর্তী বছরগুলোয় ভবিষ্যতের ইংল্যান্ড দলনেতা ডগলাস জারদিন ও নর্দাম্পটনশায়ারের ফাস্ট-বোলারদ্বয় হ্যারল্ড লারউড ও বিল ভোসকে নিয়ে বডিলাইন বোলিং কৌশল বাস্তবায়নে তৎপর হন। ১৯২৩ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন তিনি।[৫]
৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৩ তারিখে ৭০ বছর বয়সে ইয়র্কশায়ারের পশ্চিম উইটন এলাকায় আর্থার কারের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
↑ কখ"England v Australia 1926"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। ১৯২৭। সংগ্রহের তারিখ ১০ মার্চ ২০১০।
↑Cardus, Neville (১৯৫৯)। "Charles Macartney and George Gunn"। Wisden Cricketers' Almanack। London: John Wisden & Co। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১০।
Wynne-Thomas, Peter (২০১৭)। Arthur Carr: The Rise and Fall of Nottinghamshire's Bodyline Captain। Sheffield: Chequered Flag Publishing। আইএসবিএন978-0-9932152-9-2।
বহিঃসংযোগ
উইকিমিডিয়া কমন্সে আর্থার কার সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে।