আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (ইংরেজি: International Court of Justice; ফরাসি: Cour internationale de Justice; মূলত আন্তর্জাতিক আদালত নামে পরিচিত। এটির সদর দপ্তর হেগ, নেদারল্যান্ডে। এটির প্রধান কাজ স্বাধীন রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে আইনি বিরোধ নিষ্পত্তি করা এবং বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে আইন বিষয়ে পরামর্শ মতামত দেয়া। এটিকে সংক্ষেপে আইসিজে(ICJ )বলা হয়।
জাতিসংঘদ্বারা ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। আদালত ১৯৪৬ সালে কার্যক্রম শুরু করে, আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচারের স্থায়ী আদালতের উত্তরসুরি হিসাবে। পূর্বসূরির মতই এটিও সাংবিধানিক নথিপত্র দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত।[২] আদালত বৈচিত্র্যময় বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত করে থাকে। আজ পর্যন্ত, আন্তর্জাতিক আদালতে অল্প কিছু মামলা পরিচালিত হয়েছে। যাই হোক, ১৯৮০ সালের পর থেকে দৃশ্যত আদালতের ব্যবহার বেড়েছে বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে।
আন্তর্জাতিক আদালত ৯ বছর মেয়াদি ১৫ জন বিচারক দ্বারা পরিচালিত। বিচারকগন স্থায়ী সালিস আদালতের মনোনীত তালিকা থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদ কর্তৃক নির্বাচিত হয়ে থাকে। এই নির্বাচন প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক আদালতের অনুচ্ছেদ ৪-১৯ –এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। আদালতের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য প্রতি ৩ বছর পর পর ৫ জন বিচারক নির্বাচন করা হয়। কোন বিচারক মারা গেলে, সাধারণত বাকি সময়ের জন্য বিশেষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিচারক নির্বাচন করা হয়। একই দেশ থেকে দুই জন বিচারক থাকে না। অনুচ্ছেদ ৯ অনুসারে আদালতের সদস্যপদ ‘মৌলিক সমাজ ব্যবস্থা ও শীর্ষস্থানীয় আইন ব্যবস্থা’ কে প্রতিনিধিত্ব করে। মূলত, সকল ধরনের বিদ্যমান আইন। জন্মলগ্ন থেকে, নিরাপত্তা পরিষদের ৫ সদস্যের (ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র) মধ্যে ৮ জনের বিচারক সবসময় এই আদালতে থাকে। শুধুমাত্র চীন কোনো নাম না দেওয়ার কারণে, এই আদালতে কোন ) বিচারক (১৯৬৭ থেকে ১৯৮৫ ছিল না।
অনুচ্ছেদ ৬ অনুসারে সকল বিচারক দেশ - জাতি নির্বিশেষে উন্নত নৈতিক চরিত্রের অধিকারি নির্বাচিত হবেন যারা নিজ দেশে সরবোচ্চ বিচার কার্যালয়ে উপযুক্ত এবং আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা রাখেন। বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতা অনুচ্ছেদ ১৬-১৮ দ্বারা নিশ্চিত করা হয় এবং আদালতের বিচারকেরা অন্য কোন পদে বা পরামর্শক হিসাবে কাজ করতে পারবেন না। সাধারণত এই আদালতের বিচারকেরা নিজস্ব নৈতিকতা দিয়ে এই আইন মেনে চলেন। কোন বিচারককে বরখাস্ত করা যাবে যদি বাকি বিচারকেরা সর্বসম্মত হন।[৩] বিচারকেরা সম্মিলিত বাঁ পৃথক মতামত দিতে পারেন। সিদ্ধান্ত এবং পরামর্শ মতামত সংখ্যাগরিষ্ঠের ভিত্তিতে হয়। সমসংখ্যা মতামতের বিষয়ে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।[৪] বিচারকেরা কোন বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করতে পারেন।
আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোন বিবদমান মামলার জন্য অনানুষ্ঠানিক আদালত বসতে পারে। এই পদ্ধতিতে কোন বিবদমান পক্ষ অন্য কোন দেশের অতিরিক্ত বিচারপতির সহায়তা নিতে পারে শুধু মাত্র নিদিষ্ট মামলার জন্য। এইভাবে কোন মামলায় ১৭ জন পর্যন্ত বিচারক বসা সম্ভব। এটি দেশীয় বিচারব্যবস্থায় অদ্ভুত হলেও বিভিন্ন দেশকে এই আদালতে মামলা করতে উৎসাহিত করাই উদ্দেশ্য।
সাধারণত আদালত সব বিচারক নিয়ে বসে, কিন্তু গত ১৫ বছরে কখনও সবাই এক সাথে বসেনি। সংবিধির ২৬-২৯ অনুচ্ছেদ কম বিচারপতির সমন্বয়ে আদালতের অনুমতি দেয় যাতে ৩ বা ৫ জন বিচারপতি শুনানিতে বসে। অনুচ্ছেদ ২৬ অনুযায়ী দুই ধরনের আদালত বসতে পারে – প্রথমত, বিশেষ ধরনের মামলার আদালত, দ্বিতীয়ত, বিশেষ মামলার শুনানির জন্য অনানুষ্ঠানিক আদালত। আন্তর্জাতিক আদালতের সংবিধানের ২৬(১) অনুসারে ১৯৯৩ সালে বিশেষ আদালত স্থাপিত হয়েছিল পরিবেশ বিষয়ে (যদিও এই আদালত কখনও ব্যবহার করা হয়নি)।
২৭ এপ্রিল, ২০১২ অনুযায়ী বিচারকের তালিকা নিম্নরূপ ঃ
আন্তর্জাতিক আদালত তার রায়দান, উক্ত পদ্ধতি এবং কর্তৃত্বের বিষয়ে সমালোচিত হয়েছে। জাতিসংঘের সমালোচনার মতো, আদালতের অনেক সমালোচক এবং বিরোধীরা বিচারকদের গঠন বা তাদের রায়ের সাথে নির্দিষ্ট সমস্যাগুলির পরিবর্তে সদস্য রাষ্ট্রগুলির দ্বারা তার সনদের মাধ্যমে সংস্থাকে অর্পিত সাধারণ কর্তৃত্বের কথা উল্লেখ করেন। প্রধান সমালোচনাগুলির মধ্যে নিম্নলিখিতগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:[১][২][৩]
ICJ judges ought to be impartial and not act as extensions of their countries. In the past though, judges have voted in line with their countries' politics. In 2022, when the bench voted in favour of the decision to order Russia out of Ukraine, judges from Russia and China were the only two who voted against the decision.