লুটন হলো ইংল্যান্ডের বেডফোর্ডশায়ারে অবস্থিত একটি শহর এবং একক কর্তৃপক্ষ। [৪] ২০২১ সালের আদমশুমারীতে, ডানস্টেবল এবং হাউটন রেজিসের সংলগ্ন শহরগুলি সহ লুটন/ডানস্টেবল শহরাঞ্চলের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২৮৬,৪৫০ জন। [৫]
এ শহরটি লন্ডন থেকে ৩০ মেইল উত্তর-উত্তর-পশ্চিমে লিয়া নদীর তীরে অবস্থিত। [৬] শহরটি ষষ্ঠ শতাব্দীতে নদীর উপর একটি প্রাচীন বসতি হিসাবে গড়ে উঠেছিল, এবং সে বসতি থেকে লুটন নামটি এসেছে। [৭] লুটনকে ডোমেসডে বুকে লোইটোন এবং লিন্টোন হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। [৮] এ শহরে বেডফোর্ডশায়ারের বৃহত্তম গির্জাগুলোর মধ্যে একটি অবস্থিত। সে গির্জাটির নাম সেন্ট মেরি চার্চ, এটি ১২ শতকে নির্মিত হয়েছিল। [৯] ওয়ারডাউন পার্ক [১০] এবং স্টকউড পার্কে লুটনের ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় এমন স্থানীয় কিছু জাদুঘর রয়েছে। [১১]
লুটন, বহু বছর ধরে, টুপি তৈরির জন্য ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিল এবং এখানে একটি বড় ভক্সহল মোটরস কারখানাও ছিল। কারখানাটিতে গাড়ি উৎপাদন শুরু হয় ১৯০৫ সালে, কিন্তু ২০০২ সালে কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। [১২] তবে বর্তমানে কারখানাটিতে বাণিজ্যিক যানবাহনের উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। ভক্সহল মোটরসের প্রধান কার্যালয় বহু বছর ধরে লুটন শহরে ছিল, কিন্তু ২০১৯ সালে সেটি লুটনের বরোর উত্তর সীমান্তে বেডফোর্ডশায়ারের চাল্টন গ্রামে স্থানান্তরিত হয়। [১৩]
শহরটির পরিবহনের প্রধান কেন্দ্র হলো লুটন বিমানবন্দর। এটি ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বর্তমানে এটি ইংল্যান্ডের প্রধান বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটি। লুটন শহরে তিনটি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে।
লন্ডন লুটন বিমানবন্দর। এ বিমানবন্দরটি ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। [১৪] শহরে তিনটি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অফ বেডফোর্ডশায়ার ১৯৯৩ সালে লুটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একীভূত হয়ে তৈরি করা হয়েছিল;[১৫] এ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ক্যাম্পাস লুটনে অবস্থিত। [১৬]
লুটন ইন্টারন্যাশনাল কার্নিভাল হলো ইউরোপের বৃহত্তম একদিনের কার্নিভাল। এটি প্রতি বছর মে মাসের শেষ সোমবারের আগের দিন অনুষ্ঠিত হয়। [১৭] [১৮] সেন্ট প্যাট্রিক দিবসের নিকটবর্তী সপ্তাহান্তে এখানে সেন্ট প্যাট্রিকের উৎসব অনুষ্ঠিত হয় [১৯] লুটনে অবস্থানরত একটি বড় আইরিশ সম্প্রদায় এটি আয়োজন করে থাকে। এই শহরে একটি বৃহৎ পাকিস্তানি সম্প্রদায়ও রয়েছে যারা আইরিশদের সাথে ভক্সহল কার প্ল্যান্টে কর্মসংস্থানের জন্য এখানে এসেছিল। [২০][২১]
লুটনের প্রাচীনতম নথিভুক্ত নাম হল লাইগিয়া-বাইরিগ। লাইগিয়ার অর্থ 'একটি খোলা মাঠের নদী' এবং বাইরিগ মানে 'একটি শহর'। [২২] রাজা প্রথম চার্লসের সনদে ব্যবহৃত Lvton শব্দটি থেকে লুটন নামের উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়। [২২]
লুটন ৬ শতকের কোনো এক সময়ে অ্যাংলো-স্যাক্সনদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। [২৩]
ডোমেসডে বুকে লুটনকে লোইটোন এবং লিন্টোন হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। [৮] সেই সময়ে স্থানীয় অর্থনীতিতে কৃষির প্রাধান্য ছিল এবং শহরের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০। [২৪]
১১২১ সালে রবার্ট (গ্লুসেস্টারের প্রথম আর্ল) শহরের কেন্দ্রে সেন্ট মেরিজ গির্জার কাজ শুরু করেন। কাজটি ১১৩৭ সালের মধ্যে শেষ হয়েছিল। [২৫] এখানে একটি মট-এন্ড-বেইলি দুর্গ ছিল যা আধুনিক ক্যাসেল অনুরূপ ছিল। এটি ১১৩৯ সালে নির্মিত হয়েছিল কিন্তু ১১৫৪ সালে সেটি ভেঙে ফেলা হয় [২৬]
লিটনে বিখ্যাত টুপি তৈরির শিল্প ১৭ শতকের দিকে শুরু হয়েছিল। এটি পরবর্তীতে এ শহরের প্রতীক হয়ে উঠে। [২৭][২৮]
শহরটির জনসংখ্যা খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। ১৮০১ সালে লুটনের জনসংখ্যা ছিল ৩,০৯৫,[২৯] কিন্তু ১৮৫০ সাল নাগাদ এটি ১০,০০০-এর বেশি এবং ১৯০১ সালের মধ্যে এটি প্রায় ৩৯,০০০-এ পৌঁছায়।
লুটনের টুপি বাণিজ্য ১৯৩০-এর দশকে শীর্ষে পৌঁছেছিল,[৩০] কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এটি মারাত্মকভাবে হ্রাস পায় এবং অন্যান্য শিল্প দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।
১৯০৭ সালে, ভক্সহল মোটরস লুটনে যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম গাড়ির কারখানা খুলেছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, এখানে যুদ্ধ প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে চার্চিল ট্যাঙ্ক সমূহ তৈরি করা হয়েছিল। [৩১] লুকিয়ে কাজ করা সত্ত্বেও, কারখানাটি জার্মান বাহিনী দ্বারা বিমান হামলার শিকার হয়েছিল। সে হামলায় ১০৭ জন মারা যায় [৩২] এবং শহরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় (১,৫০০টিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়)।
১৯১৯ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে শান্তি দিবস উদযাপনের সময় শহরের মূল টাউন হলটি ধ্বংস হয়ে যায়। মূলত অনেক প্রাক্তন সৈনিক ও স্থানীয় লোকেরা বেকারত্বের কারণে অসন্তুষ্ট ছিল। তারা যুদ্ধের সমাপ্তি উদযাপনের জন্য সে শহরের টাউন হল ব্যবহার করতে বাধা দিচ্ছিল। যখন অনুষ্ঠানটি শুরু হয়,তখন তারা টাউন হলে আগুন ধরিয়ে দেয় ও ভাঙচুর চালায়। তবে টাউন হলটি ১৯৩৬-এ প্রতিস্থাপিত হয়।
লুটন বরো কর্পোরেশন বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে রেলওয়ের পাশে অবস্থিত লুটন বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছিল। ১৯৪৮ সালে বিদ্যুৎ শিল্পের জাতীয়করণের পর এর মালিকানা ব্রিটিশ বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের কাছে এবং পরে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন বোর্ডের কাছে চলে যায়। জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সংযোগের কারণে ২৩ মেগাওয়াট কয়লা এবং পরবর্তীতে তেল-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অকেজো হয়ে যায়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি ১৯৬৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়; উৎপাদনের শেষ বছরে এটি জাতীয় গ্রিডে ৩,১৯২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। [৩৩]
লুটন বিমানবন্দর ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, এটি কাউন্সিল কর্তৃক মালিকানা এবং পরিচালিত হয়েছিল। এটি এখন ইংল্যান্ডের বৃহত্তম বিমানবন্দর সমূহের মধ্যে একটি।
বিশ্বযুদ্ধ-পূর্ব বছরগুলি লুটনের জন্য একটি অর্থনৈতিক উত্থানের সময় ছিল। কারণ তখন নতুন শিল্প বেড়ে ওঠে এবং সমৃদ্ধ হয়। ১৯২০ এবং ১৯৩০-এর দশকে লুটনে নতুন প্রাইভেট এবং পাবলিক আবাসন ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল, ১৯২৮ এবং ১৯৩৩ সালের মধ্যে লুটনের কাছাকাছি এলাকায় অবস্থানরত গ্রাম লিগ্রাভ, লিম্বুরি এবং স্টপসলিগুলো লুটনের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে শুরু করেছিল [৩৪]
২০০২ সালে ভক্সহল ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা বন্ধ হওয়ার ফলে লুটনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যার ফলে বেকারত্ব এবং বঞ্চনা বেড়ে যায়। [৩৫]
শহরটি বেডফোর্ডশায়ারের আনুষ্ঠানিক দেশের মধ্যে অবস্থিত। কিন্তু, ১৯৯৭ সাল থেকে, লুটন একটি প্রশাসনিকভাবে স্বাধীন একক কর্তৃপক্ষ হয়ে উঠে, যা লুটন বরো কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত হয়। বরো কাউন্সিলে ৪৮ জন কাউন্সিলর রয়েছেন, যারা ১৯ টি ওয়ার্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন।
Long before it became associated with motor cars, Luton was well established as an international centre of hat making. More specifically, Luton was the main centre of ladies’ hat production in the UK for over 200 years ... This success was founded on the earlier regional industry of straw plaiting, an occupation that was well established by the late 17th century