লক্ষ্য প্রস্তাব ১৯৪৯ সালের ১২ মার্চ পাকিস্তানেরগণপরিষদে গৃহীত হয়। প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান সেই বছরের ৭ মার্চ এটি পরিষদে উপস্থাপন করেছিলেন। এতে ঘোষণা করা হয় যে পাকিস্তানের ভবিষ্যত সংবিধান পুরোপুরি ইউরোপীয় আদলে প্রণীত না হয়ে ইসলামের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে প্রণীত হবে। পাকিস্তানের সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই প্রস্তাব সংবিধানের অংশ।
লক্ষ্য প্রস্তাব
লক্ষ্য প্রস্তাবে নিম্নোক্ত ধারাসমূহ ছিল:
সমগ্র জগতের উপর শুধুমাত্র সর্বশক্তিমান মহান রাব্বুল আলামীন বা মহান আল্লাহর সার্বভৌমত্ব রয়েছে এবং জনগণের মাধ্যমে পাকিস্তান রাষ্ট্রকে যে কর্তৃত্ব তিনি তার নির্ধারিত সীমা বা এখতিয়ারে মধ্যে ব্যবহারের জন্য প্রদান করেছেন তা একটি মহাপবিত্র আমানত।[১]
পাকিস্তানের জনগণের জনপ্রতিনিধিত্বকারী এই সাংবিধানিক বোর্ড ইসলামিক সার্বভৌম ও স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্য একটি সংবিধান প্রণয়নের ব্যাপারে দায়িত্বশীল।
জনগণের নির্বাচিত ও মনোনীত জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা রাষ্ট্র তার ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব প্রয়োগ করবে।
ইসলামে নির্দেশিত গণতন্ত্র/(শায়েখতন্ত্র), স্বাধীনতা, সাম্য, সহিষ্ণুতা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নীতি সম্পূর্ণরূপে পালন করতে হবে।
পবিত্র আল-কুরআন ও সুন্নাহতে বিবৃত ইসলামের শিক্ষা ও প্রয়োজনানুযায়ীই মুসলিমরা ব্যক্তি ও সামষ্টিক ক্ষেত্রে জীবন পরিচালনা করতে সক্ষম হবে।
সংখ্যালঘিষ্ঠ যাতে স্বাধীনভাবে অগ্রসর হতে এবং নিজেদের ধর্ম ও সংস্কৃতি অনুসরণ করতে পারে তার জন্য অধিকতর বিধি-বিধান প্রণয়ন করতে হবে।
পাকিস্তান একটি ফেডারেশন হবে এবং এর সাংবিধানিক ইউনিটগুলি হবে সম্পূর্ণরূপে স্বায়ত্তশাসিত ও ইসলামিক সার্বভৌমত্ব।
মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। এর মধ্যে রয়েছে মর্যাদা, সুযোগ, আইন, সামাজিক, রাজকীয় মর্যাদা-অভ্যর্থনা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে সমতা এবং আইন ও নৈতিকতা অনুযায়ী চিন্তা, মতপ্রকাশ, বিশ্বাস, উপাসনা ও সংগঠনের স্বাধীনতা।
সংখ্যালঘিষ্ঠ এবং অনগ্রসর ও অন্ত্যজ শ্রেণীর অধিকার সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত বিধি-বিধান প্রণয়ন করতে হবে।
বিচারবিভাগের স্বাধীনতা সম্পূর্ণরূপে রাষ্ট্রীয় ও রাজকীয়ভাবে সুরক্ষিত করতে হবে।
ফেডারেশনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, এর স্বাধীনতা এবং স্থল, জল ও আকাশে ইসলামিক সার্বভৌম অধিকারসহ সকল অধিকার রাজকীয়ভাবে সুরক্ষিত করতে হবে।
পৃথিবীর জাতিসমূহের মধ্যে পাকিস্তানের জনগণ উন্নতি এবং তাদের ন্যায়সঙ্গত ও সম্মানসূচক স্থান অর্জন করুক এবং আন্তর্জাতিক শান্তি ও উন্নতি এবং মানবতার শান্তিতে তাদের পূর্ণ অবদান রাখুক।