মৃন্ময়ী মাতা, বিষ্ণুপুর

श्रीश्री मृण्मयी देवीमाता मंदिर, (बिष्णुपुर)
শ্রীশ্রী মৃঁন্ময়ী দেবীমাতা ঠাকুরাণী
শ্রীশ্রী৺মৃন্ময়ী দেবীমাতা ঠাকুবাণী
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাপ্রাচীন মল্লভূম জনপদ (বাঁকুড়া)
উৎসবশারদীয়া দুর্গোৎসব
বৈশিষ্ট্য
  • মন্দির বৃক্ষ: সুপ্রাচীন অশ্বত্থ ও বট বৃক্ষ
অবস্থান
অবস্থানপ্রাচীন মল্লভূমের রাজধানী বিষ্ণুপুর
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
দেশভারত
স্থাপত্য
স্থাপত্য শৈলীবিষ্ণুপুর রীতি দূর্গা প্রতিমা
বঙ্গীয় মৃৎশিল্প রীতি
সৃষ্টিকারীমল্লরাজ শ্রীমন্ত জগৎমল্ল দেব
প্রতিষ্ঠার তারিখ৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ

শ্রীশ্রী মৃঁন্ময়ী দেবী মাতা ঠাকুরাণী বঙ্গের প্রাচীন মল্লভূম জনপদের মল্লরাজ বংশের কুলদেবী ও মল্লভূম জনপদ ও রাজধানী বন-বিষ্ণুপুরের (অঞ্চল) ক্ষেত্র অধিষ্ঠাত্রী দেবী। দেবীর বিগ্রহ স্বরূপ সিংহবাহিনী দশভুজা রণচণ্ডিকা মহিষাসুরমর্দিনী। মল্লভূমের রাজধানী বিষ্ণুপুর শহরে শ্রীশ্রী৺মৃন্ময়ী মাতার গঙ্গা মৃত্তিকা নির্মিত শ্রীবিগ্রহ। বিষ্ণুপুর প্রতিষ্ঠাতা মল্লরাজ শ্রীমন্ত জগৎমল্ল দেব দ্বারা ৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে (৩০৩ মল্লাব্দ বা বঙ্গাব্দ ৪০৪ সাল) করা হয়েছিল।

প্রতিষ্ঠার ইতিহাস

কথিত আছে আনুমানিক ৬০০ খ্রিষ্টাব্দ নাগত মল্লরা বাঁকুড়ার জয়পুরের নিকট রাজধানী স্থাপন করেন। আজকের বিষ্ণুপুর শহর তখন পুরোটাই গভীর জঙ্গলে আবৃত। তখন ঐ অঞ্চলের নাম ছিল "বন বিষ্ণুপুর"।[] রাজা জগৎ মল্ল গভীর জঙ্গলে শিকারে বেরিয়ে দেখতে পান এক শিকারী শকুন এক বকপাখির উপর সবলে ঝাঁপিয়ে পড়েও বকের নাগাল পাচ্ছে না, কোনো এক অলৌকিক ক্ষমতা বলে বকটি বারংবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে। রাজা ওই অঞ্চলের অলৌকিক মাহাত্ম্য অনুভব করেন। তত্ক্ষনাত তিনি ওই স্থানে উপস্থিত হয়ে মাটি সরাতেই এক দেবী মূর্তির মুখবয়ব খুঁজে পান। ওই দেবী মূর্তির মুখবয়ব ছাড়া অন্য কোনো অংশ ছিল না। রাজা দেবী মূর্তি সাথে নিয়ে রাজধানী ফিরে আসেন। কথিত আছে, রাজা এরপর মহিষাসুরমর্দিনী দেবীর স্বপ্নাদেশ পান এবং অতি দ্রুত রাজধানী স্থানানতরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি ওই অলৌকিক স্থানেই বর্তমান মৃন্ময়ী মাতার মন্দির স্থাপন করেন। এবং তার নিকট নতুন রাজধানী স্থাপিত হয়। সেটাই আজকের বিষ্ণুপুর নগরী।

দেবীমূর্তির বর্ণনা

দেবী প্রতিমার উপরিভাগে ধ্যানস্থ মহাদেব ও তাহার অনুচর
কার্তিকেয়
গণেশ
লক্ষ্মী দেবী
মৃন্ময়ী দেবী প্রতিমার বিভিন্ন আঙ্গিক

বঙ্গদেশে মূলত দুটি প্রথক রীতিতে দুর্গা প্রতিমা গড়ার প্রচলন রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো বিষ্ণুপুর রীতির প্রতিমা। আসলে বিষ্ণুপুর রীতি হলো আজ থেকে প্রায় হাজার বছর পূর্বে যে রীতিতে ও স্থাপত্য শৈলীতে মৃন্ময়ী মাতা প্রতিমা গড়া হয়েছিল, সেই প্রাচীন রীতিকে বোঝায়। মল্লরাজ শ্রীমন্ত জগৎমল্ল দেব ৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে সম্পূর্ণ গঙ্গা মৃত্তিকা দ্বারা মাতৃপ্রতিমা নির্মাণ করায় ছিলেন। খুঁজে পাওয়া সেই দেবী মুখাবয়ব খানি কেবল মূল দেবীর প্রতিমায় বসানো হয়েছিল। মৃত্তিকা দ্বারা তৈরি হয়েছিল বলে মহিষাসুরমর্দিনী দূর্গা দেবীকে এখানে মৃন্ময়ী নামে অভিহিত ও সুপ্রচারিত হন। এই একচালার মাতৃ প্রতিমায় উপরে চালিতে রয়েছে দেবাদিদেব মহাদেব ও তার সহচর। প্রতিমার চালির উপরের দিকে রয়েছেন গণেশ ও কার্তিকেয় এবং নিচে রয়েছেন দেবী লক্ষ্মী ও সরস্বতী।

বাৎসরিক দুর্গোৎসব

প্রতিষ্ঠাকাল ৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকেই বিষ্ণুপুরের মৃন্ময়ী মাতার মন্দিরে বাৎসরিক শারদীয়া দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মহাষষ্ঠি থেকে ১৫ দিন পূর্বে কৃষ্ণনবমীর দিন মন্দিরের সম্মুখের মরচা পাহাড়ে রাখা কামানে তোপ দাগে বাৎসরিক দুর্গাপুজোর সূচনা হয়।[] এখানে দুর্গাপুজো হয় সম্পূর্ণ পৌরাণিক প্রথা মেনে। এই ১৫ দিন ধরে নিয়মিত চণ্ডীপাঠ চলে। পুজো শুরুর আগে প্রাচীন প্রথা মেনে শাঁখারী বাজারের ফৌজদার বাড়ি থেকে দেবীর পট আনা হয়। সেই পটেই পুজো শুরু হয়।

পুজোর বিশেষ রীতিনীতি

সন্ধিপুজোর সময় ব্যবহৃত কামান

সহস্র বছর ধরে সমস্ত রীতিনীতি অবিকৃত রেখে বলিনারায়ণী প্রথায় মৃন্ময়ী মাতার পুজো হচ্ছে। পুজোর প্রধান আকর্ষণ হলো সন্ধিপূজোর কামানে তোপদেগে সন্ধিপুজোর সূচনা করা হয়। বিজয়াদশমীর দিন নীলকন্ঠ পাখি ওড়ানো হয়।[] রাজপরিবারের জেলেরা নিয়ে আসে দই ও চ্যাঙ মাছ। তারপর দইতে চ্যাঙমাছ ছেড়ে শুভবার্তা প্রেরণ করা হয়।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!