মোঃ মুজিবুল হক (১৯৩০ - ১২ জানুয়ারি ২০১৪)[১] হলেন বাংলাদেশের একজন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এবং নাগরিক অধিকার নেতা। সরকারি চাকরিতে এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ২০০৫ সালে তাকে “সমাজসেবায় স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয়।[২]
জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি
শেখ মোহাম্মদ মুজিবুল হক ১৯৩০ খ্রীষ্টাব্দে তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বাকেরগঞ্জ জেলার ঝালকাঠি মহকুমার একটি সম্ভ্রান্ত বাঙ্গালী মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, যারা ভারুকাঠির মজুমদার গোষ্ঠীর “গাভার শেখ বংশ” হিসাবে পরিচিত। তাঁর পূর্বপুরুষ রাম জীবন দাশগুপ্ত বিক্রমপুর হতে বৃহত্তর বরিশালের ভারুকাঠি গাঁওয়ে বসবাস শুরু করেন। দাশগুপ্তের বড় ছেলে রাম গোপাল দাশগুপ্ত চন্দ্রদ্বীপ রাজদরবারে দেওয়ানীর চাকরি পেয়েছিলেন এবং মজুমদার খেতাব অর্জন করেন। রাম গোপাল দাশগুপ্ত চাখারের নিকট বানারীপাড়া রাস্তার পাশে গুয়াচিত্রা দীঘিটি খনন করেন। মজুমদার গোষ্ঠীর আওলাদ-ফরজন্দ থেকে শেখ ইব্রাহীম ইসলাম গ্রহণ করেন এবং মোগল আমলে চন্দ্রদ্বীপের ভূসম্পত্তি পেয়ে গাভা গাঁওয়ে বসতি স্থাপন করেন। গাভার শেখরা আঠারো শতাব্দীর শেষভাগে সমাজে প্রভাবশালী খান্দান বলে সর্দার হিসাবে পরিচিত হন। মুজিবুল হকের বংশলতিকা হল: শেখ মোহাম্মদ মুজিবুল হক ইবনে শেখ মোবারক উদ্দীন ইবনে শেখ মফিজ উদ্দীন ইবনে শেখ কাসাই ইবনে শেখ ছুট ইবনে শেখ চান ইবনে শেখ আজম ইবনে শেখ পাঞ্জু ইবনে শেখ গরিব ইবনে শেখ ইব্রাহীম।[৩]
শিক্ষাজীবন
ভাষা আন্দোলনে অবদান
মুজিবুল হক ১৯৫২ সালে সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের তৎকালীন ভিপি হিসাবে বাংলা ভাষা আন্দোলনের সাথে সরাসরি জড়িত থাকায় গ্রেফতার হয়ে জেলও খেটেছেন।[৪] ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারির প্রেক্ষিতে আবুল হাশিমের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সভায় তিনিও উপস্থিত ছিলেন এবং পরের দিন ২১ ফেব্রুয়ারির রক্তাক্ত ঘটনায় তিনি পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শিকার হন।[১]
কর্মজীবন
তিনি বাংলাদেশ সরকারের একাধিক মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৫]
মৃত্যু
তিনি ২০১৪ সালে ১২ জানুয়ারি তারিখে ৮৪ বছর বয়সে ঢাকার বারডেম কার্ডিয়াক সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।[১]
পুরস্কার ও সম্মননা
সরকারি চাকরিতে এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায় অসাধারণ অবদানের জন্য ২০০৫ সালে দেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার”[৬][৭][৮] হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় তাকে।[২]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ