মাদল ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত একধরনের ঐতিহ্যবাহী তালাশ্রয়ী লোকবাদ্যযন্ত্র। নেপালে এবং ভারতের আদিবাসী সম্প্রদায়ের মাঝে মাদল সমধিক জনপ্রিয় একটি বাদ্যযন্ত্র। বেশকিছু লোকসঙ্গীতে এটিকে প্রধান বাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। নেপালি লোকসঙ্গীতে মূলত তাল রক্ষার জন্য মাদল ব্যবহৃত হয়। সেখানে এটি হাতে বাজানো ঢাকি (হ্যান্ড ড্রাম) হিসাবে বেশ জনপ্রিয় এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
মাদল নেপালের একটি জাতীয় বাদ্যযন্ত্র। এই নেপালি টোকাযন্ত্রটিকে বেশিরভাগ নেপালি লোকসংগীতের মেরুদণ্ড বলা চলে। খ্যাতনামা নেপালি সংগীতশিল্পী রণজিৎ গজমের যখন রাহুল দেব বর্মণের অধীনে কাজ শুরু করেছিলেন তখন তিনি এই যন্ত্রটিকে বলিউড সংগীতের সাথে পরিচয় করিয়েছিলেন। তিনি "হাম দোনো দো প্রেমী দুনিয়া ছোড় চলে" এবং "কাঞ্ছি রে কাঞ্ছি রে" এর মতো অসংখ্য বলিউড গানে এটি ব্যবহার করেছেন।
নির্দিষ্ট কয়েকটি আদিবাসী গোষ্ঠীর মধ্যে ভিন্ন প্রকারের নিজস্ব মাদল রয়েছে।
ইতিহাস
মাদলের উৎপত্তি হয়েছিল নেপালের মগর সম্প্রদায়ের হাত ধরে।[১]
নামকরণ এবং নির্মাণ
নেপালি ভাষায় প্ৰাচীনকালে মাদলকে মৰ্দল বলে ডাকা হত।
মাদল নির্মাণের জন্য সাধারণত কাঠের টুকরা খোদাই করা হয় যাতে একটি ফাঁকা গহ্বর তৈরি হয়। এই গহ্বরটির স্থানীয় নাম ঘর। এর দুপ্রান্তের মাথাগুলো দ্বি-স্তরযুক্ত ছাগলের চামড়া দিয়ে ঢাকা দেওয়া হয় এবং ময়দা, লোহার ফাইলিং ও ডিমের তৈরি একধরনের কালো পেস্ট দিয়ে প্রতিটি মাথার মাঝখানে জায়গাটি একটি বৃত্তাকারে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই চিহ্নটি মাথায় ওজন যুক্ত করে এবং মাদলের শব্দকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করে যা ঘণ্টার সমতুল্য শব্দ দেয়। [২]
বড় এবং ছোট মাথাকে প্রায়শই যথাক্রমে পুরুষ এবং মহিলা হিসাবে উল্লেখ করা হয়। [৩]
ব্যবহার
মাদল নেপালের রাষ্ট্রীয় বাদ্য। এই বাদ্য নেপালি জাতির সংগীতের মেরুদন্ড।