ভারতীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান ভুবনেশ্বর বা ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি ভুবনেশ্বর (আইআইটি ভুবনেশ্বর বা আইআইটি বিবিএস) হল ভারতের একটি সরকারি প্রকৌশল প্রতিষ্ঠান, যা ২০০৮ সালে ভারত সরকার কর্তৃক ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ভুবনেশ্বর শহরে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি আটটি নতুন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) এর মধ্যে একটি। ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজী (সংশোধনী) অ্যাক্ট, ২০১১ এর অধীন ভারত সরকারের মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় কর্তৃক এই আটটি আইআইটি প্রতিষ্ঠিত, এবং বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়টি আইআইটি'তে রূপান্তরিত। [১] এই আইনটি ২৪শে মার্চ ২০১১ [২] তে লোকসভায় এবং ৩০শে এপ্রিল ২০১২ তে রাজ্যসভায় পাস হয়। [৩] এটি ২০০৮ সালের ২৩শে জুলাই আইআইটি খড়গপুরের ক্যাম্পাস থেকে কাজ শুরু করে এবং ২২শে জুলাই ২০০৯ সালে ভুবনেশ্বর শহরে স্থানান্তরিত হয়। [৪]
এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বি.টেক, এম. টেক এবং পিএইচ.ডি ডিগ্রির জন্য শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়। [৫] ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি আরুগুল এর স্থায়ী ক্যাম্পাস থেকে কাজ শুরু করেছে। ক্লাসগুলো আরুগুল এর স্থায়ী ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষাবর্ষ প্রতি বছর জুলাই মাসে শুরু হয়। বর্তমানে, অধ্যাপক আর.ভি.রাজকুমার ইনস্টিটিউটের পরিচালক।
ইতিহাস
আগের বিতর্ক
উড়িষ্যাতে আইআইটি প্রতিষ্ঠার দাবী দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে ছিল। কেন্দ্রের অর্থানুকুল্যে পরিচালিত শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান গুলির মধ্যে ক্রমতালিকায় নিচের দিকের থাকা রাজ্য হওয়ায়, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অবহেলার দৃঢ় অভিযোগ রয়েছে। [৬][৭] ওড়িশায় স্থানীয়ভাবে বহু বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে,[৮][৯][১০][১১][১২][১৩] জাতীয় ছাত্র ইউনিয়ন (এনএসইউআই),[১৪] এবং বিশিষ্ট অনাবাসী ভারতীয় শিক্ষাবিদগণ দ্বারা। আগামী ওড়িশা নামে একটি সংস্থা গঠিত হয়েছিল, যারা রাজ্য জুড়ে গণ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়। [১২][১৩] ওড়িশাকে অবহেলা নিয়ে বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনাও ঘটেছে। [১৫] ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক সহ রাজনীতিবিদেরা নতুন দিল্লির ইউপিএ সরকার দ্বারা রাজ্যের প্রতি তীব্র অবহেলার চিহ্ন হিসাবে এই বিতর্কিত বিষয়টি তুলে ধরেন। [১৬][১৭][১৮][১৯][২০][২১] মে ২০০৭ সালে, এটি ভারতীয় সংসদে একটি প্রধান বিতর্কিত বিষয় হয়ে ওঠে। [২২][২৩][২৪][২৫] রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উপেক্ষা করার জন্য ক্ষমতাসীন ইউপিএ সরকারকে দোষী সাব্যস্ত করে বিরোধী এনডিএ দল ভারতীয় সংসদ পরিত্যাগ করে। [২৬][২৭][২৮] কিছু গণমাধ্যমের সমীক্ষায় বলা হয় যে কংগ্রেস পার্টি নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার এই বিষয়টিতে বিব্রত হয়েছে। [২৯] অবশেষে, এইচআরডি মন্ত্রী অর্জুন সিং অপেক্ষাকৃত নরম হন এবং আইআইটি ভুবনেশ্বর প্রতিষ্ঠার দিকে অগ্রসর হন। [৩০]
ক্যাম্পাস এবং অবস্থান
স্থায়ী ক্যাম্পাস
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির স্থায়ী বিদ্যায়তনের জন্য ওড়িশা সরকার ৯৩৬ একর সরকারি জমি বরাদ্দ করেছে। উপরন্তু, জমিটি সন্নিহিত করার জন্য রাজ্য সরকার নিজের খরচে প্রায় ১৬ একর বেসরকারী জমি অধিগ্রহণ করেছে। ভুবনেশ্বরের উপকণ্ঠে আরুগুল এ স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে। ওড়িশা সরকার জাতীয় মহাসড়ক ৫ থেকে ৪ লেন যুক্ত অভিগমন রাস্তা নির্মাণ এবং ক্যাম্পাসে জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এনেছে। ওড়িশা সরকার পুরী-কোনারক উপকূল রেখা বরাবর ৭৫ একর জমিতে জলবায়ু পরিবর্তনের গবেষণার জন্য একটি উদ্ভাবক কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সম্মত হয়েছে।