বের্টা ফেলিৎসিটাস জোফিয়ে ফ্রাইফ্রাউ ফন জুটনার (জার্মান: Bertha Felicitas Sophie Freifrau von Suttner) (জন্ম: ৯ জুন, ১৮৪৩ - মৃত্যু: ২১ জুন, ১৯১৪) একজন অস্ট্রীয় ঔপন্যাসিক এবং শান্তিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রথম নারী কবি। [১]
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
জুটনারের জন্ম তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার (বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্র) রাজধানী প্রাগ শহরে। জুটনার দরিদ্র হয়ে পড়া এক অস্ট্রীয় ফিল্ড মার্শাল ফ্রান্ৎস-ইয়োজেফ গ্রাফ এর কন্যা এবং ১৮৭৩ সাল অবধি জুটনার বিত্তবান এক পরিবারের গৃহশিক্ষক ছিলেন। তার এক বড় ভাই ছিল যার নাম আর্থার ফ্রান্ৎস গ্রাফ। জুটনারের সাথে প্রকৌশলী ও ঔপন্যাসিক আর্থার গুণ্ডাকার ফ্রাইহের ফন জুটনারের (যিনি ১৯০২ সালে মৃত্যুবরণ করেন) বাগদান হয়, কিন্তু তার পরিবার এর বিরোধিতা করে। ১৮৭৬ সালে তিনি আলফ্রেড নোবেলের একটি বিজ্ঞাপনে সাড়া দেন এবং প্যারিসে নোবেলের বাসার গৃহকর্ত্রীর দায়িত্ব নেন। ভিয়েনা ফেরার পূর্বে তিনি শুধুমাত্র এক সপ্তাহের জন্য সেখানে ছিলেন এবং ১৮৭২ সালের ১২ জুন গোপনে আর্থারকে বিয়ে করেন।
কর্মজীবন
১৮৯১ সালে একটি শান্তিকামী সংগঠন প্রতিষ্ঠা এবং ১৮৯৯ সালে তার উপন্যাস ডি ভাফেন নিডার প্রকাশিত হবার পর জুটনার ধীরে ধীরে শান্তি আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। ১৮৯২ থেকে ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক শান্তিকামী সাময়িকীর সম্পাদিকা থাকাকালে জুটনার আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন। হেনরি থমাস বাকল, হার্বার্ট স্পেন্সার এবং চার্লস ডারউইনের লেখা তার শান্তিকামী চেতনাকে প্রভাবিত করেছিল । যদিও আলফ্রেড নোবেলের সাথে তার সাক্ষাৎ ক্ষণিকের জন্য, তবুও ১৮৯৬ সালে নোবেলের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার সাথে জুটনারের চিঠি আদান-প্রদান হয়েছে। ধারণা করা হয় যে, আলফ্রেড নোবেল তার সকল অর্থ যে সকল পুরস্কারের জন্য উইল করে দিয়েছিলেন তার মধ্যে "শান্তি পুরস্কার" সংযুক্ত করার পিছনে জুটনারের এক বিশাল প্রভাব আছে। জুটনার নিজে ১৯০৫ সালে পুরস্কারটি জিতেছিলেন।
১৯১৪ সালে তার লেখা বিখ্যাত উপন্যাস ডি ভাফেন নিডার চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়; "নরডিস্ক ফিল্মস কোম্পানি"-র ২ জন বিখ্যাত চলচ্চিত্র প্রযোজক হোলগার মাডসেন এবং কার্ল থিওডর এর প্রযোজনা করেন। ২০০৫ সালে জার্মানিতে জুটনারের স্মারক ডাকটিকেট প্রকাশ করা হয়। অস্ট্রিয়ার ২ ইউরো মুদ্রায় জুটনারের ছবি চিত্রিত করা হয় এবং এর পূর্বে অস্ট্রীয় ১০০০ শিলিং ব্যাংকনোটেও তার ছবি চিত্রায়ণ করা হয়েছিল।