বিন্দুসার (সংস্কৃত: बिन्दुसार) বা সিংহসেন (সংস্কৃত: सिहंसेन) (খ্রিস্টপূর্ব ৩২০ - খ্রিস্টপূর্ব ২৭২) দ্বিতীয় মৌর্য্য সম্রাট ছিলেন, যিনি চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের পর ২৯৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সিংহাসন লাভ করেন। তিনি যিনি গ্রিকদের নিকট আমিত্রোখাতেস বা আল্লিত্রোখাদেস নামে পরিচিত ছিলেন, যা সংস্কৃত শব্দ অমিত্রঘাত (সংস্কৃত: अमित्रघात) বা শত্রু বিনাশকারী থেকে উদ্ভূত হয়েছে।[২]
জন্ম
বিন্দুসার প্রথম মৌর্য্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য ও তাঁর পত্নী দুর্ধরার সন্তান ছিলেন। জন্মের সময় তার নাম রাখা হয় সিংহসেন। [৩] জৈন প্রবাদানুসারে, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের উপদেষ্টা চাণক্য শত্রু দ্বারা বিষপ্রয়োগে হত্যা করার চেষ্টার বিরুদ্ধে শারীরিক প্রতিষেধক তৈরী করার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যকে তাঁর অজান্তে অল্প মাত্রায় বিষ পান করাতেন।[৪] একদিন চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্য তার বিষযুক্ত খাবার অন্তঃসত্ত্বা দুর্ধরার সঙ্গে ভাগ করে খেলে, দুর্ধরার মৃত্যু হয়। তাঁর সন্তানকে বাঁচাতে চাণক্য সদ্যমৃত দুর্ধরার পেট কেটে তাকে বের করে আনেন।[৫][৬]
সাম্রাজ্যলাভ
২৯৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মাত্র বাইশ বছর বয়সে পিতৃসূত্রে বিন্দুসার এক বিশাল সাম্রাজ্যের অধিকারী হন। এই সাম্রাজ্যকে তিনি দক্ষিণ দিকে আরো প্রসারিত করেন এবং কলিঙ্গ, চের, পাণ্ড্য ও চোল রাজ্য ব্যতিরেকে সমগ্র দক্ষিণ ভারত ছাড়াও উত্তর ভারতের সমগ্র অংশ তাঁর করায়ত্ত হয়। তাঁর রাজত্বকালে তক্ষশীলার অধিবাসীরা দুইবার বিদ্রোহ করেন কিন্তু বিন্দুসারের পক্ষে তা দমন করা সম্ভব হয়নি।
ধর্ম
বৌদ্ধ গ্রন্থানুসারে, বিন্দুসার ব্রাক্ষ্মণ ধর্মসম্প্রদায়ের মত বিশ্বাস করতেন। তাঁর আধ্যাত্মিক শিক্ষক পিঙ্গলবস্ত বা জনাসন একজন ব্রাহ্মণ শৈব ছিলেন।[৭] বিন্দুসারের পত্নী সুভদ্রাঙ্গীও শৈব ধর্মমতে বিশ্বাসী ছিলেন।[৮] বিন্দুসার বেশ কিছু ব্রাহ্মণভট্টো বা ব্রাহ্মণ মঠেও দান ধ্যান করেন।[৯]
জনপ্রিয় মাধ্যমে
তথ্যসূত্র
- ↑ Radha Kumud Mookerji (১৯৬৬)। Chandragupta Maurya and His Times: Madras University Sir William Meyer Lectures, 1940-41। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 234। আইএসবিএন 8120804058।
- ↑ Strabo (১৯০৩), The Geography of Strabo: Literally Translated, With Notes, 1, Translated by H. C. Hamilton, Esq. And W. Falconer, M.A., London: George Bell & Sons, পৃষ্ঠা 109, সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৩
- ↑ Hurry, Alain Daniélou ; translated from the French by Kenneth (২০০৩)। A brief history of India। Rochester. VT: Inner Traditions। পৃষ্ঠা 108। আইএসবিএন 978-0892819232।
- ↑ Wilhelm Geiger (১৯০৮)। The Dīpavaṃsa and Mahāvaṃsa and their historical development in Ceylon। H. C. Cottle, Government Printer, Ceylon। পৃষ্ঠা 40। ওসিএলসি 559688590।
- ↑ M. Srinivasachariar। History of classical Sanskrit literature (3 সংস্করণ)। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 550। আইএসবিএন 978-81-208-0284-1।
- ↑ Jainism in South India by P. M. Joseph. International School of Dravidian Linguistics, 1997. আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৮৫৬৯২-২৩-৪.
- ↑ Arthur Llewellyn Basham (১৯৫১)। History and doctrines of the Ājīvikas: a vanished Indian religion। foreword by L. D. Barnett (1 সংস্করণ)। London: Luzac। পৃষ্ঠা 138, 146। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ Anukul Chandra Banerjee (১৯৯৯)। Sanghasen Singh, সম্পাদক। Buddhism in comparative light। Delhi: Indo-Pub. House। পৃষ্ঠা 24। আইএসবিএন 8186823042। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ Beni Madhab Barua; Ishwar Nath Topa (১৯৬৮)। Asoka and his inscriptions। 1 (3rd সংস্করণ)। Calcutta: New Age Publishers। পৃষ্ঠা 171। ওসিএলসি 610327889। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৩।
|
---|
সম্রাট | |
---|
সম্রাজ্ঞী | |
---|
রাজকুমার | |
---|
রাজকুমারী | |
---|
রাজনীতি | |
---|
ধর্ম | |
---|
স্থাপত্য ও ভাস্কর্য্য | |
---|