বিউবনিক প্লেগ

বিউবনিক প্লেগ
বিউবনিক প্লেগ রোগে আক্রান্ত রোগীর উরুতে ক্ষত যা বিউবো নামে পরিচিত।
বিশেষত্বসংক্রামক ব্যাধি
লক্ষণজ্বর, মাথাব্যথা, বমি, লিম্ফনোড ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।[][]
রোগের সূত্রপাতজীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার ১ থেকে ৭ দিনের মধ্যে।[]
কারণমক্ষিকা (flea) দ্বারা বাহিত ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস (Yersinia pestis)[]
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতিরক্ত, থুতু বা লসিকাগ্রন্থিতে জীবাণুর উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়।[]
চিকিৎসাস্ট্রেপটোমাইসিন, জেনটামাইসিন, বা ডক্সিসাইক্লিন প্রভৃতি অ্যান্টিবায়োটিক।[][]
সংঘটনের হারপ্রতিবছর প্রায় ৬৫০ জন রোগী আক্রান্ত হয়।[]
মৃতের সংখ্যাচিকিৎসা প্রদান সত্ত্বেও মৃত্যুহার ১০%।[]

বিউবনিক প্লেগ (ইংরেজি: Bubonic plague) হল ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস নামক ব্যাক্টেরিয়াঘটিত প্লেগ রোগের তিনটি প্রকারের একটি।[] জীবাণুর সংস্পর্শে আসার ১ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।[] উপসর্গগুলো হল জ্বর, মাথাব্যথা, বমি।[] ত্বকের যে স্থান দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করে তার নিকটবর্তী লসিকাগ্রন্থি ফুলে যায় ও ব্যথা হয়।[] মাঝেমধ্যে ফোলা লসিকাগ্রন্থি ফেটে যেতে পারে।[]

প্লেগ রোগের তিনটি রূপভেদ যেমন বিউবনিক প্লেগ, সেপটিসেমিক প্লেগনিউমোনিক প্লেগ এর মধ্যে কোনটিতে আক্রান্ত হবে তা নির্ভর করে শরীরে জীবাণু প্রবেশের ধরনের উপর।[] বিউবনিক প্লেগ সাধারণত ছোট প্রাণী থেকে আক্রান্ত মক্ষিকার মাধ্যমে ছড়ায়।[] এটা প্লেগে আক্রান্ত প্রাণীর মৃতদেহ থেকে নির্গত তরল পদার্থ থেকেও ছড়াতে পারে।[] বিউবনিক প্লেগের ক্ষেত্রে, মক্ষিকা ত্বকে কামড়ালে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে লসিকানালীর মাধ্যমে লসিকাগ্রন্থিতে পৌছায় ফলে লসিকা ফুলে যায়।[] রক্ত, থুতু বা লসিকাগ্রন্থিতে জীবাণুর উপস্থিতি নির্ণয় করে রোগ নির্ণয় করা যায়।[]

প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে যেমন যেসব এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব বেশি সেখানে জনগণকে মৃত প্রাণীর সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখা[] প্লেগ প্রতিরোধে টীকার কার্যকারিতা খুব একটা নেই।[] স্ট্রেপটোমাইসিন, জেনটামাইসিন, বা ডক্সিসাইক্লিন প্রভৃতি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয়।[][] চিকিৎসা না করালে প্লেগ আক্রান্ত রোগীর ৩০% থেকে ৯০% রোগীই মৃত্যুবরণ করে।[][] মৃত্যু হলে সাধারণত দশ দিনের মধ্যেই হয়।[] চিকিৎসা সত্ত্বেও মৃত্যুঝুঁকি প্রায় ১০%।[] সারাবিশ্বে প্রতিবছর প্রতিবেদনকৃত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬৫০ জন তন্মধ্যে প্রায় ১২০ জন মৃত্যুবরণ করে।[] একবিংশ শতাব্দীতে আফ্রিকায় এই রোগটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।[]

প্লেগকে ব্ল্যাক ডেথ এর কারণ হিসেবে মনে করা হয় যা এশিয়া, ইউরোপআফ্রিকায় চতুর্দশ শতাব্দীতে মহামারী আকারে দেখা দেয় যাতে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ প্রাণ হারায়।[] যার ২৫%-৬০% লোকই ছিল ইউরোপীয়।[][] সে সময় বহুসংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ মৃত্যুবরণ করায় শ্রমিক সঙ্কট দেখা দেয় ফলে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পায়।[] কোনোকোনো ঐতিহাসিক এই ঘটনাকে ইউরোপীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের সন্ধিক্ষণ বোলে বিবেচনা করেন।[] bubonic শব্দটি গ্রিক শব্দ βουβών থেকে উদ্ভূত যার অর্থ "কুঁচকি" (groin)।[] স্ফীত লসিকাগ্রন্থিকে বুঝাতে "buboes" শব্দটিও ব্যবহৃত হয়।[]

উপসর্গসমূহ

রক্ত ও ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়া বিউবনিক প্লেগে আক্রান্ত রোগীর ছবি দেখানো হয়েছে যার নাকের অগ্রভাগ, ঠোঁট, হাতের আঙুলে টিস্যু নেক্রোসিস হয়েছে এবং তার অগ্রবাহুতে কালশিরে পড়েছে। এক সময় ব্যক্তিটির সমগ্র শরীরেই কালশিরে পড়েছিল।

বিউবনিক প্লেগের সবচেয়ে সুপরিচিত লক্ষণ হল এক বা একাধিক সংক্রমিত, স্ফীত ও ব্যথাযুক্ত লসিকা গ্রন্থি যা বিউবো নামে পরিচিত। "ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস" নামক ব্যাক্টেরিয়া মক্ষিকার কামড়ের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশের পর নিকটবর্তী লসিকা গ্রন্থিতে বসতি গড়ে এবং বংশবিস্তার করে। বিউবোগুলো সাধারণত বগল, ঊরুর ঊর্ধ্বভাগ, কুঁচকি ও ঘাড় অঞ্চলে বেশি দেখা যায়। এছাড়া হাত ও পায়ের আঙুল, ঠোঁট ও নাকের অগ্রভাগের টিস্যুতে গ্যাংগ্রিন হয়। কামড়ভিত্তিক বিস্তারপ্রক্রিয়া হওয়ায় বিউবনিক প্লেগেই প্রথম প্রকাশ পায়। বিউবনিক প্লেগের উপসর্গসমূহ ব্যাক্টেরিয়ার সংস্পর্শে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই প্রকাশ পায়। উপসর্গসমূহ নিম্নরূপঃ

  • শীত শীত অনুভূতি
  • অসুস্থতা-বোধ
  • উচ্চমাত্রায় জ্বর >৩৯ °সে (১০২.২ °ফা)
  • মাংসপেশি সংকোচন[১০]
  • খিঁচুনি
  • মসৃণ, স্ফীত, ব্যথাযুক্ত লসিকা গ্রন্থি বা বিউবো যা কুঁচকিতে বেশি দেখা যায় তবে বগল বা ঘাড়েও থাকতে পারে। প্রায়শ প্রাথমিক সংক্রমনের নিকটবর্তী স্থানে বেশি দেখা যায়।
  • আক্রান্ত লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়ার আগেই ব্যথা হতে পারে।
  • হাত ও পায়ের আঙুল, ঠোঁট ও নাকের অগ্রভাগের টিস্যুতে গ্যাংগ্রিন হয়।[১১]

অন্যান্য লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, অনবরত রক্তবমি (হিমাটেমেসিস), হাত-পা ব্যথা হওয়া, কাশি ও রোগী জ্যান্ত থাকা অবস্থাতেও ত্বকের ক্ষয় বা পচনের ফলে সৃষ্ট তীব্র ব্যথা। এছাড়া প্রচণ্ড ক্লান্তি, পেটের সমস্যা, লেন্টিকিউলি (সারা দেহে ছড়িয়ে থাকা কালো দাগ), চিত্তবৈকল্য বা প্রলাপ বকা ও গাঢ় নিদ্রা বা অচেতন অবস্থা।

কারণ

এটা ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস নামক ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত একটা ওরিয়েন্টাল যা র‍্যাট ফ্লি (Xenopsylla cheopis) এর চিত্র যার অন্ত্রে জীবাণুগুলো কালো পিণ্ড আকারে দেখা যাচ্ছে। অন্ত্রের সম্মুখভাগ Y. pestis এর বায়োফিল্ম দ্বারা অবরুদ্ধ থাকে ফলে যখন মক্ষিকা অসংক্রমিত পোষকের রক্ত খাওয়ার চেষ্টা করে তখন অন্ত্র থেকে জীবাণু উদ্গিরণের মাধ্যমে কামড়ানোর স্থানে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়।

বিউবনিক প্লেগ হল Xenopsylla cheopis নামক সংক্রমিত র্যাষট ফ্লির কামড়ের ফলে সৃষ্ট লসিকাতন্ত্রের একটি সংক্রমণ। খুব বিরল কিছু ক্ষেত্রে যেমন সেপটিসেমিক প্লেগ, সরাসরি সংক্রমিত টিস্যু বা আরেকজন সংক্রমিত ব্যক্তির কফের সংস্পর্শে আসলে রোগটি ছড়াতে পারে। মক্ষিকাটি গৃহ ও ক্ষেতের ইঁদুরের দেহে পরজীবী হিসেবে বাস করে এবং তার পোষকটি মারা গেলে আরেকটি শিকারের সন্ধান করে। ব্যাক্টেরিয়াটি মক্ষিকার কোনো ক্ষতি করে না যা এক পোষক থেকে আরেক পোষকে জীবাণুর বিস্তারে সহায়তা করে। জীবাণুগুলো মক্ষিকার অন্ত্রে জড়ো হয়ে একটি পিণ্ডের মতো বায়োফিল্ম তৈরি করে। অন্ত্রের সম্মুখভাগ Y. pestis এর বায়োফিল্ম দ্বারা অবরুদ্ধ থাকে ফলে যখন মক্ষিকা অসংক্রমিত পোষকের রক্ত খাওয়ার চেষ্টা করে তখন অন্ত্র থেকে জীবাণু উদগিরণের মাধ্যমে কামড়ানোর স্থানে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়। ব্যাক্টেরিয়া মক্ষিকার কামড়ের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশের পর নিকটবর্তী লসিকা গ্রন্থিতে বসতি গড়ে এবং বংশবিস্তার করে। ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস ব্যাক্টেরিয়া ফ্যাগোসাইটোসিস ঠেকাতে পারে এমনকি ফ্যাগোসাইটের অভ্যন্তরে বংশবিস্তার করতে পারে ও তাদেরকে হত্যাও করতে পারে। কিছুদিনের মধ্যে লসিকা গ্রন্থিতে রক্তপাত হয়ে স্ফীত হয় ও টিস্যুগুলো নেক্রোসিস হয়। কখনোকখনো বিউবনিক প্লেগ প্রাণঘাতী সেপটিসেমিক প্লেগে রূপান্তরিত হতে পারে। প্লেগ ফুসফুসেও ছড়াতে পারে সেক্ষেত্রে এটি নিউমোনিক প্লেগ নামে পরিচিত।

রোগ নির্ণয়

প্লেগ রোগ নির্ণয় নিশ্চিতকরণে ল্যাবোরেটরি পরীক্ষা প্রয়োজন। রোগীর নমুনা কালচার করে Y. pestis ব্যাক্টেরিয়া শনাক্ত করে এই রোগ নিশ্চিত করা সম্ভব। সংক্রমণের প্রাথমিক ও শেষ পর্যায়ে রোগীর সিরাম পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া র্যাণপিড ডিপস্টিক টেস্টের মাধ্যমে ব্যাক্টেরিয়ার অ্যান্টিজেন শনাক্ত করে তৃণমূল পর্যায়ে খূব দ্রুত রোগ নির্ণয় করা যায়।[১২]

পরীক্ষার জন্য নিম্নলিখিত জায়গা থেকে নমুনাগুলো সংগ্রহ করা হয়:[১৩]

  • বিউবো: স্ফীত লসিকা গ্রন্থি বিউবনিক প্লেগের উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। সুচ দিয়ে লসিকা গ্রন্থি থেকে তরল নমুনা নেওয়া হয়।
  • রক্ত
  • ফুসফুস

চিকিৎসা

বিউবনিক প্লেগের চিকিৎসায় বিভিন্ন প্রকারের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে রয়েছে অ্যামিনোগ্লাইকোসাইডসমূহ যেমন স্ট্রেপটোমাইসিন ও জেনটামাইসিন, টেট্রাসাইক্লিনসমূহ (বিশেষত ডক্সিসাইক্লিন) ও ফ্লুরোকুইনোলোন যেমন সিপ্রোফ্লক্সাসিন। চিকিৎসা পাওয়া সত্ত্বেও মৃত্যুহার প্রায় ১-১৫%, তবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুহার বেড়ে ৪০-৬০% হতে পারে।[১৪] প্লেগে আক্রান্ত রোগীর খুব দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন এবং মৃত্যু প্রতিহত করার জন্য প্রথম লক্ষণ প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া উচিত। অন্যান্য চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে অক্সিজেন, শিরাভ্যন্তরীণ তরল প্রয়োগ ও শ্বাস প্রশ্বাসে সহায়তা করা।যে সকল ব্যক্তি নিউমোনিক প্লেগ রোগীর সংস্পর্শে আসবে তাদেরকে প্রতিষেধমূলক অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে।[১৫] বিউবনিক প্লেগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে সংক্রমণের ১২ ঘণ্টার মধ্যে স্ট্রেপটোমাইসিন ব্যবহার করে নাটকীয় সাফল্য পাওয়া গিয়েছে।[১৬]

ইতিহাস

প্রথম মহামারী

পূর্বাঞ্চলীয় রোমান সাম্রাজ্যে (বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য) প্রথম প্লেগ দেখা যায় যা সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ান এর নামানুসারে জাস্টিনিয়ানের প্লেগ নামকরণ করা হয়। সম্রাট প্রথম জাস্টিনিয়ান প্লেগে আক্রান্ত হলেও ব্যাপক চিকিৎসায় তিনি বেঁচে যান।[১৭][১৮] উক্ত মহামারীতে প্রায় আড়াইকোটি(৬ষ্ঠ শতাব্দীর মহামারী) থেকে পাঁচ কোটি লোক প্রাণ হারায়।[১৯][২০] ঐতিহাসিক প্রকোপিয়াস তার হিস্ট্রি অব দ্যা ওয়ারস গ্রন্থের ২য় ভলিউমে প্লেগের সাথে তার নিজের লড়াই ও উদীয়মান সাম্রাজ্যের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে লিখেছিলেন। ৫৪২ খ্রিষ্টাব্দের বসন্তকালে, প্লেগ কনস্টান্টিনোপলে পৌঁছে বন্দর থেকে বন্দরে ও ভূমধ্যসাগরের চারিদিকে ছড়াতে থাকে। পরবর্তীতে পূর্বদিকে এশিয়া মাইনর পশ্চিমদিকে গ্রিসইতালি পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। সম্রাট জাস্টিনিয়ানের প্রচেষ্টায় বিলাসবহুল পণ্যদ্রব্য আমদানি-রপ্তানি হওয়ায় পণ্যদ্রব্য স্থানান্তরের কারণে দেশের অভ্যন্তরে প্লেগ ছড়িয়ে যায় এবং তার রাজধানী বিউবনিক প্লেগের প্রধান রপ্তানিকারকে পরিণত হয়। প্রিকোপিয়াস সিক্রেট হিস্ট্রি গ্রন্থে জাস্টিনিয়ানকে পিশাচ সম্রাট হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন যে, জাস্টিনিয়ান হয় নিজে প্লেগের স্রষ্টা ছিলেন নতুবা তার পাপকর্মের জন্য শাস্তি পাচ্ছিলেন।[২০]

দ্বিতীয় মহামারী

তুরনাই এর নাগরিকদের দ্বারা প্লেগে মৃতদের কবর দেওয়ার চিত্র। এটা The Chronicles of Gilles Li Muisis (1272–1352) থেকে নেওয়া একটি অনুচিত্র। Bibliothèque royale de Belgique, MS 13076-77, f. 24v.
১৭২০-১৭২১ সালে ফ্রান্সের মার্তিগুই শহরে বিউবনিক প্লেগে মৃতদের একটি গণকবর।

মধ্যযুগের শেষদিকে (১৩৪০-১৪০০) ইউরোপে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। ১৩৪৭ সালে কুখ্যাত বিউবনিক প্লেগের মহামারী হয় যা প্রায় একতৃতীয়াংশ লোকের প্রাণহানি ঘটায়। ইতিহাসে এটি ব্ল্যাক ডেথ নামে পরিচিত। কতক ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন যে, ঐ সময় সমাজের লোকজন অনেক বেশি হিংস্র হয়ে উঠে কারণ বিশাল মৃত্যুহার জীবনকে সস্তা করে দেয় ফলে যুদ্ধ-বিগ্রহ, অপরাধ, গণবিদ্রোহ ও নিপীড়নের হার বৃদ্ধি পায়।[২১] ব্ল্যাক ডেথ উৎপত্তি লাভ করে মধ্য এশিয়ায় ও ইতালিতে ছড়ায় পরবর্তীতে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলিতে ছড়িয়ে যায়। আরব ঐতিহাসিক ইবনে আল-ওয়ারদনি ও আলমাকরিজি বিশ্বাস করতেন যে ব্ল্যাক ডেথের উৎপত্তি হয়েছিল মঙ্গোলিয়ায়। চীনা প্রতিবেদনেও ১৩৩০ সালের শুরুর দিকে মঙ্গোলিয়ায় ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।[২২] ২০০২ সালে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে এটা ১৩৪৬ সালের শুরুর দিকে স্টেপি এলাকায় শুরু হয়েছিল যেখানে প্লেগের জীবাণু কাস্পিয়ান সাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তীর হতে দক্ষিণ রাশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মঙ্গোলীয়রা চীন ও ইউরোপের মধ্যে অবস্থিত বাণিজ্য পথ, সিল্ক রোড, বন্ধ করে দেয় যা পূর্ব রাশিয়া থেকে পশ্চিম ইউরোপে ব্ল্যাক ডেথের বিস্তার থামিয়েছিল। ক্রিমিয়া উপদ্বীপের কাফা এলাকায় অবস্থিত ইতালীয় বণিকদের সর্বশেষ বাণিজ্য স্টেশনে মঙ্গোলদের হামলার মাধ্যমে মহামারীর সূত্রপাত ঘটে।[১৬] ১৩৪৬ সালের শেষের দিকে প্লেগ দেয়াল অবরোধকারীদের মধ্যে ছড়ায় পরে তাদের মাধ্যমে শহরের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। বসন্তের আগমন ঘটলে ইতালীয় বণিকরা তাদের জাহাজে পালিয়ে যায় এবং নিজেদের অজান্তেই তারা ব্ল্যাক ডেথ বহন করে নিয়ে যায়। মক্ষিকার মাধ্যমে ইঁদুরে বাহিত হয়ে, প্লেগ প্রথমত কৃষ্ণ সাগরের আশে পাশের লোকদের মাঝে ছড়ায় এবং তারপর লোকজন এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় পালানোর কারণে ইউরোপের বাকি অংশে ছড়িয়ে যায়।

তৃতীয় মহামারী

উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে প্লেগ পুনরায় মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। পূর্ববর্তী দুটি প্রদুর্ভাবের মতো, এবারও পূর্ব এশিয়া বিশেষ করে চীনের ইউনান প্রদেশে শুরু হয়েছিল যেখানে প্লেগের কয়েকটা প্রাকৃতিক উৎস রয়েছে।[২৩] প্রথম প্রাদুর্ভাবটি ঘটেছিল অষ্টাদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে।[২৪][২৫] ছড়ানোর পূর্বে কয়েক বছর ধরে রোগটি দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে অবস্থান করেছিল। চীনের ক্যান্টন শহরে, ১৮৯৪ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়ে জুন পর্যন্ত প্রায় আশি হাজার লোকের মৃত্যু হয়। হংকংয়ের নিকটবর্তী শহরের সাথে প্রত্যহ পানি যাতায়াত থাকায় প্লেগ সেখানে খুব দ্রুত ছড়ায় এবং দুই মাসের মধ্যে ২,৪০০ জনেরও অধিক লোক মারা যায়।[২৬] আধুনিক মহামারী হিসেবে পরিচিত তৃতীয় মহামারী উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগ থেকে বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিককার সময়ে জাহাজ পথে সারাবিশ্বের বন্দর নগরীতে ছড়িয়েছিল।[২৭] ১৯০০-১৯০৪ সালের দিকে সান ফ্রান্সিস্কোর চাইনাটাউনে প্লেগ আক্রমণ হয়েছিল।[২৮] এবং ১৯০৭-১৯০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ওকল্যান্ড ও ইস্ট বে এলাকায় ছড়ায়।[২৯] মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রাদুর্ভাবটি ঘটেছিল ১৯২৪ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস শহরে।[৩০] বন্য ইঁদুরে রোগটি এখনো বিদ্যমান থাকায় তদের সংস্পর্শে আসলে মানুষেও ছড়াতে পারে।[৩১]বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মহামারীটি ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত সক্রিয় ছিল বলে বিবেচনা করা হয় যখন বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর মৃতের সংখ্যা ২০০ তে নেমে এসেছিল। ১৯৯৪ সালে ভারতে পাঁচটি প্রদেশে প্রায় ৭০০ জন (৫২ জন মৃত সহ) প্লেগে আক্রান্ত হয়। সেসময় ভারতীয় লোকজন প্লেগের হাত থেকে বাঁচার জন্য এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে চলে যেতে থাকে।

২০০১ সাল থেকে এক দশক ধরে , জাম্বিয়া, ভারত, মালাউই, আলজেরিয়া, চীন, পেরুগণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র দেশসমূহে সর্বাধিক প্লেগ রোগী ছিল যার মধ্যে শুধু গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রেই ১,১০০ জনেরও বেশি প্লেগ রোগী রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিকট প্রতিবছর প্রায় ১০০০ থেকে ২০০০ রোগীর প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।[৩২] ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ পর্যন্ত রাজনৈতিক অস্থিরতা, স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে জ্ঞানস্বল্পতার কারণে মাদাগাস্কারে নিয়মিতভাবে মহামারী হয়।[৩২] ১৯০০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর গড়ে ৯ জন সহ ১০৩৬ জন প্লেগে আক্রান্ত হয়। ২০১৫ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে ১৬ জন প্লেগে আক্রান্ত হয় তন্মধ্যে ইয়সমাইট ন্যাশনাল পার্কে ২ জন ছিল।[৩৩] যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনাগুলো সাধারণত নিউ মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলের পল্লি এলাকায়, উত্তর অ্যারিজোনা, দক্ষিণ কলোরাডো, ক্যালিফোর্নিয়া, দক্ষিণ অরেগন ও দূরের পশ্চিম নেভাডায় হয়।[৩৪] ২০১৭ সালের নভেম্বরে, মাদাগাস্কার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে প্লেগ প্রাদুর্ভাব নিয়ে প্রতিবেদন পেশ করে যেখানে ওই দেশে সাম্প্রতিক যে কোনো প্রাদুর্ভাবের তুলনায় রোগী ও মৃতের সংখ্যা বেশি ছিল। তবে অধিকাংশ রোগীই বিউবনিকের পরিবর্তে নিউমোনিক প্লেগে আক্রান্ত ছিল।[৩৫]

সমাজ ও সংস্কৃতি

প্লেগ রোগটি প্রথম দেখা দেওয়ার পর থেকে এর প্রাদুর্ভাবের সাথে সম্পর্কিত মৃত্যুর মাপকাঠি ও সামাজিক অভ্যুত্থানের বিষয়টি ঐতিহাসিক ও গল্পের বর্ণনায় প্রধান বিষয় হিসেবে স্থান পেয়েছে। চসার, বোক্কাচ্চো, পেত্রার্কের কাজসহ অনেক সমসাময়িক উৎসে বর্ণিত ও উল্লেখিত ব্ল্যাক ডেথ ওয়েস্টার্ন ক্যাননের অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। বোকাচ্চোর লেখা দ্যা দেকামেরোন নামক গল্প গ্রন্থটি একটা ফ্রেম স্টোরির (যেখানে এক গল্পের মধ্যে দ্বিতীয় আরেকটি গল্প বলা হয়) জন্য বিখ্যাত যেখানে একজন ব্যক্তির গল্প বলা হয়েছে যে ব্ল্যাক ডেথের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ইতালির ফ্লোরেন্স শহর থেকে পালিয়ে নির্জন গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। প্লেগের বছরগুলোতে জীবিত ছিলেন এমন ব্যক্তির মুখ থেকে বর্ণনাকৃত চাঞ্চল্যকর কাহিনিমূলক ঘটনা বিভিন্ন শতাব্দী ও সংস্কৃতিতে খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। পরবর্তী কাজসমূহ যেমন আলবেয়ার কামুর উপন্যাস দা প্লেগ অথবা ইংমার বারিমান-এর চলচ্চিত্র দ্য সেভেন্থ সিল –এ প্রেক্ষাপট হিসেবে মধ্যযুগীয় বা আধুনিক সময়ের কোনো শহরে বিউবনিক প্লেগকে দেখানো হয়েছে, যেটার মূলবক্তব্য হল প্লেগের সময় বিভিন্ন সমাজ, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ভাঙন, মৃত্যুর সাথে সাংস্কৃতিক ও মানসিক অস্তিত্বের লড়াই এবং সময়াময়িক নৈতিক ও আধ্যাতিক প্রশ্নের ব্যাপারে প্লেগের রূপকাশ্রয়ী ব্যবহার।

বায়োলজিক্যাল যুদ্ধ

প্লেগকে বায়োলজিক্যাল যুদ্ধের প্রাথমিক উদাহরণ হিসেবে গণ্য করা হয় কারণ চতুর্দশ শতাব্দীতে সৈন্যরা প্লেগ মহামারী ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শহর ও গ্রামের দেওয়ালের ওপারে প্লেগে আক্রান্ত মৃতদেহগুলোকে নিক্ষেপ করতো। পরবর্তীতে দ্বিতীয় চীন-জাপানযুদ্ধে রাজকীয় জাপানি সৈন্যরা প্লেগকে ব্যাক্টেরিয়াজনিত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। এগুলো সরবরাহ করেছিল জাপানি আর্মির মেডিকেল অফিসার ও মাইক্রোবায়োলজিস্ট শিরো ইশির ইউনিট ৭৩১ যা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের পূর্বে মানবশরীরে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল।উদাহরণস্বরূপ, ১৯৪১ সালে, রাজকীয় জাপানি বিমানবাহিনী চীনের নিংবো শহরে বিউবনিক প্লেগ জীবাণু বহনকারী মক্ষিকার বোমা ছুড়েছিল।[৩৬] খাবারোভস্ক যুদ্ধাপরাধ বিচার-এর সময় অভিযুক্ত যেমন মেজর জেনারেল কিয়াশি কাওয়াশিমা সাক্ষ্য দেন যে, ১৯৪১ সালে, ইউনিট ৭৩১ এর ৪০ জন সদস্য চীনের চ্যাংদ এলাকায় প্লেগবাহী মক্ষিকা নিক্ষেপ করেছিল যা পরে ঐ এলাকায় প্লেগ মহামারী ছড়ায়।[৩৭]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. World Health Organization (নভেম্বর ২০১৪)। "Plague Fact sheet N°267"। ২৪ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১৫ 
  2. "Plague Symptoms"। ১৩ জুন ২০১২। ১৯ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৫ 
  3. Prentice MB, Rahalison L (২০০৭)। "Plague"। Lancet369 (9568): 1196–207। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(07)60566-2পিএমআইডি 17416264 
  4. "Plague Resources for Clinicians"। ১৩ জুন ২০১২। ২১ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৫ 
  5. "Plague Ecology and Transmission"। ১৩ জুন ২০১২। ২২ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৫ 
  6. Keyes, Daniel C. (২০০৫)। Medical response to terrorism : preparedness and clinical practice। Philadelphia [u.a.]: Lippincott Williams & Wilkins। পৃষ্ঠা 74। আইএসবিএন 9780781749862 
  7. "Plague History"। ১৩ জুন ২০১২। ২১ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৫ 
  8. LeRoux, Neil (২০০৭)। Martin Luther As Comforter: Writings on Death Volume 133 of Studies in the History of Christian Traditions। BRILL। পৃষ্ঠা 247। আইএসবিএন 9789004158801 
  9. Edman, Bruce F. Eldridge, John D. (২০০৪)। Medical Entomology a Textbook on Public Health and Veterinary Problems Caused by Arthropods (Rev.. সংস্করণ)। Dordrecht: Springer Netherlands। পৃষ্ঠা 390। আইএসবিএন 9789400710092 
  10. "Symptoms of Plague"Brief Overview of Plague। iTriage। Healthagen, LLC। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৪ 
  11. Inglesby TV, Dennis DT, Henderson DA ও অন্যান্য (মে ২০০০)। "Plague as a biological weapon: medical and public health management. Working Group on Civilian Biodefense"JAMA283 (17): 2281–90। ডিওআই:10.1001/jama.283.17.2281পিএমআইডি 10807389 
  12. "Plague, Laboratory testing"Health Topics A to Z। ১৭ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০১০ 
  13. "Plague - Diagnosis and treatment - Mayo Clinic"www.mayoclinic.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০১ 
  14. "Plague"। ৫ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  15. "Plague"। Healthagen, LLC। ৬ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১১ 
  16. Echenberg, Myron (2002). Pestis Redux: The Initial Years of the Third Bubonic Plague Pandemic, 1894–1901. Journal of World History, vol 13,2
  17. Little, Lester K. (2007). "Life and Afterlife of the First Plague Pandemic." In: Little, Lester K. editor. (2007), Plague and the End of Antiquity: The Pandemic of 541–750. Cambridge University Press. (2007). আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫২১-৮৪৬৩৯-৪ pp. 8–15
  18. McCormick, Michael (2007). "Toward a Molecular History of the Justinian Pandemic." In: Little, Lester K. editor. (2007), Plague and the End of Antiquity: The Pandemic of 541–750. Cambridge University Press. (2007). আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫২১-৮৪৬৩৯-৪ pp. 290–312.
  19. Rosen, William (2007), Justinian's Flea: Plague, Empire, and the Birth of Europe ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে. Viking Adult; pg 3; আইএসবিএন ৯৭৮-০-৬৭০-০৩৮৫৫-৮.
  20. Moorshead Magazines, Limited. "The Plague Of Justinian." History Magazine 11.1 (2009): 9–12. History Reference Center
  21. Cohn, Samuel K.(2002). The Black Death: End of a Paradigm. American Historical Review, vol 107, 3, pg. 703–737
  22. Sean Martin (২০০১)। Black Death:Chapter One। Harpenden, GBR:Pocket Essentials। পৃষ্ঠা 14 
  23. Nicholas Wade (৩১ অক্টোবর ২০১০)। "Europe's Plagues Came From China, Study Finds"The New York Times। ৪ নভেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১০The great waves of plague that twice devastated Europe and changed the course of history had their origins in China, a team of medical geneticists reported Sunday, as did a third plague outbreak that struck less harmfully in the 19th century. 
  24. Benedict, Carol (১৯৯৬)। Bubonic plague in nineteenth-century China। Stanford, Calif.: Stanford Univ. Press। আইএসবিএন 978-0804726610 
  25. Cohn, Samuel K. (২০০৩)। The Black Death Transformed: Disease and Culture in Early Renaissance Europe। A Hodder Arnold। পৃষ্ঠা 336। আইএসবিএন 0-340-70646-5 
  26. Pryor, E. G. (১৯৭৫)। "The Great Plague OF Hong Kong" (পিডিএফ)Journal of the Royal Asiatic Society Hong Kong Branch। Hong Kong: Royal Asiatic Society of Great Britain and Ireland-Hong Kong Branch15: 69। আইএসএসএন 1991-7295। সংগ্রহের তারিখ জুন ২, ২০১৪ 
  27. "History | Plague | CDC"www.cdc.gov (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৭ 
  28. Porter, Dorothy (২০০৩-০৯-১১)। "Book Review"New England Journal of Medicine349 (11): 1098–1099। আইএসএসএন 0028-4793ডিওআই:10.1056/NEJM200309113491124 
  29. "On This Day: San Francisco Bubonic Plague Outbreak Begins"www.findingdulcinea.com। ২০১৭-১২-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-২৫ 
  30. Griggs, Mary Beth। "30,000 People In Quarantine After Bubonic Plague Kills One in China"Smithsonian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-২৫ 
  31. "Maps and Statistics | Plague | CDC"www.cdc.gov (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-১০-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০১ 
  32. Filip, Julia। "Avoiding the Black Plague Today"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৪-১১ 
  33. Regan, Michael। "Human Plague Cases Drop in the US"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-০১ 
  34. "Plague in the United States | Plague | CDC"www.cdc.gov (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-১০-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-০১ 
  35. "Emergencies Preparedness, Response, Plague, Madagascar, Disease Outbreak News | Plague | CDC"www.who.int (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-১১-১৫। ২০২০-০৭-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-১৫ 
  36. "The Independent - 404"The Independent। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  37. Daniel Barenblatt, A Plague upon Humanity., 2004, pages 220–221.

আরো পড়ুন

বহিঃসংযোগ

শ্রেণীবিন্যাস
বহিঃস্থ তথ্যসংস্থান

টেমপ্লেট:Gram-negative bacterial diseases

Read other articles:

  لمعانٍ أخرى، طالع بني جيش (توضيح). قرية بنى جيش  - قرية -  تقسيم إداري البلد  اليمن المحافظة محافظة حجة المديرية مديرية الشغادرة العزلة عزلة قلعة حميد السكان التعداد السكاني 2004 السكان 483   • الذكور 248   • الإناث 235   • عدد الأسر 59   • عدد المساكن 61 م...

 

Adi Martis in 2023 Adi Martis (Sint Nicolaas, Aruba, 1944)[1] is een Arubaans-Nederlandse kunsthistoricus, historicus en conservator. Hij was universitair hoofddocent aan het Kunsthistorisch Instituut van de Universiteit Utrecht. Levensloop Martis vertrok op vijftienjarige leeftijd naar Nederland en studeerde aan de Kweekschool voor onderwijzers te Zeist.[1] Van 1964 tot 1969 studeerde hij aan de Academie van Schone Kunsten in Amsterdam.[2] Na drie jaar in het ond...

 

Bleek dikkopmos Bleek dikkopmos Taxonomische indeling Rijk:Plantae (Planten)Stam:Bryophyta (Mossen)Klasse:BryopsidaOrde:HypnalesFamilie:Brachytheciaceae (dikkopmosfamilie)Geslacht:Brachythecium (dikkopmos) Soort Brachythecium albicans(Hedw.) Schimp. Afbeeldingen op Wikimedia Commons Bleek dikkopmos op Wikispecies Portaal    Biologie Het bleek dikkopmos (Brachythecium albicans) is een soort mos van het geslacht dikkopmos (Brachythecium). Het is een algemeen mos op bij voorkeur iets v...

Reprezentacja Bahrajnu w piłce nożnej Przydomek الأحمر, Al-Ahmar (Czerwoni) Związek Bahrajński Związek Piłki Nożnej (الاتحاد البحريني لكرة القد) Sponsor techniczny Macron Trener Juan Antonio Pizzi Asystent trenera Ahmed Al AmreiJose Alexander Carneiro Skrót FIFA BHR Ranking FIFA 85. (1289.25 pkt.)[a] Miejsce w rankingu Elo 101. (10 lipca 2016) (1414 pkt.) Zawodnicy Najwięcej występów Abdulrazzaq Mohamed (102) Najwięcej bramek A'ala Hubail (30) Strojedo...

 

Beberapa contoh kereta wisata komersial di Indonesia. Di Indonesia, kereta wisata komersial (disingkat Kawis) adalah kereta penumpang yang digunakan untuk keperluan khusus, yakni untuk pariwisata. Kereta api wisata komersial di Indonesia dioperasikan oleh anak perusahaan dari PT Kereta Api Indonesia (Persero) (PT KAI), yakni PT KAI Wisata yang dibentuk tahun 2009.[1] Sejarah Masa Orde Lama Keberadaan kereta wisata di Indonesia sebenarnya tak lepas dari sejarah penamaan kereta api luar...

 

Dutch astronomer (1921–2021) In this Dutch name, the surname is de Jager, not Jager. Kees de JagerKees de Jager in 1967BornCornelis de Jager(1921-04-29)29 April 1921Den Burg, Texel, NetherlandsDied27 May 2021(2021-05-27) (aged 100)Den Burg, Texel, NetherlandsNationalityDutchAlma materUtrecht UniversitySpouseDoetie RienksScientific careerFieldsAstrophysicsclimate changeInstitutionsUtrecht UniversityDoctoral advisorMarcel Minnaert Cornelis Kees de Jager (pronounced [ˈkeːz də ...

Golf tournament Golf tournament150th Open ChampionshipTournament informationDates14–17 July 2022LocationSt Andrews, Scotland56°20′35″N 2°48′11″W / 56.343°N 2.803°W / 56.343; -2.803Course(s)Old CourseOrganized byThe R&ATour(s) European Tour PGA Tour Japan Golf Tour StatisticsPar72Length7,297 yd (6,672 m)Field156 players, 83 after cutCut144 (E)Prize fund$14,000,000Winner's share$2,500,000Champion Cameron Smith268 (−20)Location MapSt AndrewsL...

 

This article uses bare URLs, which are uninformative and vulnerable to link rot. Please consider converting them to full citations to ensure the article remains verifiable and maintains a consistent citation style. Several templates and tools are available to assist in formatting, such as reFill (documentation) and Citation bot (documentation). (September 2022) (Learn how and when to remove this template message) Sunwise Turn Bookstore at its original location at 2 E. 31st. St. circa 1916. Ph...

 

Honest signalling of an animal's powerful defences The bright colours of this granular poison frog signal a warning to predators of its toxicity. The honey badger's reverse countershading makes it conspicuous, honestly signalling its ability to defend itself through its aggressive temperament and its sharp teeth and claws. Aposematism is the advertising by an animal to potential predators that it is not worth attacking or eating.[1] This unprofitability may consist of any defenses whi...

Muffin InggrisSepotong muffin InggrisNama lainMuffin sarapanJenisRotiSajianRotiTempat asalAmerika SerikatBahan utamatepung gandum, shortening, susu, gula, ragi  Media: Muffin Inggris Muffin Inggris adalah sebuah roti berragi datar, bundar dan kecil yang umum dipotong horizontal, dipanggang, dan diberi mentega.[1] Muffin Inggris panggang, yang sering dipakai di Amerika Serikat sebagai sarapan, disajikan dengan topping manisan – selai atau madu – atau topping asin – telur...

 

This article relies excessively on references to primary sources. Please improve this article by adding secondary or tertiary sources. Find sources: Long Beach Open – news · newspapers · books · scholar · JSTOR (June 2011) (Learn how and when to remove this template message) The Long Beach Open was a golf tournament on the PGA Tour. It was held in Long Beach, California at the Virginia Country Club from 1926 to 1930 and at the Lakewood Country Club fro...

 

Indian politician This article does not cite any sources. Please help improve this article by adding citations to reliable sources. Unsourced material may be challenged and removed.Find sources: Rajkumar Rai – news · newspapers · books · scholar · JSTOR (March 2019) (Learn how and when to remove this template message) Raj Kumar Rai Raj Kumar Rai was a Lok Sabha member from 1984 to 1989 representing Ghosi. He was also a member of the Uttar Pradesh Legis...

Eastern region of the Indian state of Maharashtra Vidarbha (Pronunciation: [ʋid̪əɾbʱə]) is a geographical region in the east of the Indian state of Maharashtra and a proposed state of western India, comprising the state's Amravati and Nagpur divisions. Amravati Division's former name is Berar (Varhad in Marathi).[1][2] It occupies 31.6% of the total area and holds 21.3% of the total population of Maharashtra.[3] It borders the state of Madhya Pradesh to the north...

 

Some of this article's listed sources may not be reliable. Please help this article by looking for better, more reliable sources. Unreliable citations may be challenged or deleted. (March 2016) (Learn how and when to remove this template message) 1995 video gameThe Amazing Spider-Man: Lethal FoesCover artDeveloper(s)Argent[1][2]Publisher(s)Epoch Co.Designer(s)Takaki Kobayashi Akira Ohtaka Keita Abe Shinobu NakabachiComposer(s)Shoji Tomii[3] Minoru Endo Makoto Igarashi ...

 

Flag of MasuriaAdopted1829DesignDivided into blue, white, and red stripes The flag that is used as the symbol of Masuria, a region in Poland, and the Masurian people, is divided horizontally into three stripes, that are, blue, white, and red. It was created in 1829, and popularly used until 1945, ever since existing as an obscure symbol, with some modern attempts of its revival. Design The flag was divided horizontally into three equally-sized stripes, blue, white, and red.[1][2&#...

Охоронні категорії МСОП Сибірський тигр, підвид тигра. Тигри — вид тварини, що вимирає, а сибірський тигр перебуває під критичною загрозою. Види під загрозою вимирання (англ. endangered species - EN) — біологічні види, які є під загрозою вимирання через свою малу чисельніст...

 

2006 remix album by ChampionThe Remix AlbumRemix album by ChampionReleased2006GenreDance musicLabelSaboteur RecordsChampion chronology Chill'em All(2004) The Remix Album(2006) Live(2007) The Remix Album is an album by Champion, released in 2006 on Saboteur Records. The album collects remixes by various Canadian musicians of tracks from Champion's 2004 debut album Chill'em All. The album was nominated for Dance Recording of the Year at the 2007 Juno Awards, but lost to Tiga's album Sex...

 

Russian artist Maya KopitsevaBornMaya Kuzminichna KopitsevaMay 18, 1924Gagry, Abkhazia, USSRDiedJune 6, 2005Saint Petersburg, RussiaNationalityRussianEducationRepin Institute of ArtsKnown forPaintingMovementRealismAwardsHonored Artist of the RSFSR Maya Kuzminichna Kopitseva (Russian: Ма́йя Кузьми́нична Копы́тцева; May 18, 1924 – June 6, 2005) was a Soviet Russian still-life painter and an Honored Artist of the RSFSR who lived and worked in Leningrad - Saint P...

Overview of the Genocide of Christians by the Islamic State of Iraq and the Levant This article's factual accuracy is disputed. Relevant discussion may be found on the talk page. Please help to ensure that disputed statements are reliably sourced. (February 2023) (Learn how and when to remove this template message) Persecution of Christians by ISILPart of Syrian civil war War in Iraq (2013–2017) Sinai insurgency Terrorism in EgyptLocation Iraq Egypt Syria LibyaDateOngoingTarg...

 

Christian cemetery in Pakistan Gora Qabaristan The cross at the entrance gate The Gora Qabaristan (Urdu: گورا قبرِستان; also spelled as Gora Kabristan), or Gora Cemetery, literally transliterated as White (man's) graveyard[1] is Karachi, Pakistan's only operational Christian cemetery. History The original consecration of the Karachi Christian Cemetery was in 1845 during colonial rule but there is a tombstone set in the wall near the main gate of the cemetery bearing the da...

 

Strategi Solo vs Squad di Free Fire: Cara Menang Mudah!