প্রাকৃতিক উপগ্রহ একটি জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বা মহাকাশীয় বস্তু যা কোনো একটি গ্রহ বা তার থেকে বড় অন্য কোন বস্তুকে কেন্দ্রকে করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান থাকে এবং অবশ্যই যা মানব সৃষ্ট নয়। এ ধরনের বস্তুকে সাধারণত বা মাঝেমাঝেই চন্দ্র হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই সংজ্ঞাটির উপর ভিত্তি করে একটি তারা চতুর্দিকে ঘূর্ণায়মান কোন গ্রহ বা কোন ছায়াপথের কেন্দ্রকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান কোন তারাকেও এই শ্রেণিতে ফেলা যায়, অবশ্য এই ব্যবহারটি সচরাচর করা হয় না। সকল ক্ষেত্রেই কোন গ্রহ, বামন গ্রহ বা ক্ষুদ্র গ্রহ-এর সাথে প্রাকৃতিকভাবে বিরাজমান বস্তুগুলোকে প্রাকৃতিক উপগ্রহ বলা হয়ে থাকে।
পার্থিব চাঁদ, পৃথিবী-নিকটস্থ অন্যান্য বস্তুসমূহ; মঙ্গল গ্রহের ফোবোস, ডিমোস; বৃহস্পতি গ্রহের গ্যানিমিড, ক্যালিস্টো, আয়ো, ইউরোপা সহ মোট ৭৯টি; শনি গ্রহের টাইটান, রিয়া, ইয়াপেটাস, ডায়োন, টেথিস, এনসেলাডাস, মাইমাস, হাইপেরিয়ন, ফোব সহ মোট ৮২টি; ইউরেনাস গ্রহের টাইটানিয়া, ওবেরন, আমব্রিয়েল, এরিয়েল, মিরান্ডা সহ মোট ২৭টি; নেপচুন গ্রহের ট্রাইটন, প্রোটেয়াস, নেরেইড সহ মোট ১৪টি; প্লুটো এর ক্যারন, নিক্স, হাইড্রা, কারবেরোস, স্টিক্স, এরিস, ডিসনোমিয়া, হাউমেয়া, হিʻইয়াকা, নামাকা, মাকেমাকে, এস/২০১৫ (১৩৬৪৭২) ১ ইত্যাদি সৌরজগতের প্রাকৃতিক উপগ্রহ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা– গ্রহের জন্মের সময় একএকটি নক্ষত্র কে ঘিরে কয়েকটি মহাজাগতিক মেঘ আবর্তিত হতো। এরা নক্ষত্রের আকর্ষণে ঘনীভূত হয়ে অবশেষে জমাট বেঁধে গ্রহে রূপান্তরিত হয়। আবার, এভাবেই গ্রহের চারপাশে জমা মহাজাগতিক মেঘ থেকেই উপগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এসব উপগ্রহ গুলো হলো প্রাকৃতিক উপগ্রহ।
সৌর জগতের উপগ্রহসমূহ
সৌর জগতের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৪০ টি প্রাকৃতিক উপগ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬২ টি উপগ্রহ গ্রহকে কেন্দ্র করে ঘুরছে,[১] ৪ টি উপগ্রহ ঘূর্ণায়মান আছে বামন গ্রহ-কে কেন্দ্র করে এবং অন্যগুলো ক্ষুদ্র সৌর জাগতিক বস্তু-কে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান আছে। অন্যান্য তারা এবং তাদের গ্রহদেরও উপগ্রহ রয়েছে।