তাক্রিদি (অনু. ভয় করো না) ককবরক ভাষায় নির্মিত বাংলাদেশী নাট্য চলচ্চিত্র। সজীব ত্রিপুরা নির্মিত কাহিনিচিত্রটি ককবরক বা ত্রিপুরা ভাষায় নির্মিত প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।[২][৩] ত্রিপুরা ফিল্মস প্রোডাকশনের ব্যানারে খাগড়াছড়ির সিন্দুকছড়িতে চলচ্চিত্রায়িত, ছবিটি দুই যুবক যুবতীর প্রেম, স্থানীয় বৈরিতার পাশাপাশি ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর জীবনাচার ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে দেখানো হয়েছে।[৪] ছবিটি ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের খাগড়াছড়িতে মুক্তি দেয়া হয়।[৩] আনুষ্ঠানিক মুক্তির পর চলচ্চিত্রটি স্থানীয় চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়।[১]
কাহিনিসংক্ষেপ
খাগড়াছড়ির ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী মাঝে 'সুকৈ' নামে একটি বিশেষ খেলার প্রচলন আছে। এই খেলা নিয়ে হাতং এবং হাপৈং নামের দুটি পাহাড়ি গ্রামের মধ্যে উদ্দীপনা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। খেলায় হারজিত নিয়ে দুইপাড়ায় মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এই বিবাদের মাঝে হাতং গ্রামের যুবক বখ্রৈয়ের সাথে হাপৈং গ্রামের যুবতি বেত্রাং-এর প্রেম হয়। দুই পাড়ার ঝগড়ার কারণে তাদের প্রেম নিয়ে তারা শঙ্কিত। একটা সময় পর তাদের প্রেমের পরিণতিকে স্থায়ীবন্ধন হিসেবে স্বীকৃতি দিতে দুইপাড়ার মানুষকে বিবাদ ভুলে একত্রিত হয়। তাদের প্রেম দুই গ্রামের মধ্যে আবারো শান্তি ফিরিয়ে আনে।
কুশীলব
চলচ্চিত্রের সকল অভিনয়শিল্পী ত্রিপুরা নৃ গোষ্টির সদস্য। মুখ্য চরিত্রের শিল্পীরা হলেন-
বখ্রৈয়ের চরিত্রে অর্ণব ত্রিপুরা
বেক্রাং-এর চরিত্রে চেলসি ত্রিপুরা
বিশেষত্ব
তাক্রিদি ত্রিপুরা নৃ গোষ্ঠীর মাতৃভাষা ককবরকে বানানো প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।[২] ছায়াছবির কাহিনি বর্ণনায় ত্রিপুরাদের বিভিন্ন উৎসব, সংস্কৃতি, ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, নিজস্ব প্রকৃতি পূজা, অর্চনা, জুম চাষ, বিয়ে প্রথা, গ্রামীণ রাজনীতি ও রীতি, সমাজ ব্যবস্থা, প্রাত্যহিক কাজ এবং জীবনাচার এসেছে। বিশেষ করে তাদের ঐতিহ্যগত 'সুকৈ' খেলা,[৪] গরয়া নৃত্য ও কাথারক নৃত্য'র মত ক্রীড়া ও বিনোদনের বিষয়গুলি প্রাধান্য পেয়েছে। চলচ্চিত্রটি ত্রিপুরা সংস্কৃতি ও জীবন-যাপনের প্রামাণ্য উদাহরণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য।[২]
মুক্তি ও প্রদর্শনী
তাক্রিদি ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে আনুষ্ঠানিক মুক্তি দেয়া হয়।[২] এছাড়াও চলচ্চিত্রটি একইবছর ৪ নভেম্বর রাঙ্গামাটিতে অনুষ্ঠিত পঞ্চম পাহাড় চলচ্চিত্র উৎসবে 'ফিচার ফিকশন' বিভাগে প্রদর্শিত হয়।[১][৫]