টিচ ফ্রিম্যান
আনুমানিক ১৯৩০ সালে চার্লি রাইটের সাথে টিচ ফ্রিম্যান (ডানে) |
|
পূর্ণ নাম | আলফ্রেড পার্সি ফ্রিম্যান |
---|
জন্ম | (১৮৮৮-০৫-১৭)১৭ মে ১৮৮৮ লুইসহাম, কেন্ট, ইংল্যান্ড |
---|
মৃত্যু | ২৮ জানুয়ারি ১৯৬৫(1965-01-28) (বয়স ৭৬) বিয়ারস্টিড, কেন্ট, ইংল্যান্ড |
---|
ডাকনাম | টিচ |
---|
উচ্চতা | ৫ ফুট ২ ইঞ্চি (১.৫৭ মিটার) |
---|
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি |
---|
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি লেগ ব্রেক |
---|
ভূমিকা | বোলার |
---|
|
জাতীয় দল | |
---|
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২২২) | ১৯ ডিসেম্বর ১৯২৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া |
---|
শেষ টেস্ট | ১৭ আগস্ট ১৯২৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা |
---|
|
---|
|
বছর | দল |
১৯১৪-১৯৩৬ | কেন্ট |
---|
|
---|
|
প্রতিযোগিতা |
টেস্ট |
এফসি |
---|
ম্যাচ সংখ্যা |
১২ |
৫৯২ |
রানের সংখ্যা |
১৫৪ |
৪,৯৬১ |
ব্যাটিং গড় |
১৪.০০ |
৯.৫০ |
১০০/৫০ |
০/১ |
০/৪ |
সর্বোচ্চ রান |
৫০* |
৬৬ |
বল করেছে |
৩,৭৩২ |
১৫৪,৩১২ |
উইকেট |
৬৬ |
৩,৭৭৬ |
বোলিং গড় |
২৫.৮৬ |
১৮.৪২ |
ইনিংসে ৫ উইকেট |
৫ |
৩৮৬ |
ম্যাচে ১০ উইকেট |
৩ |
১৪০ |
সেরা বোলিং |
৭/৭১ |
১০/৫৩ |
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং |
৪/– |
২৩৮/১ | |
|
---|
|
আলফ্রেড পার্সি ফ্রিম্যান (ইংরেজি: Tich Freeman; জন্ম: ১৭ মে, ১৮৮৮ - মৃত্যু: ২৮ জানুয়ারি, ১৯৬৫) কেন্টের লুইসহাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্টের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ‘টিচ’ ডাকনামে পরিচিত টিচ ফ্রিম্যান। দলে তিনি মূলতঃ লেগ স্পিন বোলিং করতেন। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এক ইংরেজ মৌসুমে ৩০০ উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখিয়েছেন।[১] এছাড়াও, প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বাধিক নিয়মিতভাবে উইকেট লাভের অধিকারী তিনি।[২][৩][৪][৫]
খেলার ধরন
ফ্রিম্যানের আরও দুই ভাই এসেক্সের পক্ষে খেলেছেন। ফ্রিম্যানের সাধারণ নামটি এসেছে তার ছোট-খাটো প্রকৃতির শারীরিক অবকাঠামো থেকে। তিনি মাত্র পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি বা ১৫৮ সেন্টিমিটার উচ্চতার অধিকারী ছিলেন। তবে, শক্তিধর আঙ্গুলগুলোর সাহায্যে বেশ বিরাট বোলিং দমে বোলিংয়ে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। তার উচ্চতার কারণে ব্যাটসম্যানের কাছে আসার পূর্বেই ডেলিভারীগুলো ফুল টসে পরিণত হতো। এরফলে ব্যাটসম্যানেরা সোজা ব্যাট চালনায় বল মোকাবেলায় সক্ষম হতেন না। লেগ ব্রেক বোলিংয়ের জন্য মাঝামাঝি ও লেগের দিকে বল ফেলতেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
১৯২২-২৩ মৌসুম থেকে ১৯২৮-২৯ মৌসুম পর্যন্ত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[৬][৭] এ সময়ে তিনি এমসিসি দলের সঙ্গে ১৯২২-২৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড, ১৯২৭-২৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ১৯২৮-২৯ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন।
১৯১০-এর দশকের শুরুর দিকে ক্লাব ক্রিকেটে খেললেও ১৯১৪ সালে কেন্টের সাথে জড়িত হন। দ্বিতীয় একাদশে সফলতা লাভের পর কাউন্টি দলে ঐ মৌসুমের শেষ দিক থেকে নিয়মিতভাবে খেলতে থাকেন। কিন্তু, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ঘনঘটায় বেশ কয়েক বছর কাউন্টি ক্রিকেটে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে ৭/২৫ লাভের প্রেক্ষিতে ফ্রিম্যানের সম্ভাবনার কথা জানান দেয়। ১৯১৯ সালে ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হলে তিনি দ্রুত নিজের উত্তরণ ঘটাতে থাকেন। ১৯১৯ সালের স্বল্পকালীন মৌসুমে ৬০ উইকেট পান। ১৯২০ সালে ১০২, ১৯২১ সালে ১৬৬ ও ১৯২২ সালে ১৯৪ উইকেট পান। ১৯২৩ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন। তন্মধ্যে, ১৯২২ সালে বৃষ্টিবিঘ্নিত পীচে সাসেক্সের বিপক্ষে ১৭/৬৭ পেয়েছিলেন তিনি।[৮]
১৯২৪ সালে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৬/৫২ লাভ করায় অস্ট্রেলিয়া সফরে এমসিসি’র সদস্য মনোনীত হন। তবে, বেশ শক্ত পিচ ও অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের চমৎকার পায়ের কারুকাজের ফলে দুই টেস্টে ফ্রিম্যান বেশ নাকানি-চুবানি খান। অবশ্য পরবর্তী তিন বছর কেন্টের প্রধান বোলিং মেরুদণ্ড ছিলেন তিনি। তবে, কেবলমাত্র ১৯২৭-২৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই সুবিধা লাভ করেন।[৯]
১৯২৮ সালে ফ্রিম্যানের সর্বাপেক্ষা সফলতম মৌসুম অতিবাহিত হয়। ৩০৪টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট লাভ করে রেকর্ড গড়েন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন টেস্টে ২২ উইকেট নেন। ১৯২৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টে ২২ উইকেট পেলেও পঞ্চম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানেরা তার উপর খবরদারিত্ব করে। ঐ টেস্টে ৪৯ ওভার বোলিং করে ১৬৯ রান দিলেও কোন উইকেট লাভে ব্যর্থ হন। ফলশ্রুতিতে ঐ টেস্টটি তার সর্বশেষ টেস্টে রূপান্তরিত হয়।
১৯৩০ সালে ইলেকস্টোনে ডার্বিশায়ারের বিপক্ষে ৯/৫০ ও খেলায় ১২/২১০ পান।[১০] ঐ বছর অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে বেশ ভালো করলেও নিজ দেশে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ সিরিজে দলের সদস্যতা লাভে সক্ষম হননি। খেলায় তিনি ৫/৭৮ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান।
অর্জনসমূহ
১৯২৮ থেকে ১৯৩৩ সময়কালে ধারাবাহিক ছয় মৌসুমে ১৬৭৩ উইকেট তুলে নেন। প্রত্যেক মৌসুমেই ২৫০-এর অধিক উইকেট পান। ১৯০১ সালের পর অন্য কোন বোলার একবারই এ অর্জনের সাথে নিজের নাম জড়িয়ে রেখেছেন।[১১] ১৯২৯, ১৯৩০ ও ১৯৩১ সালে তিনবার এক ইনিংসে দশ উইকেট পেয়েছেন।[১২][১৩][১৪] ১৯২২ ও ১৯৩২ সালে দুইবার খেলায় সতেরো উইকেট পেয়েছেন।[১৫][১৬] ১৯২৮, ১৯৩০ ও ১৯৩৩ সালে তিনবার সর্বাধিক বোলিং করেছেন। খেলায় দশ বা ততোধিক উইকেট পেয়েছেন ১৪০বার। নিকটতম অবস্থানকারী চার্লি পার্কারের তুলনায় ৫০% এগিয়ে রয়েছেন তিনি। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে এক ইনিংসে দশ উইকেট লাভকারী বোলারদের অন্যতম তিনি। এ তালিকায় উইলফ্রেড রোডসের পরই তিনি অবস্থান করছেন। এছাড়াও এ তালিকায় চার্লি পার্কার, জে. টি. হার্ন, টম গডার্ড, ডব্লিউ. জি. গ্রেস ও অ্যালেক কেনেডি রয়েছেন।
৩,৭৭৬টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেটের ৪৮.৬০% কারো সাহায্য ব্যতিরেকেই পেয়েছেন। উইলফ্রেড রোডসের পর প্রথম-শ্রেণীর উইকেট লাভে তার অবস্থান দ্বিতীয়। অনেক খেলার অর্ধেকের বেশি ভূমিকা রেখেছেন তিনি।[২]
অবসর
১৯৪৯ সালে এমসিসি’র আজীবন সদস্য মনোনীত হন তিনি। খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর সতীর্থ জ্যাক হাবলকে সঙ্গে নিয়ে যৌথভাবে খেলার সরঞ্জাম বিক্রয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। অবসরকালীন আবাস স্থান ডানবোলিনে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেন।[১]
২৮ জানুয়ারি, ১৯৬৫ তারিখে কেন্টের বিয়ারস্টিড এলাকায় ৭৬ বছর বয়সে টিচ ফ্রিম্যানের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
আরও দেখুন
বহিঃসংযোগ