জোরপূর্বক গর্ভপাত বলতে কাউকে জোর করে গর্ভপাত, হুমকি বা চাপ দেওয়া, গর্ভধারণ অবস্থায় মতামতে দিতে অক্ষম থাকার সুযোগ নেওয়া ও প্রশ্নবোধক সম্মতিতে গর্ভপাত করানোকে বুঝায়। চিকিৎসা ব্যতীত বা অপ্রয়োজনীয় কারণে সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম করা বা প্রজনন অঙ্গ-এর ক্ষতি করাকেও জোরপূর্বক গর্ভপাত বলা যায়।
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন
গণপ্রজাতন্ত্র চীন-এ এক-সন্তান নীতির কারণে জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটেছে; এটি চীনা আইনের লঙ্ঘন কিন্তু সরকারি নিয়ম নয়।[১] ১৯৯৭ সালের ২৯ শে সেপ্টেম্বর, মার্কিন কংগ্রেসে জোরপূর্বক গর্ভপাত নিষিদ্ধকরণ আইন নামে একটি বিল পেশ করা হয়, যার ফলে " চীনের কমিউনিস্ট পার্টি , গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সরকারের জোরপূর্বক গর্ভপাতে উতসাহ দেওয়া কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করা হয়।[২] ২০১২ সালের জুন মাসে ফেং জিয়ানমিনামক এক মহিলাকে এক সন্তানের নীতি ভঙ্গের জন্য জরিমানা দিতে ব্যর্থ হওয়াতে, জোর করে তার সাত মাসের ভ্রূণকে গর্ভপাত করতে বাধ্য করা হয়েছিল। তার মৃত শিশুটির ছবি ইন্টারনেটে পোস্টের পর তা চিনে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল।[৩]
৫ জুলাই ২০১২, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট একটি রেজোলিউশন পাস করে যাতে বলা হয় যে এটি "তীব্র নিন্দা জানায়" উভয় ফেংয়ের ঘটনায় এবং জোরপূর্বক গর্ভপাতের, বিশেষ করে এক-সন্তানের নীতির কারণে জোরপূর্বক গর্ভপাতকে।[৪] জানুয়ারি ২০১৬ তে চীন দুই সন্তান নীতিতে স্থানান্তর হলেও জোরপূর্বক গর্ভপাত বন্ধ হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র
জোরপূর্বক গর্ভপাত নিয়ে আইন
২০১৬ সালে, মিশিগানের গভর্নর রিক স্নাইডার রাজ্যে জোরপূর্বক গর্ভপাত বন্ধ করার উদ্দেশ্যে দুটি বিল প্রণয়ন করেছিলেন। প্রথম বিলে একজন মহিলাকে গর্ভপাত করানোর জন্য চাপ দেওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছিল এবং দ্বিতীয় বিলে জোরপূর্বক গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।[৫]
যুক্তরাজ্য
২১ জুন ২০১৯ সালে, যুক্তরাজ্যের একটি আদালত এক প্রতিবন্ধী মহিলাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গর্ভপাত করানোর নির্দেশ দেয়।[৬] পরবর্তীতে আপিলের মাধ্যমে তা বাতিল হয়।[৭]
বাংলাদেশ
বাংলাদেশের গর্ভপাত সংক্রান্ত আইন
বাংলাদেশের গর্ভপাত সংক্রান্ত আইনের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এতে একমাত্র গর্ভবতী নারীর জীবন রক্ষার উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য সকল প্রকার গর্ভপাতকে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এমন কি গর্ভবতী নারীর ব্যক্তিগত মতামতকেও গ্রহণযোগ্য করা হয়নি। দণ্ডবিধির ৩১৩ ধারায় বলা আছে, নারীর সম্মতি ছাড়া গর্ভপাত করানো একটি গুরুতর অপরাধ। এর জন্য যাবজ্জীবন বা ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান আছে।