ব্রিটিশ শাসনামলের আনুমানিক ১৯৪৩ সালে প্রথম জগদল গ্রামের অধীনে বর্তমান ৩৯টি গ্রাম নিয়ে জগদল ইউনিয়ন গঠিত হয়। ওই সময়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে "গ্রামসরকার" বলা হত। ১৯৫০ সালে পাকিস্তান শাসনামলে গ্রামসরকারের পদকে "ইউপি চেয়ারম্যান" পদবী ঘোষণা করা হয়। তারপর পর্যায়ক্রমে দানিছ মিয়া, মো. আব্দুল হক গ্রাম সরকারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৭ সালে তৎকালীন পাকিস্তান মহকুমা জুরি বোর্ডের সদস্য মো. আব্দুল হক প্রথম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনোনীত হন এবং তিনিই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর পরবর্তী সময়ে মাহতাবুর রহমান, আ. রাজ্জাক (৩য় বার নির্বাচিত), মোখলেচুর রহমান, লাল মিয়া, কবির মিয়া, আবু ইয়াহিয়া, খায়রুজ্জামান, জনাব আব্দুছ ছালাম, শীবলী আহমেদ বেগ ও বর্তমান চেয়ারম্যান হুমায়ুন রশীদ লাভলু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। জগদল ইউনিয়নের নাম নিয়ে জনশ্রুতি রয়েছে যে, "জগদ্দল" নামক অত্যন্ত দামী পাথরের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় জগদল।
ভাষা ও সংস্কৃতি
হাওরবেষ্টিত ভাটি অঞ্চলের চিরায়ত বৈশিষ্ট্য এখানে বিদ্যমান। এই জনপদের অধিকাংশ মানুষ সুদীর্ঘ কাল ধরে কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত। তাই এদের দৈনন্দিন জীবন ও সংস্কৃতি কৃষির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখানকার মানুষের উচ্চারিত ভাষায় সিলেটের আঞ্চলিক ভাষার প্রভাব বেশি। শিক্ষিত সমাজ সাধারণত চলিতরীতিতে কথা বলে। বিভিন্ন ধরনের গানের আয়োজন বিভিন্ন উপলক্ষ্যে হয়ে থাকে। এলাকায়, পাড়ায় এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষামূলক নাটকের আয়োজন করা হয়ে থাকে। পুরাতন সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয় পালিত হয়ে থাকে। অত্র ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আয়োজিত খেলাধুলার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হাডুডু, পাড়ায় পাড়ায় দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লা ছোট ইত্যাদি। আধুনিক সংস্করণের মধ্যে ক্রিকেট ও ফুটবল অন্যতম। যেসব সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা জগদলে কাজ করছে সেগুলো হলো:
জগদল ইউনিয়নের পশ্চিমে চাপতি হাওর ও এর মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে হেরাচামতি নদী, পূর্বদিকে বয়ে গেছে নলুয়ার হাওর এবং উত্তর-পূর্ব কোণ দিয়ে বয়ে গেছে মহাসিং নদী, খামার খালী নদী।