এই নিবন্ধটি গড়গাঁওয়ের কারেংঘর সম্পর্কে। রংপুরে অবস্থিত কারেংঘর জন্য
তলাতল ঘর দেখুন।
কারেংঘর (অসমীয়া: কাৰেংঘৰ) আহোম স্বর্গদেউদের দ্বারা নির্মিত একটি পিরামিড আকৃতির রাজমহল। অসমর শিবসাগর শহরের থেকে ১৫ কিলোমিটার পূর্বের গড়গাঁওয়ে অবস্থিত।[১] ১৫৪০ সালে স্বর্গদেউ চুক্লেংমুঙ এই ঘরটির নির্মাণ আরম্ভ করেছিলেন।[২] তার পরে প্রমত্ত সিংহই একে ইটে নির্মাণ করেন। ১৭৫২ সালে কারেংঘরটির বিপুলভাবে ক্ষতি হয়। তখন আহোম স্বর্গদেউ রাজেশ্বর সিংহ একে পুনরায় নির্মাণ করান।[১][৩]
নামকরণ
অসমীয়াতে কারেং শব্দটি যেকোনো রাজপ্রসাদকে বোঝায়। অন্যদিকে, গড়গাঁওয়ে থাকা এই রাজকারেংটির নাম কারেং ঘর। এতে ঘর শব্দটি অপ্রয়োজনীয় যদিও এইক্ষেত্রে 'ঘর' শব্দটি একটি বিশেষ রাজকারেং-এর নাম হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে।[৪]
স্থাপত্যবিদ
কারেং ঘরটিতে প্রবেশ করবার জন্য চারটি দরজা আছে। দরজাগুলিকে সিংহ দরজা বলা হয়।[৫] ঘরটির তলায় দুমহলা এবং ওপরে পাঁচ মহলা আছে। তলার মহলা থেকে রংপুরের (বর্তমানের শিবসাগর) তলাতল ঘর পর্যন্ত আসতে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সুরংগ ছিল। এই সুরংগ বর্তমানে বন্ধ হয়ে আছে। কারেং ঘরটির চৌদিকে একটি বহল আলি এবং তার কাছে কাছে তাঁতীর গড় আছে। গড়ের কিছু দূরত্বে কাছে কাছে মাহুত-হাতি তলায় যাওয়া একটি দ খাবৈ আছে। আগে এই গড়খাবৈটিতে বারমাস জল থাকত। কারেং ঘরটি দৈর্ঘ্যে ১২০ হাত এবং প্রস্থে ৩০ হাত।[৪] মিরজুমলা অসম আক্রমণ করতে আসায় তার সাথে আসা বাকনবিশ (বরকাকতী) লিখেছিলেন, "গড়গাঁওয়ের রাজকারেং-এর নিচে কটকটীয়া, ধুনীয়া এবং নানান কারুকার্যে সূশোভিত ঘর গোটা পৃথিবীতে বিরল"। ১২,০০০ অসমীয়া বাঢ়ৈ সম্পূর্ণ একবছরে এই কারেং ঘরটি তৈরি করেছিল। শুরুতে এতে কাঠ-বাঁশের প্রকাণ্ড চাংঘর ছিল। একে হোলোং বলে ডাকা হত। মিরজুমলার সাথে অসমে আসা সিিহাবুদ্দিন তালিসের মতে কারেং ঘরের বর্ণনা হ'ল, "রাজার সোলং (হোলং) ঘরটি দৈর্ঘ্যে ১২০ হাত, প্রস্থে ৩০ হাত; এই ঘরে ৬৬ টা স্তম্ভ। প্রত্যেকটি বিতোপন স্তমে্ভর বেড় বা পরিধি ৪ হাত করে। ঘরটির চালগুলি আচরিত কৌশল খাটিয়ে কাঠের কারুকার্যে সুশোভিত করা। সেই অবস্থা থেকে স্বর্গদেউ রাজেশ্বর সিংহের হাতে আটকধুনীয়া রাজপ্রাসাদে পরিণত হ'ল গড়গাঁওয়ের কারেং ঘর।"[১]
গ্যালারি
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ