অবসরালা কন্যাকুমারীদক্ষিণ ভারতের একজন বেহালা বাদক যিনি কর্ণাটিক সংগীতে বিশেষ পারদর্শী।
পরিচয়
কন্যাকুমারী অন্ধ্র প্রদেশের বিজয়নগরমের বাসিন্দা এবং পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে চেন্নাইতে বসবাস করছেন। তিনি একটি সংগীতশিল্পীদের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা-মা শ্রী অবসরালা রামরথনম এবং শ্রীমতি. জয়লক্ষ্মী তাকে সংগীত অনুসরণ করতে ব্যপকভাবে উৎসাহিত করেছিলেন। তিনি ৩ জন অসাধারণ কিংবদন্তি গুরু, আইভাতুরি ভিজেশ্বর রাও, এম. চন্দ্রশেখরন এবং এম.এল. বসন্তকুমারীর শিষ্য হবার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন।
তিনি যখন তাঁর সংগীত যাত্রা শুরু করেছিলেন তখন তাঁর চমকপ্রদ ব্রিঘ এবং জটিল সংগীতিগুলো শুনে শ্রদ্ধেয় সংগীত সমালোচক সুবুদু তাঁর সংগীতকে দেবী কন্যাকুমারীর নাকফুলের চকচকে হীরক খণ্ডের সাথে তুলনা করেছিলেন। তিনি বিশ্বজুড়ে দর্শকদের কাছ থেকে অসংখ্য প্রশংসা এবং গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন এবং তাঁর উদ্ভাবন, সঙ্গতি এবং একক অভিনয়ের ক্ষেত্রে সমালোচকদের মতামতকে সাদরে গ্রহণ করেছেন। একই সাথে তিনি কর্ণাটিক সংগীত ঐতিহ্যকে কঠোরভাবে মেনে চলেছেন। এটি বলা বাহুল্য যে তাঁর গুরু আইভাতুরি ভিজেশ্বর রাও, এম. চন্দ্রশেখরণ এবং এম. এল. বসন্তকুমারীর সৌহার্দ্যপূর্ণ নির্দেশনার সঙ্গে তাঁর উত্সর্গ এবং আন্তরিক কঠোর পরিশ্রমের সমন্বয় তাকে উঁচুদরের বেহালা বাদকে পরিণত করেছে। তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা এবং সৃজনশীলতার সূক্ষ্মতাবোধ মিলিয়ে তাঁর অর্জিত বিস্তৃত অভিজ্ঞতা ৫ দশকেরও বেশি সময় জুড়ে তাঁকে একটি অন্যতম স্থান অর্জন করেতে সাহায্য করেছে। তিনি যন্ত্র চালনা এবং রেশমতুল্য সুর দ্বারা এমনভাবে নিজস্ব রীতিকে বিকশিত করেছেন যা গায়কী সংগীতের শ্রোতাদেরকে ঘনিষ্ঠভাবে প্রভাবিত করে।
উদ্ভাবন এবং কৃতিত্বপূর্ণ কর্ম
তাঁর কৃতিত্বের ঝুলিতে অসংখ্য সফল সৃজনশীল উদ্ভাবনী কলা রয়েছে। "বাদ্য লাহারি" তাঁরই মস্তিস্কের ফসল, যা বেহালা, বীণা এবং নাদাস্বরমের সমন্বয়ে একটি নতুন কম্বো। "ত্রিস্থায়ী সংঘমম" ভিন্ন ভিন্ন অষ্টকের তিনটি বেহালার সংমিশ্রণ সুর সৃষ্টির ক্ষেত্রে একটি বিশেষ মাত্রার যোগ করেছে। সঙ্গীত সহস্রাব্দের স্মরণে অনুষ্ঠিত ঐকতান-সঙ্গীত "কর্ণাটিক মিউজিক এনসেমবলস" নামক অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করেন। সেখানে ২৫, ৫০, ৭৫ এবং ১০০ বেহালা তথা ১০০ টি উপকরণের সমন্বয়ে ২৯ ঘণ্টার বিরতিহীন ম্যারাথন পারফরম্যান্স করেন। সেখানে পরিবেশিত "১০০ রাগমালিকা স্বরাম" নামক একটি সঙ্গীত তাঁর প্রতিটি অবতারে রাগ স্বরূপম বের করার দক্ষতালে প্রকাশ করে।
তিনি সংগীতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং সর্বশক্তিমান, গুরু, পিতা-মাতা, শিক্ষার্থী, সভা, সমালোচক এবং রসিকদের অব্যাহত সহায়তার জন্য তিনি সর্বদা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। সম্প্রতি তিনি থিরুমালার ৭ টি পাহাড়ের নামের সাথে মিল রেখে ৭ টি রাগ রচনা করেছেন।
পুরস্কার এবং সম্মাননা
এ. কন্যাকুমারী ২০১৬ সালে মাদ্রাজ সংগীত একাডেমির সংগীতা কলানীধি পুরস্কার লাভ করেন। তিনিই এই পুরস্কার প্রাপ্ত প্রথম মহিলা বেহালা বাদক।[১] অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছেঃ
পদ্মশ্রী (চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার) ভারত সরকার কর্তৃক প্রদত্ত, ২০১৫
চেন্নাইয়ের মাদ্রাজ মিউজিক একাডেমি থেকে সম্মানজনক সংগীত কলানিধি পুরস্কার (২০১৬ সালে)
তামিলনাড়ু সরকার থেকে কলাইমণি
অন্ধ্র প্রদেশ সরকার থেকেউগাদি পুরস্কার
এ.আই.আর কর্তৃক শীর্ষ স্থান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড রাজ্যেরসম্মানসূচক নাগরিকত্ব
চেন্নাইয়ের সংগীত একাডেমী থেকেটিটিকে পুরস্কার
শৃঙ্গেরি সারদা পীতম, আহোবিলা মুত্ত এবং অবধূতা পীতমেরআস্থানা বিদুষী
" তিরুপতির শ্রী ত্যাগরাজা ফেস্টিভাল কমিটি থেকে সপ্তগিরি সংগীত বিদ্যামণি
কনসার্টে কন্যাকুমারীর ২৫ বছরের স্মরণেএম.এস শুভলক্ষ্মী তাকেধনুর্বীনা প্রবীণা উপাধি দিয়েছিলেন।
তিনি একজন বহুমুখী মহিলা বেহালা বাদক হিসাবে সঙ্গীতে বিভিন্ন কৃতিত্বের জন্য লিমকা বুক অফ রেকর্ডস ২০০৪ এর জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
শিক্ষাদান
তিনি একজন নিবেদিত শিক্ষক এবং ভারতে এবং বিদেশে অসংখ্য শিক্ষার্থীদেরকে শিখিয়েছেন। তাঁর শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে জনপ্রিয় শিল্পী। তিনি কোনও নির্ধারিত মূল্য ছাড়াই শিক্ষা দেন এবং শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ কোর্সে অংশ নিতে উত্সাহিত করে। তিনি কোন গুরুর কাছ থেকে সরাসরি শেখার সুযোগ নেই এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বেহালা পাঠদান টিউটোরিয়াল ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এই ভিডিওগুলি ক্যানিয়েলেসসন.কম এ কেনার সুযোগ রয়েছে।[৩]