ইয়ান উইলিয়াম গেডেস জনসন, সিবিই (ইংরেজি: Ian Johnson; জন্ম: ৮ ডিসেম্বর, ১৯১৭ - মৃত্যু: ৯ অক্টোবর, ১৯৯৮) ভিক্টোরিয়ার উত্তর মেলবোর্নে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[১] অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৬ মেয়াদে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। এছাড়াও, অস্ট্রেলিয়া দলকে টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন।[২] দলে তিনি মূলতঃ অফ ব্রেক বোলিং করতেন। পাশাপাশি নিচেরসারির কার্যকরী ব্যাটসম্যান হিসেবেও ভূমিকা রেখেছেন ইয়ান জনসন।
প্রারম্ভিক জীবন
তার বাবা উইলিয়াম জনসন মদ ও স্পিরিট বিক্রেতাসহ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার ছিলেন। এছাড়াও তিনি ১৯২৪-২৫ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ান বুশর্যাঞ্জার্সের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেন। এরপর তিনি অস্ট্রেলিয়া টেস্ট দলের নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য হন।[১][৩][৪] বিদ্যালয়ে থাকাকালীন ইয়ান জনসন বেশ কিছু ক্রীড়ায় পারদর্শী ছিলেন। মিডল পার্ক স্টেট স্কুলের পক্ষে অ্যাথলেটিক্স, অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলসহউইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। ১৯৩৬ সালে ভিক্টোরীয় শৌখিন স্কোয়াশ চ্যাম্পিয়ন হন।[৫] কিন্তু ক্রিকেটের প্রতিই তিনি অধিক অনুরক্ত ছিলেন। ১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে ১৬ বছর বয়সে ওয়েসলি কলেজের ছাত্র থাকাকালীন সাউথ মেলবোর্ন ক্রিকেট ক্লাবপ্রথম একাদশের পক্ষে প্রথম খেলায় অংশ নেন।[১]
১৭ বছর বয়সে ১৯৩৫-৩৬ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। কিন্তু, ১৯৩৯-৪০ মৌসুম পর্যন্ত দলের নিয়মিত সদস্য হতে পারেননি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবনে ব্যাঘাত ঘটে। এ সময় রাজকীয় অস্ট্রেলীয় বিমান বাহিনীতে পাইলট হিসেবে কাজ করেন ও পরবর্তীকালে ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টর হন। চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুনরায় খেলোয়াড়ী জীবনে ফিরে আসেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
নিউজিল্যান্ড সফরে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য মনোনীত হন ও সেখানেই তার টেস্ট অভিষেক হয়। এরপর ১৯৪৮ সালে ডন ব্র্যাডম্যানের ‘অপরাজেয় দলের’ অন্যতম সদস্য ছিলেন। ঐ দলটি ইংল্যান্ড সফরে অপরাজিত অবস্থায় দেশে ফিরে। দলের নিয়মিত সদস্য হওয়া স্বত্ত্বেও ১৯৫৩ সালের ইংল্যান্ড সফরে অস্ট্রেলিয়া দল থেকে তাকে বাদ দেয়া হয়।
নিয়মিত অধিনায়কলিন্ডসে হ্যাসেটের অবসর গ্রহণের কারণে তিনি অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। কিন্তু এ মনোনয়নটি গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। তার কিছু দলীয় সঙ্গী ও সমর্থকগণ মনে করেছিলেন যে, এ পদের জন্য কিথ মিলারই যথোপযুক্ত ছিলেন। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম টেস্ট সিরিজে শক্তিশালী ইংল্যান্ড দলের কাছে নিজ দেশে পরাজিত হয় তার দল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে জনসন নিজের কৃতিত্ব তুলে ধরেন। অস্ট্রেলিয়া খুব সহজেই টেস্ট সিরিজ জয় করে। কিন্তু ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ১৯৫৬ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে পরাজিত হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্ট সফরের মাধ্যমে জনসনের টেস্ট জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে দু’দেশের মধ্যকার অভিষেক টেস্ট সিরিজের একমাত্র টেস্টে অস্ট্রেলিয়া পরাজিত হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসার পর ৩৯ বছর বয়সে সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি।
Derriman, Philip (১৯৮৭)। The top 100 and the 1st XI: the top 100 Australian cricketers and the best eleven of all time। Melbourne: The Fairfax Library। আইএসবিএন0-949054-31-3।
Frith, David (২০০৭)। Australia versus England: An illustrated history of every Test match since 1877 (12th সংস্করণ)। Melbourne: Viking। আইএসবিএন978-0-670-07073-2।