আব্দুস সালাম মুর্শেদী |
---|
২০১৮ সালে মুর্শেদী |
|
|
কাজের মেয়াদ ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ – ৫ জানুয়ারি, ২০২৪ |
পূর্বসূরী | মোস্তফা রশিদী সুজা |
---|
কাজের মেয়াদ ১১ জানুয়ারি, ২০২৪ – ০৬ আগস্ট, ২০২৪[১]
[১] |
|
|
জন্ম | খুলনা, বাংলাদেশ |
---|
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
---|
পেশা | ব্যবসা |
---|
যে জন্য পরিচিত | ফুটবল খেলোয়াড়, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ |
---|
পুরস্কার | জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার |
---|
আব্দুস সালাম মুর্শেদী হলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, খুলনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে সংযুক্ত হয়ে তিনি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে খুলনা-৪ আসনের জন্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২][৩][৪][৫][৬][৭] তিনি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেনন।[৮][৯] তিনি ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ বিলুপ্তের মাধ্যমে সংসদ সদস্য পদ হারান।[১]
প্রারম্ভিক জীবন
আব্দুস সালাম মুর্শেদী বাংলাদেশের খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার নৈহাটী গ্রামেজন্মগ্রহণ করেছেন এবং সেখানেই তার শৈশব অতিবাহিত করেছেন।[১০] তার বাবার নাম মোহাম্মদ ইসমাইল এবং তার মাতার নাম মোসাম্মদ রিজিয়া খাতুন। তার চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনিও একমাত্র ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। তার বড় ভাই জামাল হায়দার ১৯৭১ সালের পূর্বে ভলিবলে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেন। তার তৃতীয় ভাই আবুল কালাম আজাদ ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে বাংলাদেশের বডি বিল্ডিং চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।[১১]
রাজনৈতিক জীবন
আব্দুস সালাম মুর্শেদী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাথে সংযুক্ত হয়ে তিনি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরের উপ-নির্বাচনে খুলনা-৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২]
২০১৮ সালের একাদশ ও ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি খুলনা-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
৫ আগস্ট ২০২৪ সালে অসহযোগ আন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারত পালিয়ে গেলে পরদিন ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙ্গে দিলে তিনি সংসদ সদস্য পদ হারান।[১][১২][১৩][১৪]
ক্লাব ফুটবল
মুর্শেদী ফুটবলে একজন অত্যন্ত সফল কেন্দ্রীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি খুলনায় ফুটবল খেলা শুরু করেন। ১৯৭০-এর দশকে তিনি খুলনার ইয়ং বয়েজ ক্লাবের হয়ে খেলার মাধ্যমে তিনি তার জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু করেছেন। তিনি ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে খুলনা থেকে ঢাকায় আসেন। উক্ত সময় তিনি আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ঢাকা জ্যেষ্ঠ বিভাগ ফুটবল লিগে খেলা শুরু করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি বিজেএমসি দলের হয়ে খেলেন এবং তাদের লিগ শিরোপা জয়লাভ করতে সাহায্য করেন। তিনি ১৯৮০ সালে ঢাকা মোহামেডানে যোগদান করেন। ঢাকা মোহামেডানের হয়ে তিনি ১৯৮০ এবং ১৯৮২ সালে লিগ শিরোপা এবং ১৯৮০ সাল থেকে টানা ৪ বার ফেডারেশন কাপ শিরোপা জয়লাভ করেছেন। ১৯৮১ সালে, তিনি ওয়ারীর বিরুদ্ধে সুপার লিগ ম্যাচে ৪টি গোল করেন, এছাড়াও অধিনায়ক বাদল রায়ের করা দুই গোল ঢাকা মোহামেডানকে ৬–০ গোলের বড় ব্যবধানে ম্যাচটি জয়লাভ করতে সাহায্য করেছে।
১৯৮২ সালে মুর্শেদী তার খেলোয়াড়ি জীবনে সফলতার শীর্ষে পৌঁছেছিলেন। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অনুষ্ঠিত আশিস-জব্বার গোল্ড কাপে ১০টি গোল করার মধ্য দিয়ে মৌসুম শুরু করেন। তিনি ঢাকা মোহামেডানের হয়ে শিরোপা জয়লাভ করার পাশাপাশি উক্ত মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জয়লাভ করেছিলেন। এরপর ঢাকা লীগে তিনি এক মৌসুমে ২৭টি গোল করে একটি নতুন রেকর্ড গড়েন। পুরো মৌসুম জুড়ে তার এবং ১০ নম্বর জার্সি পরিহিত বাদল রায়ের সঙ্গে একটি চমৎকার বোঝাপড়া দেখা গিয়েছিল। তবে তিনি ১৯৮৩ সালে হাতে আঘাত পান, যদিও তিনি কয়েক মাসের মধ্যে ফুটবলে ফিরে আসেন, তবে তিনি আর কখনো আগের মতো খেলতে পারেননি।[১১]
আন্তর্জাতিক ফুটবল
মুর্শেদী বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৮০ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার সময় তিনি বিজেএমসি দলের আসলামের সাথে খেলেছেন। বাংলাদেশ উক্ত বাছাইপর্বে রানার-আপ হয়েছিল এবং মূল প্রতিযোগিতায় খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। ১৯৮১ সালের প্রথম দিকে বাংলাদেশ (লাল) নামে পরিচিত যুব দল ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম প্রেসিডেন্ট'স কাপের ফাইনালে পৌছায়। কিন্তু তারা ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে পরাজিত হয়। ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ (সবুজ) দলের হয়ে মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে খেলার সময় মুর্শেদী গুরুতরভাবে হাতে আঘাত পান এবং এর ফলে আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার সম্ভাবনা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[১১]
ব্যবসা
মুর্শেদী এনভোয় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।[১৫] এছাড়াও তিনি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক ছিলেন।[১৬] তিনি ১৯৮৪ সালে এনভোয় গার্মেন্টসের মাধ্যমে ব্যবসা ক্ষেত্রে তার যাত্রা করেন। পরবর্তীকালে তিনি আরো ১৫টি পোশাক প্রস্তুত প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির পরিচালনা পর্ষদের সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিপূর্বে তিনি বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি এবং ঢাকা মোহামেডানের পরিচালক দায়িত্ব পালন করেছেন। মুর্শেদী ব্যবসার পাশাপাশি শারীরিকভাবে অক্ষমদের জন্য ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত আছেন। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সহায়তা, খেলাধুলায় সহায়তা এবং ফুটবলের উন্নয়নের নানা ধরনের কাজ করে থাকেন তিনি।
পারিবারিক জীবন
মুর্শেদী শারমিন সালামের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। তাদের উভয়ের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।[১৭]
পুরস্কার
তথ্যসূত্র