হুয়াঁউ বাতিস্তা দি ওলিভেইরা ফিগেইরেদু (পর্তুগিজ: João Baptista de Oliveira Figueiredo আ-ধ্ব-ব: [ʒu'ɐ̃w ba'tistɐ di oli'vejɾɐ figej'redu]) (১৫ই জানুয়ারি, ১৯১৮ – ২৪শে ডিসেম্বর, ১৯৯৯) ব্রাজিলের একজন চার-তারকাবিশিষ্ট সামরিক জেনারেল, যিনি ১৯৭৯ সালে থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি ছিলেন।
ফিগুইরেদু সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে ১৯৪৪ সালে ক্যাপ্টেন ও ১৯৫২ সালে মেজর পদে উন্নীত হন। ১৯৬৪ সালে ব্রাজিলে যে সামরিক ক্যু ঘটে, ফিগুইরেদু তার অন্যতম পরিকল্পক ছিলেন। এই ক্যু-এর পর ২১ বছর ধরে ব্রাজিলে সামরিক শাসন চলে। এই সামরিক শাসনের সময় যে পাঁচ জন সেনা অফিসারকে সেনাবাহিনী থেকে ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি বানানো হয়, ফিগুইরেদু তাদের মধ্যে সর্বশেষ জন ছিলেন। ১৯৬৪ সালের ক্যু-এর সময় তিনি সামরিক বাহিনীর গুপ্তচরদের অগ্রসর প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। তাকে কর্নেল বানানো হয় এবং রাষ্ট্রপতি এর্নেস্তু গাইজেউয়ের অধীনে ১৯৭৪ সালে ব্রাজিলের গুপ্তচর সংস্থার প্রধান ছিলেন। তিনি ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন। জনজীবন ও প্রচারমাধ্যম থেকে দূরত্ব বজায় রাখার জন্য তিনি "নৈঃশব্দ্যের মন্ত্রী" (minister of silence) হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। ১৯৭৯ সালে এর্নেস্তু গাইজেউ তাকে রাষ্ট্রপতি পদে নিয়োগ দেন। তিনি গাইজেউয়ের সমাজতান্ত্রিক ও গণমুখী প্রকল্পগুলি ধরে রাখার প্রয়াস পান এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন। ক্ষমতা গ্রহণের সময় ব্রাজিলের অর্থনৈতিক অবস্হা ছিল করুণ। মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ৪০%-এরও বেশি এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট রূপ ধারণ করেছিল। এগুলির সমাধান করতে তিনি শ্রমিকদের আয় বাড়ানো, ব্রাজিলের মুদ্রার অবমূল্যায়ন করাসহ অনেকগুলি পদক্ষেপ নেন। ১৯৮০ সালে তিনি মাত্তু গ্রোসু দু সুল থেকে ৪৭,০০০ হাজার একর জমি বাজেয়াপ্ত করে সেগুলি ১,০০০ ভূমিহীন কৃষকের মধ্যে ভাগ করে দেন। অনেক রাজনৈতিক বন্দীকে ক্ষমা করে দেন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেন। তার আমলের শেষের দিকে সামরিক শাসনের প্রভাব ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে এবং ১৯৮৪ সালে ব্রাজিলে প্রায় ২১ বছর পর আবার একটি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি জোজে সার্নেইয়ের হাতে ফিগেইরেদু ১৯৮৫ সালে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।