স্যার হারবার্ট হোপ রিসলেকেসিআইইসিএসআই (৪ জানুয়ারি, ১৮৫১ –৩০ সেপ্টেম্বর, ১৯১১) ছিলেন একজন ব্রিটিশ জনপরিসংখ্যানবিদ ও ঔপনিবেশিক প্রশাসক এবং ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের এক সদস্য যিনি বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির বিভিন্ন উপজাতি ও জাতিগুলির উপর বিস্তারিত গবেষণা চালিয়েছিলেন। তিনি ব্রিটিশ ভারতের ১৯০১ সালের জনগণনার দায়িত্বে ছিলেন। উক্ত জনগণনার সময় দেশের সামগ্রিক হিন্দু জনসংখ্যার জাতিব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক ব্যবহারের জন্য খ্যাতি লাভ করেন। তিনি বিজ্ঞানসম্মত জাতিবাদের বিরোধী ছিলেন। তিনি নাকের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাতের ভিত্তিতে ভারতীয়দের আর্য ও দ্রাবিড় গোষ্ঠী এবং সাতটি জাতিতে ভাগ করেন।[১][২]
১৮৫১ সালে ইংল্যান্ডের বাকিংহামশায়ারে রিসলের জন্ম। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ কলেজে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে (আইসিএস) যোগ দেন। প্রথম দিকে তিনি বাংলায় কর্মরত ছিলেন। বাংলাতে স্বদেশী আন্দোলনের মূলচ্ছেদ করতে, ছাত্রদের রাজনীতি হতে দূরে রাখতে, সেই মর্মে সার্কুলার জারি করেন যা রিসলে সার্কুলার নামে পরিচিত ছিল।[৩] এখানে তার কাজ ছিল পরিসংখ্যান ও জনপরিসংখ্যানগত গবেষণা। পরে নৃতত্ত্ব বিষয়ে তার আগ্রহ জাগে। নতুন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে প্রথম দিকে তার পদোন্নতি রুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু পরে তিনি ভারতের সেনসাস কমিশনার নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৯১১ সালে মৃত্যুর কিছুকাল আগে তিনি লন্ডনের ইন্ডিয়া অফিসেপার্মানেন্ট সেক্রেটারি হয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনি ভারতীয় জনগোষ্ঠীগুলি সম্পর্কে একাধিক গবেষণা চালান। এগুলির ভিত্তি ছিল সেই ধারণাগুলি যা আজ বৈজ্ঞানিক জাতিবাদের ভিত্তি। তিনি ব্যবহারিক ক্ষেত্রে কাজের মূল্য এবং মানুষের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মাপজোক করে তার বিবরণ লিখে রাখার উপর গুরুত্ব দিতে। তার সমসাময়িককালে ভারততত্ত্ববিদরা প্রাচীন গ্রন্থ বা লোককথার ভিত্তিতে যে গবেষণা চালাতেন, তাকে তিনি গুরুত্ব দিতেন না।