সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়াহ মসজিদ, যা কোটাবাটো গ্র্যান্ড মসজিদ নামেও পরিচিত,[২][৩] হলো কোটাবাটো শহরে অবস্থিত একটি ইসলাম ধর্মীয় স্থাপনা। এটি ফিলিপাইনের বৃহত্তম মসজিদ। এই মসজিদের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ১৫,০০০ জন।[৪] মসজিদটি কোটাবাটো শহরের বারাঙ্গায় কালাঙ্গানান ২ অঞ্চলে অবস্থিত।[৫] এছাড়াও এটি ইন্দোনেশীয় রাজধানী জাকার্তার ইসতিকলাল মসজিদের পর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মসজিদ।[৬]
নির্মাণ
২০১১ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়।[৭] এই মসজিদের স্থাপত্য নির্মাণে মোট ৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪০৬ কোটি ৫৮ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা) খরচ হয়। মসজিদের মোট খরচের আংশিক (৫৩%) ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়াহ বহন করেন। অবশিষ্ট খরচ ফিলিপাইনের রাষ্ট্রপতি বেনিগনো অ্যাকুইনো পরিশোধ করেন। ম্যানিলা ভিত্তিক নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিউ কানলাওন ইনকর্পোরেশন মসজিদটি নির্মাণ করে। রিচার্ড হ্যারিস জর্ডান এই নির্মাণ প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন। ২০১১ সালের এপ্রিল নাগাদ মসজিদটির ৯৯.১২% কাজ সমাপ্ত হয়ে যায়। মসজিদটির নির্মাণের জন্য প্রায় ৩০০ শ্রমিক নিযুক্ত করা হয়।[৮]
এছাড়াও মসজিদটির নির্মাণে ম্যাগুইন্দানাওয়ের প্রথম জেলা প্রতিনিধি দিদাগেন দিলাংগালেন ব্যাপক অনুদান দেন।[৭]
স্থাপত্য ও নকশা
স্থপতি ফেলিনো প্যালাফক্সের স্থানীয় স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান প্যালাফক্স অ্যাসোসিয়েট সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়াহ মসজিদের নকশা প্রস্তুত করে।[১][৮] মসজিদের গম্বুজগুলো সোনালি রঙে রঞ্জিত এবং শীর্ষগুলোতে চন্দ্রখচিত। মসজিদ ভবনের মিনারের উচ্চতা ৪৩ মিটার (১৪১ ফুট)। রাত্রিকালে এই মিনারে আলো প্রজ্জ্বলিত করা হয়, যা এই অঞ্চল দিয়ে গমনকারী বিমানের পাইলটের জন্য দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করে।[৮] মোট পাঁচ হেক্টর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত কমপ্লেক্সের মূল মসজিদ ভবনটিই অর্ধ হেক্টর বা ৫০০০ বর্গমিটার (৫৪,০০০ বর্গফুট) ভূমির ওপর দণ্ডায়মান।[৮]
ব্যবস্থাপনা
বাংসামোরোর স্থানীয় সরকার কর্তৃক মসজিদটির ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা নিয়ন্ত্রিত হয়।[৯] এই ব্যবস্থার পূর্বে ধর্মীয় স্থাপনাটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোটাবাটো শহর কর্তৃপক্ষ ও বর্তমানে বিলুপ্ত মুসলিম মিন্দানাও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল (এআরএমএম) সরকারের মধ্যে সমস্যা সূচিত হয়েছিল। বিবাদ মীমাংসার জন্য ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় সরকার মসজিদের তহবিল ব্যতীত ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়ে নেয়। মসজিদ রক্ষণাবেক্ষণের তহবিলের দায়িত্ব স্থানীয় অধিবাসীদের ওপর ন্যস্ত করা হয়। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকার এআরএমএম-এর উত্তরসূরী বাংসামোরোকে রূপান্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সে বছরের প্রথমার্ধের জন্য মসজিদটির দায়িত্ব দেওয়া হয়।[৭] এর ধারাবাহিকতায় ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ জানুয়ারি মসজিদটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংসামোরো আঞ্চলিক সরকারের হাতে সমর্পণ করা হয়।[৯]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র