সুকুমার ঘোষ (১৯১১ — ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৪) একজন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকারী সশস্ত্র বিপ্লববাদী।
নারায়ণগঞ্জ সংঘর্ষ
হেমচন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে গঠিত বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের অন্যতম সদস্য ছিলেন সুকুমার। ১৯৩৪ সালের ১০ই এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ জেলার দেওভোগ গ্রামে পুলিশের সঙ্গে যুক্ত ভিলেজ গার্ডদের সাথে বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের বিপ্লবীদের সংঘর্ষ বাধে। বিপ্লবী সুকুমার ও সাথীদের গুলিতে গার্ডদের একজন হত ও দুই জন আহত হয়। রাতের অন্ধকারে সুকুমার ঘোষ ও মধু ব্যানার্জী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে পারলেও অপর বিপ্লবী মতি মল্লিক ধরা পড়েন ও তার ফাঁসী হয়।[১]
এণ্ডারসন হত্যা চেষ্টা
ঐ বছরই অর্থাৎ ১৯৩৪ সালে অত্যাচারী ছোটলাট স্যার জন এণ্ডারসনকে হত্যার প্রচেষ্টায় সামিল হন তিনি। 'লান্টু' ছদ্মনামে সুকুমার ঘোষ দার্জিলিং যান। গোপনে অস্ত্রশস্ত্র যোগাড়ের দায়িত্ব ছিল তার ওপর এবং বিপ্লবী ভবানীপ্রসাদ ভট্টাচার্য, উজ্জ্বলা মজুমদার, মনোরঞ্জন ব্যানার্জী ও আরো কয়েকজন দার্জিলিং লেবং ঘৌড়দোড়ের মাঠে এণ্ডারসনকে হত্যার চেষ্টা করেন ৮ মে। বিপ্লবী ভবানীপ্রসাদ গুলি করলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ছোটলাট।[২] ভবানীপ্রসাদ ফাঁসির মঞ্চে শহীদ হন ও সুকুমার ঘোষের ১৪ বছর দ্বীপান্তর দণ্ড হয়।[৩][৪]
কারা জীবন
আন্দামান সেলুলার জেলে বন্দী ছিলেন তিনি। ১৯৩৭ সালে সেখানে রাজবন্দীদের মর্যাদা, ভারতের মূল ভূখণ্ডে ফেরানোর দাবীতে ৪৫ দিনের যে ঐতিহাসিক অনশন হয় তাতে সামিল হয়েছিলেন। এই আন্দোলনের ফলে বহু বন্দীকে দেশে ফেরানো হয়। শেষ দলে তিনিও কলকাতা ফিরে আলিপুর কেন্দ্রীয় কারগারে বন্দী থাকেন। ১৯৩৮ সালে পূনরায় ৩৫ দিনের অনশন ধর্মঘট করেন। ১৯৪৬ সালে মুক্তি পেয়ে রামমনোহর লোহিয়া প্রতিষ্ঠিত সমাজতন্ত্রী দলে যোগ দিয়েছিলেন।
মৃত্যু
১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৪ সালে মারা যান বিপ্লবী সুকুমার ঘোষ।[৪]
তথ্যসূত্র