সিডনি (ইংরেজি: Sydney) অস্ট্রেলিয়ারনিউ সাউথ ওয়েল্সেররাজধানী এবং অস্ট্রেলিয়া তথা ওশেনিয়ার বৃহত্তম ও জনবহুল শহর।[৭] শহরটি অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলের জ্যাকসন বন্দরকে ঘিরে অবস্থিত। শহরটি স্থলভাগের অভ্যন্তরে পশ্চিমের ব্লু পর্বতমালার দিকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার ( ৪৩.৫ মাইল ) পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। এর উত্তরে হকসবেরি শহর, দক্ষিণে রয়াল ন্যাশনাল পার্ক বা রাজকীয় জাতীয় উদ্যান এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে ম্যাকার্থার শহর।[৮] সিডনিতে ৬৫৮টি উপশহর, ৩৩ টি স্থানীয় সরকার অঞ্চল এবং ১৫টি সংলগ্ন অঞ্চল বা রিজিয়ন আছে। সিডনির অধিবাসীদেরকে স্থানীয় ইংরেজি ভাষায় "সিডনিসাইডার্স" নামে ডাকা হয়।[৯] ২০১৯ সালের জুন মাসের হিসাব অনুযায়ী সিডনি মহানগর এলাকার জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫৩ লক্ষ ( ৫৩১২১৬৩ জন ) ।[১০] এখানে নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের প্রায় ৬৫% জনগণ বাস করে।[১১]
সিডনি অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন এবং বড় শহর। প্রযুক্তির শহরও বলা চলে সিডনিকে। অস্ট্রেলিয়ার বড় বড় কোম্পানির প্রধান অফিস সিডনিতে। বিশাল বিশাল বিল্ডিং দেখলেই বুঝা যায় যে সিডনি একটা ব্যবসায়িক শহর। জ্ঞানের শহর ও বলা হয় সিডনিকে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় অনেক সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার আছে। এছাড়া রাস্তাতেও ফ্রি গ্রন্থাগার রয়েছে। বই নিয়ে পড়ে আবার ওইখানে ফেরত দেয়া যায়। [১২]
আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানরা প্রায় ৩০,০০০ বছর ধরে সিডনি এলাকায় বসবাস করেছে , এবং তাদের সহস্রাধিক নিদর্শন সিডনিকে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রত্নতত্ত্ব সমৃদ্ধ নগরীতে পরিণত করেছে ।
ইউরোপীয় যোগাযোগের সময়, প্রায় ২৯ টি গোষ্ঠী এখানে বাস করত । ১৭৭০ সালে , লেফটেন্যান্ট জেমস কুক ও তার সহযাত্রীরা প্যাসিফিক যাত্রার সময় প্রথম অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে বোটানি বে'তে নোঙর করেন এবং পরবর্তীতে ব্রিটিশরা এদিকে আকৃষ্ট হয় । ১৭৮৮ সালে আর্থার ফিলিপ প্রথম অস্ট্রেলিয়ায় ইউরোপীয়দের কলোনী প্রতিষ্ঠা করেন । তিনি একে টমাস টাউনশ্যান্ড , প্রথম ভিসকাউন্ট সিডনির নামে ' সিডনি ' নামকরণ করেন । ১৮৪২ সালে সিডনি শহর হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবার পর নিউ সাউথ ওয়েলসে দন্ডপ্রাপ্তদের নির্বাসিতকরণের অবসান ঘটে । পরবর্তী এক শতক সিডনির স্বর্ণসময় , এ সময়কালীন সিডনি ঔপনিবেশিক ফাঁড়ি থেকে অন্যতম আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে । ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর সিডনি একটি বহুজাতিক শহরে পরিণত হয় । ২০১১ আদমশুমারির অনুযায়ী , সে সময় ২৫০ এরও বেশি ভাষাভাষী ছিল সেখানে । ২০১৬ এর সময়ে , ৩৫.৮% বাসিন্দা বাড়িতে ইংরেজী ছাড়া অন্য ভাষা ব্যবহার করত । তদুপরি , ৪৫.৪% বাসিন্দা বিদেশে জন্মগ্ৰহণকারী , যা লন্ডন ও নিউইয়র্কের পর তৃতীয় বৃহত্তম বিদেশী বসবাসকারীর সংখ্যা । সিডনির জনসংখ্যা বৃদ্ধির মূল কারণই হলো অভিবাসন ।
বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল শহর হলেও সিডনি বাসযোগ্য শহরের তালিকায় শীর্ষ দশে রয়েছে। বিশ্বব্যাপী সিডনির প্রভাব ও কার্যবিস্তৃতির কারণে 'গ্লোবালাইজেশন অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড সিটিস রিসার্চ নেটওয়ার্ক' দ্বারা একে ' আলফা গ্লোবাল সিটি ' হিসেবে ঘোষণা করা হয় । অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধার জন্যে এটি সারাবিশ্বে ১১তম স্থান লাভ করে । সিডনির রয়েছে উন্নত বাজার , শক্তিশালী অর্থনীতি , উৎপাদনব্যবস্থা , ও পর্যটনশিল্প । সিডনিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশী ব্যাংক এবং বহুজাতিক কর্পোরেশন রয়েছে এবং শহরটি অস্ট্রেলিয়ার আর্থিক রাজধানী এবং এশিয়া প্যাসিফিকের অন্যতম প্রধান আর্থিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে । ১৮৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়টি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত । সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে পুরানো গ্ৰন্থাগার রয়েছে , যার নাম ' নিউ সাউথ ওয়েলস লাইব্রেরী ' , প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮২৬ সালে ।
সিডনি হারবার ব্রিজ বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান। ১৯২৩ সালে কাজ শুরু হয়ে ১৯৩২ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এই ব্রিজটি ১৩৪ মিটার উঁচু এবং ১ হাজার ১৪৮ মিটার লম্বা। এটি তৈরি করতে গিয়ে কিছু লোক প্রাণ হারায়। আপনি চাইলে ব্রিজের উপর থেকে সিডনির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।[১২]
সিডনি ২০০০ গ্ৰীষ্মকালীন অলিম্পিকের মতো বড় বড় আন্তর্জাতিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে । শহরটি বিশ্বের শীর্ষ ১৫টি সর্বাধিক পরিদর্শন করা শহরগুলোর একটি । প্রতিবছর কয়েক মিলিয়ন পর্যটকের আনাগোনা হয় এখানে । প্রায় ১০,০০,০০০ হেক্টর জমির উপর এর পরিবেশ সংরক্ষণ পার্ক স্থাপিত। এর উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে সিডনি হারবার , রয়্যাল ন্যাশনাল পার্ক , রয়্যাল বোটানিক গার্ডেন এবং হাইড পার্ক , যেটি দেশের প্রাচীনতম পার্কল্যান্ড । বিশেষ স্থাপনা যেমন হারবার ব্রিজ কিংবা সিডনি অপেরা হাউসও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে সুপরিচিত । নগরীর প্রধান যাত্রী বিমানবন্দর হলো ' কিংসফোর্ড - স্মিথ বিমানবন্দর ' , যেটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন বিমানবন্দর । ১৯০৬ সালে স্থাপিত কেন্দ্রীয় (সেন্ট্রাল) স্টেশনটি রাজ্যের অন্যতম বড় ও ব্যস্ত রেলস্টেশন এবং শহরের রেল যোগাযোগের প্রধান ।
ইতিহাস
সিডনি এলাকায় বসবাসকারী প্রথম জনগোষ্ঠী ছিল আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানরা যারা উত্তর অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া থেকে এসেছিলেন । রেডিও কার্বনডেটিং এ যদিও ৩০,০০০ বছর ধরে বসবাসের প্রমাণ পাওয়া যায় , পশ্চিম সিডনিতে প্রাপ্ত পুরানো পাথরের হাতিয়ার থেকে আরো আগের , প্রায় ৪৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ বছরের প্রাচীন নিদর্শন পাওয়া যায়।
ব্রিটিশ ও আদিবাসীদের প্রথম বৈঠক হয় ২৯ এপ্রিল ১৭৭০ , যখন জেমস কুক বোটানি বে তে অবতরণ করেন এবং গুয়েগাল সম্প্রদায়দের দেখতে পান । তাঁঁর লেখায় তিনি উল্লেখ করেছেন , তারা (আদিবাসীরা) বিদেশীদের দেখে বিভ্রান্ত হয়় । কুক কেবল পর্যবেক্ষণের কাজে ছিলেন সেসময় , বসতি স্থাপন নয় । তিনি অল্পসময়়ে সেখানে খাদ্য সংগ্ৰহ এবং বৈজ্ঞানিক কাজ সম্পন্ন করে আরও পূর্ব দিকে এগিয়ে যান এবং ব্রিটেনে তা তুলে ধরেন । এর আগে সিডনিতে ২৯ টি গোত্রের ৪০০০ থেকে ৮০০০ লোক ছিল ।
প্রথম দিকে ব্রিটিশরা আদিবাসীদের ইওরা নামে অভিহিত করত , যা আদিবাসীদের উৎসের ব্যাখ্যা দিতে ব্যবহৃত হয় । ইওরা অর্থ ' এই স্থান হতে ' ।
পোর্ট জ্যাকসন ও পিটারশ্যাম পর্যন্ত কাডিগাল জনগোষ্ঠীর বাস ছিল । প্রধান ভাষাভাষী ছিল দারুগ , গুড়িংগি এবং ধারাওয়াল । ইউরোপীয়ানরা দেখেছিল যে , এসব আদিবাসীরা তাঁবুতে বাস করত , মাছ ধরত , এবং গাছ থেকে কাঠ ও খাবার সংগ্ৰহ করত ।
কলোনি স্থাপন
ব্রিটেন ও তার পূর্বে ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড তাদের দন্ডপ্রাপ্তদের আটলান্টিক পথে আমেরিকায় পাঠাত । ১৭৭৬ সালে আমেরিকার স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে এর অবসান হয় । এরপর ১৭৮৬ সালে ব্র্রিটেন সিডনিতে নতুন দন্ডফাঁড়়ি স্থাপন করে ।
ক্যাপ্টেন ফিলিপ প্রথম বোটানি বে'গামী ১১ টি জাহাজে ৮৫০ জন আসামীর দলকে নেতৃত্ব দেন ১৮ জানুয়ারি ১৭৮৮ সালে । যদিও সেখানে উর্বর মাটি আর বিশুদ্ধ পানির অভাব ছিল । তাই তিনি আরেকটু উত্তরে সিডনি কোভে অবতরণ করেন এবং এটিই ছিল প্রথম কলোনির স্থান । ফিলিপ পোর্ট জ্যাকসনকে ' ব্যতিক্রম ছাড়া বিশ্বের সেরা বন্দর ' হিসেবে বর্ণনা করেন । উপনিবেশটি প্রথমে নিউ আলবিয়ন নামে ছিল , কিন্তু ফিলিপ এর নামকরণ করেন সিডনি , ৭ ফেব্রুয়ারি ১৭৮৮ সালের আনুষ্ঠানিক নামকরণে । লেফটেন্যান্ট উইলিয়াম ডাউস ১৭৯০ সালে সেখানে একটি নগর পরিকল্পনা করেন কিন্তু সেটি উপনিবেশের নেতারা উপেক্ষা করেন , যার প্রভাব বর্তমান সিডনিতে দেখা যায় ।
১৭৮৮ থেকে ১৭৯২ সালের মধ্যে ৩৫৪৬ জন পুরুষ ও ৭৬৬ জন নারী অপরাধীকে সেখানে পাঠানো হয় , যাদের অনেকে পেশাদার অপরাধী ছিল এবং নগর গঠনে যোগ্য ছিল । ১৭৯০ সালে খাদ্যাভাব চরমে পৌঁছেছিল । যাইহোক , ১৭৯১ থেকে যোগাযোগ ও বাণিজ্য বিস্তৃতির ফলে অভাব ও বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি কমিয়ে দেয় ।
কলোনিটি স্বাধীনতা আর সমৃদ্ধির নীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয় নি । এসময়ের মানচিত্রে কারাগারের অবস্থান দেখায় না । ফিলিপ উন্নত মাটি খোঁজার জন্যে দল পাঠান এবং পারমাটা ( parramatta ) এলাকাকে নগরায়নের জন্যে নির্বাচন করেন , যেটি উপনিবেশের প্রধান আর্থিক কেন্দ্র হয়ে ওঠে ।
সরবরাহ ও উৎপাদন কম হওয়ায় অফিসার আসামী সবাইকে অনাহারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল । এছাড়া আদিবাসীরাও ভুগছিল । আনুমানিক অর্ধেকের মত আদিবাসী ১৭৮৯ সালে গুটিবসন্ত রোগে মারা যাায় । ফিলিপের অভিপ্রায় ছিল স্থানীয়দের সাথে সুসম্পর্ক রাখা এবং একই সাথে অন্যদের পরিচালনা করা। অফিসারদের ডায়়েরী থেকে জানা যায় সেসময়ের দুরবস্থা ও কঠিন পরিশ্রমের কথা । উপনিবেশটি রূপান্তরের জন্য ম্যাকুয়ারির প্রচেষ্টা ছিল দোষীদের জন্য মুক্ত নাগরিক হিসেবে সমাজে প্রবেশের অনুমতি । দোষীদের শ্রমে নির্মিত হয় রাস্তা , সেতু ইত্যাদি । ১৮১১ সালে নির্মিত পারমাটা রোডটিই বর্তমানে সিডনির সবচেয়ে প্রাচীন রোড ।
উপনিবেশের পরিস্থিতি নগর নির্মাণের প্রতিকূল হলেও নিয়মিত জাহাজ আগমন ও সামুদ্রিক বাণিজ্যের কারণে বিচ্ছিন্নতা হ্রাস পায় । একটি প্রজন্মে মুক্তিপ্রাপ্ত দোষীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং পরে তারা বেসরকারী খাতে অগ্ৰণী ভূমিকা রাখে ।গভর্নর ফিলিপ ১১ ডিসেম্বর ১৭৯২ এ ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন ।
দ্বন্দ্ব
১৭৯০ এবং ১৮১৬ এর মধ্যে সিডনি অস্ট্রেলিয়ান ফ্রন্টিয়ার ওয়ার্সের অনেক সাইটগুলির একটি হয়ে ওঠে । যখন ব্রিটিশরা হকসবারি নদীর তীরে খামার স্থাপন করেছিল , তখন আদিবাসী নেতা পামুলভূই গেরিলা হামলা চালিয়ে প্রতিহত করেছিল । ব্রিটিশ রেজিমেন্টের সৈন্য প্রেরণ না করা পর্যন্ত তিনি অভিযান চালান ।
আধুনিক বিকাশ
১৯শতক
ম্যাককুয়েরি ১৮১০ থেকে ১৮২১ সাল পর্যন্ত নিউ সাউথ ওয়েলসএর গভর্নর ছিলেন । তিনি সিডনির সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্ৰনী ভূমিকা রেখেছিলেন । তিনি পাবলিক ওয়ার্কস , ব্য্যাংক , গীর্জা এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠান করেছিলেন এবং আদিবাসীদের সাথে সুসম্পর্ক চেয়েছিলেন ।
উনিশ শতকের সময়কালে সিডনি তার অনেক বড় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলি পায় । ১৮৫১ সালের কলোনিতে সোনার সন্ধান পাওয়া যায় এবং হাজার হাজার লোক ভাগ্যসন্ধান করে । ১৮৭১ সালের মধ্যে সিডনির জনসংখ্যা দাঁড়ায় ২,০০,০০০ তে এবং এই সময়ের মধ্যে শহরটি সমৃদ্ধির যুগে প্রবেশ করেছিল । হোটেল , লাইব্রেরি , যাদুঘর তৈরি হয়েছিল ।
বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে সিডনি মেলবোর্নের জনসংখ্যা অতিক্রম করে এবং অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম শহর হয়ে ওঠে । এর সমুদ্র সৈকতগুলিও ছুটি কাটানোর রিসোর্ট হিসেবে জনপ্রিয় হয় ।
বিশ শতক - বর্তমান
ছয়টি উপনিবেশের কুইন ভিক্টোরিয়া ফেডারেশনের আমলে তথা ১৯০১ সালে ৪,৮১,০০০ জনসংখ্যা নিয়ে সিডনি নিউ সাউথ ওয়েলসের রাজধানীতে পরিণত হয় । ১৯৩০ সালের বৈশ্বিক মন্দা এর অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে , এসময় প্রায় এক তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠী বেকার হয়ে যায়।
এই শহরে একটি বৃহত্তম ট্রাম নেটওয়ার্ক ছিল যা ১৯৬১ সালে ভেঙে দেয়া হয় ।
১৯৩৯ এর বিশ্বযুদ্ধ সিডনির অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেয়। এমনকি সেসময় শ্রম অভাব দেখা দেয় এবং নারীরাও কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে শুরু করে। সিডনি বন্দরটি ১৯৪২ সালে জাপানি সাবমেরিনের আক্রমণে ক্ষতিগ্ৰস্ত হয় ও কিছুটা প্রাণহানি হয়। শহর জুড়়ে পরিবারগুলো আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে, যা পরে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বৃদ্ধিতে ভূূমিকা রাখে।
তথ্য প্রযুক্তি, শিক্ষা, আর্থিক পরিষেবা, চারুকলার মত নতুন শিল্প বিকশিত হয়। সিডনির আইকনিক অপেরা হাউস ১৯৭৩ সালে খোলা হয়েছিল। ১৯৭০ এর দশক থেকে সিডনিতে দ্রুত অর্থনৈতিক ও সামাজিক রূপান্তর ঘটেছে।
সিডনি একটি উপকূলীয় অববাহিকা, যার পূর্বে তাসমান সাগর, পশ্চিমে নীল পর্বতমালা, উত্তরে হকসবারি নদী ও অপরদিকে ওয়ারোনোরা মালভূমি। বৃহত্তর সিডনি ১২,৩৬৭ বর্গকিলোমিটার জুড়ে অবস্থিত।
অঞ্চলসমুহ
সিডনির অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে সিবিডি বা সিডনির শহর, ইনার ওয়েস্ট, পূর্ব শহরতলি, দক্ষিণ সিডনি ( সেন্ট জর্জ সহ) , গ্ৰেটার ওয়়েস্টার্ন সিডনি ( দক্ষিণ পশ্চিম সিডনি, পাহাড় সহ ), এবং উত্তর সিডনি (উত্তর তীর এবং সৈকত সহ ) । গ্ৰেটার সিডনি কমিশন মহানগর অঞ্চলে ৩৩ টি এলজিএর ভিত্তিতে সিডনি পাঁচটি জেলায় বিভক্ত , পশ্চিম শহর কেন্দ্রীয় শহর, পূর্ব শহর, উত্তর জেলা, এবং দক্ষিণ জেলা। জনসংখ্যার পরিসংখ্যানের জন্য গ্ৰেটার সিডনির অংশ হিসেবে সিটি অফ সেন্ট্রাল কোস্ট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা আরো ৩,৩০,০০০ জনকে অন্তর্ভুুুক্ত করে ।
অভ্যন্তরীণ শহরতলী
যোগাযোগ
আকাশপথে
সিডনি বিমানবন্দর
খেলাধুলা
সুদীর্ঘকাল থেকেই এখানে ক্রিকেট খেলার প্রচলন। শহরের প্রাণকেন্দ্র হাইড পার্কে ১৮২৬ সালে ক্রিকেট ক্লাব প্ৰতিষ্ঠা হয়। নিকটবর্তী সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড বিশ্বের অন্যতম প্রধান ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ১৮ কিমি পশ্চিমে নবনির্মিত সিডনি অলিম্পিক পার্কে স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়া ও সিডনি শোগ্রউন্ড নামে আরো দুটি স্টেডিয়াম রয়েছে যা অস্থায়ীভাবে ক্রিকেট খেলায় ব্যবহৃত হয়।