শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষ (৩ নভেম্বর, ১৮৯২ ― ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৪৯) একজন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকারী সশস্ত্র বিপ্লববাদী।
প্রারম্ভিক জীবন
শৈলেন্দ্রনাথের জন্ম হয় যশোর জেলার নড়াইলে। পিতার নাম ছিল যদুনাথ ঘোষ। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৯১৫ সালে পদার্থবিদ্যায় প্রথম শ্রেনীতে প্রথম হয়ে এম এস সি পাশ করেন ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কলেজে শিক্ষকতায় যোগ দেন। প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় থেকেই সশস্ত্র বিপ্লবীদের সাথে যোগাযোগ ছিল। উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায় (শিক্ষাবিদ), বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচে তাকে পি.এইচ.ডি করতে আমেরিকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করলেও তিনদিন আগে পুলিশ আমেরিকা যাওয়ার পাসপোর্ট আটকে দেয়। এসময় আশুতোষ মুখোপাধ্যায় তার পাশে দাঁড়িয়ে অর্থ সাহায্য ও আইনি পরামর্শ দিয়েছিলেন।[১]
বিপ্লবী আন্দোলন
পরের বছর অর্থাৎ ১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে দেশ ছেড়ে পালান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বার্লিন কমিটির অন্যতম সদস্য হন তিনি। প্রবীণ বিপ্লবী তারকনাথ দাসের সহযোগীতায় সেদেশে 'ভারতের অস্থায়ী শাসন পরিষদ' গঠন করে বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছে ভারতের স্বাধীনতার জন্যে আবেদন করতে থাকেন। তার বিরুদ্ধে মার্কিন সরকার মামলা করার আগেই আমেরিকা ছেড়ে চলে যান মেক্সিকোতে। মানবেন্দ্রনাথ রায়ের কাছে কিছুদিন আশ্রয় পেলেও মতবিরোধের কারণে মানবেন্দ্রনাথ তাকে বিতাড়ত করলে সাঁতার কেটে নদী পার হয়ে আমেরিকায় আসেন এবং গ্রেপ্তার হয়ে যান। চার বছর কারাদণ্ড হয়।[১][২]
শেষ জীবন
ভারতে ফিরে আসেন ১৯৩৬ সালে এবং কলকাতা পৌরসংস্থার এডুকেশন অফিসার হিসেবে কাজে যোগ দেন। বরিশালের ব্রজমোহন কলেজে অধ্যাপনা ও অধ্যক্ষের কাজ করেছেন ১৯৩৯-৪৬ পর্যন্ত। পরবর্তী চার বছর ঢাকা জগন্নাথ কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।[৩] ১৯৪৭ সালে লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনারের ডেপুটি সেক্রেটারি হন।
ব্যক্তিগত জীবন
তিনি মার্কিন মহিলাকে বিবাহ করেছিলেন যাদের একটি কন্যা সন্তান ছিল। নাম লায়লা।
মৃত্যু
১৮ ডিসেম্বর ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে বিলেতেই মৃত্যুবরণ করেন শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষ।[১]
তথ্যসূত্র