প্রতীপ মুন্সী ছিলেন বিংশ শতাব্দীর একজন প্রতিষ্ঠিত মাদার অফ পার্ল শিল্পী। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে শেষ ভাগে তাঁর কাকা অনুকূল চরণ মুন্সী প্রবর্তিত অতি নতুন ভারতীয় মাদার অফ পার্ল শিল্প-এর ক্ষেত্রে যে দু'জন শিল্পী তৎকালীন শিল্পজগতে বিশেষ সারা ফেলেছিলেন, তাঁরা হলেন প্রতীপ মুন্সী ও তাঁর জ্ঞাতিভ্রাতা মনু মুন্সী। তিনি কলকাতার বিখ্যাত মুন্সী পরিবারের মুর্শিদাবাদ শাখার সদস্য ছিলেন। চিরকুমার এই শিল্পী আমৃত্যু ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলার জগতাই গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর জীবনের খণ্ডচিত্র অঙ্কন করেছেন প্রখ্যাত গবেষক ও লেখক শান্তনু ঘোষ, তাঁর 'মুন্সিয়ানায় চল্লিশ পুরুষ' বইতে।[১][২]
শিল্পশিক্ষা
বাংলা তথা ভারতীয় মাদার অফ পার্ল শিল্পের অগ্রদূত শিল্পী অনুকূল চরণ মুন্সী তাঁদের চৌগাছি'র জমিদার বাড়িতে 'মাদার অফ পার্ল ফ্যাক্টরি' নামে এক কারখানা প্রতিষ্ঠা করে সেখানে বেশ কিছু কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে মাদার অফ পার্ল শিল্পের চর্চা করতে শুরু করলে তিনি তাঁর দুই পুত্র অন্নদা মুন্সী ও মনু মুন্সী-কে মাদার অফ পার্ল শিল্পের পাঠ দিতে শুরু করেন। তখন তাঁর ভাইপো প্রতীপেরও ডাক আসে এই বিশেষ শিল্পচর্চায় সামিল হবার জন্যে। কাকা'র আদেশ মতো তিনিও তাঁর দুই জ্ঞাতিভাইয়ের সঙ্গে এই শিল্পের পাঠ নিতে শুরু করেন।[১]
পরবর্তীতে, অন্নদা ভারতীয় বিজ্ঞাপন শিল্পের কিংবদন্তী শিল্পী হয়ে ওঠেন। আর, অন্যদিকে মনু ও প্রতীপ তাঁদের গুরু অনুকূল চরণ মুন্সী'র দেখানো পথেই হাঁটতে শুরু করেন এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেন।
উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম
মুন্সী'র উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্মগুলির মধ্যে অন্যতম হলো 'সমাধিস্থ বুদ্ধ' যা বাংলার শিল্পের আকাশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এক শিল্পকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। কথিত আছে যে এই কাজটি করার সময়, তিনি বহু বিনিদ্র রজনী যাপন করেছেন শুধু এই চিন্তা করে যে বোধি লাভের পরে বুদ্ধর চোখ দুটি কেমন দেখতে হবে।
তাঁর আরও কয়েকটি কালজয়ী মাদার অফ পার্ল শিল্পগুলির মধ্যে অন্যতম হলো 'ভগবান শ্রীকৃষ্ণ' এবং 'সিদ্ধিদাতা গণেশ'।[১][২]
তথ্যসূত্র
- ↑ ক খ গ শান্তনু ঘোষ। "মুন্সিয়ানায় চল্লিশ পুরুষ" প্রকাশক: দে'স পাবলিশিং
- ↑ ক খ Arthive। "প্রতীপ মুন্সী (ইংরেজিতে)" প্রকাশক: Arthive[১]